ঈদে চাই পাঞ্জাবি

প্রকাশঃ জুন ২৩, ২০১৬ সময়ঃ ২:১২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:১২ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

Pangabi21436097824

ছেলেদের কাছে ঈদ মানেই যেন পাঞ্জাবি। পরিবারর ছোট্ট ছেলে শিশুটি থেকে শুরু করে বাড়ির সবচেয়ে বয়োজ্যাষ্ঠ দাদুও ঈদের দিন গায়ে চড়াতে চান পাঞ্জাবি। তরুণ, যুবকদের কথা তো বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশী পুরুষদের ঈদ ফ্যাশনে এমনই এক অপরিহার্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাঞ্জাবি।

এবারের ঈদেও ক্রেতাদের পছন্দের কথা বিবেচনা করে নানান রঙ, নানান কাটের পাঞ্জাবি নিয়ে এসেছে দোকানগুলো। শহরের নামীদামী ব্র্যান্ডের শোরুম তো আছেই, পাঞ্জাবির কালেকশনে পিছিয়ে নেই বিভিন্ন মার্কেটের ছোট ছোট দোকান, এমনকি ফুটপাথের বিক্রেতারাও।

ঈদে পাঞ্জাবির কাপড় নির্বাচনে এবার মাথায় রাখা হয়েছে গরম এবং বৃষ্টি দুটোর কথাই। এবার অ্যান্ডি কটন ও সুতির তৈরি পাঞ্জাবির প্রতিই ক্রেতাদের আগ্রহ বেশি। সেলফ উইভিং বা ভয়েল কাপড়ের পাঞ্জাবিও পরিবেশের সাথে বেশ মানানসই হবে। তবে শুধু সুতিজাতীয় কাপড়ই নয়, এবারে পাঞ্জাবির কাপড়ে জামেবার, তসর, সিল্ক, খাদি, তাঁতের কাপড়, মটকা, জয় সিল্ক, কাতান ইত্যাদিও ব্যবহার করে হয়েছে যা অনেক ক্রেতাই আগ্রহের সঙ্গে কিনছেন।

বেশ কয়েক বছর ধরেই ক্রেতাদের পছন্দের শীর্ষে রঙিন পাঞ্জাবি। এবারও চিরকালীন সাদা পাঞ্জাবির পাশাপাশি রঙিন পাঞ্জাবি দোকানগুলোতে সাদরে ঠাঁই পেয়েছে। দোকান ঘুরে দেখা যায় এবারের ঈদে উজ্জ্বল রঙের পাঞ্জাবির প্রাধাণ্যই বেশি। দোকানগুলোতে লাল, খয়েরি, কমলা, নীল, কালো, সাদা, ছাই, হালকা সবুজ, হলুদ, বেগুনি ইত্যাদি রঙের পাঞ্জাবি পাওয়া যাচ্ছে।

বাজারে ট্রেন্ডি পাঞ্জাবির কদরই বেশি। গত দু এক বছরের মতো পাঞ্জাবির এবারের ট্রেন্ডও হলো টিউনফিট, মাঝারি ঝুল এবং হালকা কাজ। তবে কয়েকজন ফ্যাশন ডিজাইনারের মতে, পাঞ্জাবির ক্ষেত্রে আসলে নির্দিষ্ট কোনো ধরাবাঁধা ট্রেন্ড নেই। যাকে যেমন মানায় বা যে যেমন স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন, তেমনটাই পরা উচিত। যাঁরা লম্বা ঝুলের পাঞ্জাবি পরে অভ্যস্ত তাঁরা তেমনটাই পরবেন এবারও।

SM4

এবার চলছে পাঠানি কাটের পাঞ্জাবি, নিচের দিকে গোল করে কাটা। জুড়ে দেওয়া আছে বাড়তি পকেট। এছাড়া কারচুপি বা জারদৌসি কাজের পাঞ্জাবির দেখা মিলছে বিভিন্ন দোকানে। কোন পাঞ্জাবির  বুকের কাছে থাকছে হালকা কাজ আর কোনোটার হাতায়। কোনো কোনোটির সঙ্গে মিল আছে শার্টেরও। এতে পাশ্চাত্যের ছোঁয়া লাগছে দেশী এই পোশাকে। আছে শেরওয়ানি ছাঁদের পাঞ্জাবি ও কটিসহ পাঞ্জাবি। শেরওয়ানি কলারের মধ্যে সুতোর কাজ ও বুকে সুতার কাজের ভিতরে কাঠের ও ষ্টোনের বোতাম চলছে বেশি। এপ্লিক, বাটিক, ব্লক, পেইন্ট, এমব্রয়ডারি, সুতার কাজসহ সবধরনের কাজ করা পাঞ্জাবিই চলছে। ছেলেদের সব পোশাকের ডিজাইনেই প্রাধান্য পেয়েছে প্রকৃতি ঘনিষ্ঠ মোটিফ। কিছু পাঞ্জাবিতে রয়েছে মেয়েদের পোশাকের মতো চুমকি, পুতি ও জরির সুতোর কাজ। এছাড়া স্ট্রাইপ ও চেক তাঁতের কাপড়ের প্লেইন ও প্রিন্টের পাঞ্জাবিও রয়েছে। কোনো পাঞ্জাবিতে আবার ব্যবহার করা হয়েছে ফুল হাতার পরিবর্তে থ্রি-কোয়ার্টার হাতা।

ঢাকার অন্যতম বড় পাঞ্জাবির বাজার পীর ইয়ামেনি মার্কেট। এছাড়াও নিউ মার্কেট, এলিফ্যান্ট রোড মার্কেট, মালিবাগ, মৌচাক, সদরঘাট, গুলিস্তানে বিভিন্ন দোকান ঘুরে পছন্দসই পাঞ্জাবি কিনছেন মধ্যবিত্তরা। এছাড়াও নানা ব্র্যান্ডের ফ্যাশন হাউসগুলোর শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে নানা ধরণের পাঞ্জাবি। ব্রান্ডধারী পোশাকের শোরুমগুলোর মধ্যে রয়েছে কে-ক্র্যাফট, সাদাকালো, অঞ্জন’স, বাংলার মেলা, রং, স্বদেশি, দেশি দশ, ওটু, লুবনান, আর্টিস্টি, লা রিভ, ফ্রিল্যান্ড, ইয়েলো, মনসুন রেইন, ক্যাটস আই, স্মার্টেক্স, প্লাস পয়েন্ট, আজিজ সুপার মার্কেটের ফেরিওয়ালা, নিত্য উপহার, তারা মার্কা, আব্রু, স্বপ্নবাজ, মেঠোপথ, লাল-সাদা-নীল, দেশালসহ আরো অনেক সব দেশি হাউস।

পাঞ্জাবির দাম নির্ভর করবে এর কাপড়, কারুকাজ ও ব্র্যান্ডের ওপর। ফুটপাথের ২০০ টাকা দামের পাঞ্জাবি থেকে শুরু করে ব্র্যান্ড শপের ১০ হাজার টাকা দামের পাঞ্জাবিও রয়েছে বাজারে। এছাড়া ভারী কারুকাজের পাঞ্জাবির মধ্যে লম্বা কাটের পাঞ্জাবির দাম পড়বে ১০০০-৮০০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া টিউনফিট পাঞ্জাবির দাম পড়বে ১ হাজার ৬০০ থেকে ছয় হাজার টাকা। শর্ট বা থ্রি-কোয়ার্টার হাতাযুক্ত পাঞ্জাবি কিনতে চাইলে দাম পড়বে পাঁচ হাজার টাকার মতো।

তাই বাজার ঘুরে, বাজেট বুঝে কিনে ফেলুন আপনার পছন্দের পাঞ্জাবিটি। ঈদ কিন্তু আর বেশি দূরে নেই।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G