উখিয়ায় টানা বর্ষণে যোগাযোগ ব্যবস্থার অবনতি

প্রকাশঃ জুলাই ২৮, ২০১৭ সময়ঃ ১২:১৩ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১২:১৭ পূর্বাহ্ণ

কায়সার হামিদ মানিক, উখিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি:

সাম্প্রতিক সময়ের টানা বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলের তীব্র প্রভাবে উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক উপ-সড়ক সহ গ্রামীণ জনপদের অধিকাংশ ব্রীজ কালভার্ট ভেঙে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতির কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে উঠেছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধির তাগিদের ভিত্তিতে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর জনগুরুত্বপূর্ণ ২টি ব্রীজ ও সড়ক সংস্কারের বরাদ্দ চেয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র মতে, খাল-ছড়া, পাহাড় বেষ্টিত জনপদ উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও গ্রামের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দৃশ্যমান খালগুলো দীর্ঘদিন ধরে পুনঃখননের আওতায় না আনার কারণে খালের গভীরতা হ্রাস পেয়ে পানি নিষ্কাশনে বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে। ফলে প্রতি বর্ষা মৌসুমে এ উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক মানুষ বন্যা ও জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে বলে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারদের অভিযোগ।

সাম্প্রতিক সময়ে ঘূর্ণিঝড় মোরা’র দু দফা আঘাতের কারণে বন্যায় উখিয়ার ফলিয়াপাড়া ও ইনানীতে দুটি ব্রীজ ধ্বসে পড়েছে। থাইংখালী ও গয়ালমারা খালের ২টি ব্রীজের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এ ব্রীজগুলো যেকোনো সময় ধ্বসে পড়তে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর সাহেদুল ইসলাম রোমান অভিযোগ করে জানান, উখিয়া সদর ডাকবাংলো সড়কের গয়ালমারা খালের উপর ৬০ মিটার দৈর্ঘ্য ব্রীজটি ধ্বসে পড়লে পূর্বাঞ্চলীয় জনপদে বসবাসকারী প্রায় ৫০ হাজার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম অবনতি হবে। তিনি জানান, ব্রীজের উভয়পার্শ্বে গাইডওয়াল না থাকার কারণে বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ী ঢলের পানির প্রভাবে উক্ত ব্রীজের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

একইভাবে মরহুম নুরুল ইসলাম চৌধুরী সড়কের ফলিয়াপাড়াস্থ ২০ মিটার দীর্ঘ ব্রীজটি ধ্বসে পড়ার ফলে মাছকারিয়া, মধুরছড়া, ফলিয়াপাড়া, মোহাম্মদ আলীর ভিটাসহ ৭ গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষকে পোহাতে হচ্ছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ।

এ দুর্ভোগের শিকার রাজাপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী জানান, ফলিয়াপাড়া এলাকায় ধ্বসে পড়া ব্রীজ পুন:নির্মাণ ও একই এলাকায় ক্ষতবিক্ষত কার্পেটিং সড়ক মেরামতের জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে অবহিত করা হয়েছে।

একইভাবে বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের থাইংখালী ব্রীজটি প্রতি বর্ষা মৌসূমে পাহাড়ী ঢলের তীব্র ধাক্কায় টাল সামলাতে না পেরে ব্রীজের গোড়ালি অংশের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।

এ বিষয়ে এলাকার চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী জানান, ব্রীজটি সংস্কারের জন্য সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বেশ কয়েকবার অবহিত করা হয়েছে। তারা সংস্কারের নামে জোড়া তালি দিয়ে দায়িত্ব শেষ করলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিমত। ভারী যানবাহনের ভারে যেকোনো সময় এ ব্রীজটি ধ্বসে পড়লে কক্সবাজার টেকনাফ সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে বলে যানবাহন শ্রমিকরা আশংকা প্রকাশ করছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রানা প্রিয় বড়ুয়া সাংবাদিকদের জানান, ব্রীজ ও সংযোগ সড়ক রক্ষায় প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে।

বন্যায় গ্রামীণ জনপদের ব্রীজ কালভার্ট ও উপসড়ক সংস্কারের ব্যাপারে উপসহকারি প্রকৌশলী সোহরাব হোসেন জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্রীজ কালভার্ট ও উপসড়ক সংস্কারের জন্য প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G