প্রথম প্রকাশঃ জুলাই ৭, ২০২১ সময়ঃ ৫:৫১ অপরাহ্ণ..
সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৫:৫১ অপরাহ্ণ
ফাতেমা খান:
পৃথিবীতে এ যাবত পর্যন্ত প্রেম ভালোবাসা নিয়ে যত আখ্যান উপখ্যান রচিত হয়েছে ততটা আর কোনো বিষয় নিয়ে সম্ভবত রচিত হয়নি। এই আখ্যান উপখ্যান কখনো সত্য, কখনো কাল্পনিক। কখনো বা সত্যের কাছাকাছি। প্রেমের রহস্য উদঘাটন হয়েছে বহু বছর আগেই তবুও মানুষ লিখেছে নতুন কবিতা, নতুন গান, নতুন উপাখ্যান। কেননা, প্রেমের নিত্য নতুন বর্ণিল অনুভূতি সতত প্রকাশিত হয়। তবে প্রেম শুধু সুখের অনুভূতি নয়। প্রেম মানে কখনো বেদনা, কখনো হতাশা। প্রেম কখনো নির্ভরতা, কখনো শুধু ছলনা। মানুষ ভেদে প্রেমের অনুভূতি এবং প্রকাশও ভিন্ন। তবে আখ্যান রচনার ক্ষেত্রে প্রেম এক রোমাঞ্চকর মিলন ও বিচ্ছেদের অনুভূতি। আধুনিক গল্পগুলোতে প্রেম এসেছে ভিন্নভাবে। অনেকটা বাস্তবের রূপ ধারণ করে শহর ও গ্রামের প্রেমের মানুষের সম্পর্কের খুঁটিনাটি ধরা পড়েছে প্রেম গল্প ও কবিতায়। এ সকল গল্প-উপন্যাস, আখ্যান এবং কবিতা থেকে প্রেমের সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গিয়ে মানুষ হিমশিম খেয়েছে। প্রেমের সংজ্ঞা নিয়ত বদলে যাচ্ছে পৃথিবীর হাওয়া বদলের সাথে সাথে।
আজকাল প্রেম শুধু দেওয়া আর নেয়ার বিষয়ে না বরং প্রেমের পরিণতিতে কে কাকে কতটুকু ভালবাসতে পারে সেটা নির্ধারিত হয় কে কাকে কতটুকু ভালো রাখতে পারে তার পূর্ব নির্ধারণের উপর। আর এই ভালো রাখার জগতের সাথে প্রচ্ছন্নভাবে অর্থ জড়িত থাকে। অর্থের সাথে জড়িত প্রেম অথবা বিত্ত-বৈভবের সাথে জড়িত প্রেমের ধারণা খুব নতুন নয় তবে আজকাল অনেকেই একটু বেশি হিসেবি এক্ষেত্রে।
বিশেষত পরিণত প্রেমের ক্ষেত্রে প্রেমোত্তর পর্যায় অর্থাৎ প্রেমের পরিণতি যদি মিলনে দাঁড়ায় সে ক্ষেত্রে প্রেম সেই শুরুর অর্থবিত্ত বৈভব থেকে স্বার্থতে উপনীত হয়। তখন একপক্ষ অন্য পক্ষের কাছে সরবে অথবা নীরবে সেই স্বার্থলাভকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়। এই পর্যায়ে এসে কখনো কখনো এক পক্ষের কাছে প্রেমর বাটখারা হল অন্যপক্ষ কতটা উজাড় করে তাকে দিল অথবা সে কতটুকু পেল অন্য পক্ষের কাছ থেকে।
আর অন্যপক্ষের হয়ত শুধুই দিয়ে যাওয়া। তবে এ দেয়া-নেয়ার মাঝে কোনো একটা স্থানে সামঞ্জস্যের প্রয়োজন হয়। তা না হলে বাটখারা ব্যালেন্সহীন হয়ে পড়ে। প্রেম তখন এক বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। প্রেমের বর্ণগুলি ক্রমশ ফিকে হয়ে আসে; যে শুধু দেয় তার কাছে। আর যে পক্ষ শুধু নিয়ে খুশি থাকে সে পক্ষের কাছে প্রেমের মানে হচ্ছে নিজেকে খুশি করা। নিজের স্বার্থটুকু দেখা। নিজেকে ভালোবাসা। এ প্রেমে চিরাচরিত আখ্যান উপাখ্যানের রোমাঞ্চকর প্রেমের অনুভূতির দেখা মেলে না। সেখানে শুধু একজনের আমি, আমি আর আমি আর অন্যজনের হল আজ্ঞাবহন।
আরো সংবাদঃ
মন্তব্য করুনঃ
পাঠকের মন্তব্য