এক পায়ে রিকশা চালাবো, তবু ভিক্ষা নয়
প্রতিক্ষণ ডটকম:
বয়স তার ৩০ এর কোঠায়। এক সময় করতেন গাড়ি পরিষ্কারের কাজ। বছর সাতেক আগের কথা কক্সবাজার শহরের ঝাউতলা দিয়ে হেঁটে আসছিলেন। গাড়ির মাঠ এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের সাথে হটাৎ একটি ধাক্কা।
সেই থেকে নিজের দু পায়ে ভর করে আর চলা হয়নি তার। চিরতরে পঙ্গু হয়ে যায় তার বাম পা। বলছিলাম জীবন সংগ্রামী মানুষ দুলাল চন্দ্র দে’র কথা ।
পঙ্গুত্বের পর গরীব অসহায় মানুষের অনেকেই পেশা হিসাবে ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নিলেও ঠিক এর উল্টোটা ঘটেছে রামুর চা বাগান এলাকার শ্রীমন্ত দে’র পুত্র দুলালের জীবনে। মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষা করে ছোট হওয়ার চেয়ে এক পা নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েছেন জীবিকার তাগিদে, অর্থের খোঁজে।
এক পা দিয়েই রিকশার প্যাডেল চালিয়ে বিগত ৬ বছর ধরে স্ত্রী, দুই মেয়ে সহ এক পুত্র সন্তানের ভরণ পোষণের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জীবন সংগ্রামে জয়ী হওয়ার পথে এগিয়ে যাওয়া দুলাল চন্দ্র দে।
এক পায়ে রিকশা চালাতে কষ্ট হয় তবুও জীবিকা তাগিদে দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেও তা করে যাচ্ছে জানাতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন দুলাল। অনেক মানুষ দু’পা নিয়ে ভিক্ষা করে কিন্তু আমি (দুলাল) ভিক্ষা পছন্দ করিনা। কষ্ট করে শ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জন করি আমি।
দুলাল আরও জানান, এক পা দেখে যাত্রীরা উঠতে চাননা। তবে যারা উঠেন তারা কিছু টাকা বাড়িয়ে দেন। দুলালের যদি নিজের একটি রিকশা থাকতো থাকলে যা আয় করা যেত তা দিয়ে স্ত্রী, ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে সুখে-শান্তিতে সুন্দর জীবন চলতো দুলালের।
দুলালের আশা সমাজের কোন বিত্তবান ব্যক্তি কিংবা কোনো সংস্থা তার জীবন যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পথে আলোর দিশারী হয়ে দাঁড়াবে এবং একটি রিকশা কিনে দিয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/মাসুদ