এ যুগে কাঙাল আছে, তবে কাঙাল হরিনাথ নেই !!
গ্রামীন সাংবাদিকতার পথিকৃত কাঙাল হরিনাথ এর কথা আজ খুব মনে পড়ছে । ১১৫ বছর আগে গ্রামবাংলার নির্যাতিত-নিপীড়িত কৃষকদের, অত্যাচারী নীলকর ও জমিদারদের হাত থেকে রক্ষা করতে তিনি প্রকাশকরেন ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’ নামের একটি যুগান্তকারী প্রত্রিকা।
তার লেখনীতে ভারতবর্ষে ইংরেজ বেনিয়াদের ভীত কেঁপে ওঠে। তাই ইংরেজদের গোলাম দেশীয় জমিদারদের লেলিয়ে দেয়া হয় সাংবাদিকতার উজ্ঝ¦ল এ নক্ষত্রের আলো নিভিয়ে দিতে। অকুতোভয় এবং প্রতিবাদমুখর হরিণাথ তার স্বমহিমায় ধুমকেতুর মত আরো দ্বিগুন বেগে জ্বলে ওঠেন।
হুমকি-ধমকিতে ব্যর্থ হয়ে ছাপাখানা বন্ধ করে দিয়ে গ্রামবার্তা প্রকাশিকার কন্ঠরোধ করার গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়। একপর্যায়ে জমিদারের লাঠিয়াল বাহিনী হরিণাথকে ধরে নিতে আসে। তবে লালন ফকিরের ভক্তরা লাঠিয়াল বাহিনীকে প্রতিহত করতে এগিয়ে এলে সে যাত্রা রক্ষা পান কাঙাল হরিনাথ।
১১৫ বছর পরও হরিনাথের উত্তরসূরীরা এখনও শাসকগোষ্ঠীর রোষানলে পড়ে, চোর ডাকাতের মতো তাদেরও টেনেহিঁচড়ে ধরে নিয়ে যায় এ যুগের লাঠিয়ালরা। টুঁটি চেপে ধরা হয় তাদের প্রকাশনার। ষড়যন্ত্রের হাতিয়ার হিসেবে আবারো শাণিত হয় কালাকানুন।
ওহে হরিনাথ -তুমি দেখে যাও তোমাকে রক্ষার জন্য সাধক লালন ফকিরের বাহিনীরা এগিয়ে এলেও এ যুগের হরিনাথরা তার সতীর্থদের রক্ষায় সেভাবে এগিয়ে আসেনি। ওরা কেউ তোমার মত কাঙাল হরিনাথ হতে পারেনি, তবে তারা কাঙাল হয়েছে ! শোষিত হবার আতœঘাতী অভিপ্রায় তাদের কি শুধু কাঙালই বানিয়ে রেখেছে, নাকি ওপনিবেশিক গোলামির রক্ত ফেলে তারা এখনও শুদ্ধ হতে পারেনি ???