বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী ডুলি

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ৫, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৫৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৪ অপরাহ্ণ

picগ্রামবাংলায় ধান, চাল, গম সংরক্ষণের জন্য ডুলি ব্যবহার করা হয়। এটি বিভিন্ন জেলায় ডুলি বা ডোল নামে পরিচিত। বাঁশ দিয়ে তৈরি করা এই ডুলিতে সারা বছর ধান সংরক্ষণ করে থাকেন কৃষকেরা।

মৌসুমি ফসল সংরক্ষেণে ডুলি খুবই উপযোগী।  প্রয়োজনের সময় ডুলি থেকে ধান বের করে পুনরায় রোদে শুকিয়ে ধান ভাঙ্গানো হয়। গ্রামেগঞ্জে এখন আর আগের মতো  চোখে পড়েনা ‘ডোল’ বা ‘ডুলি’।

অথচ একসময় ডুলি ভর্তি ধান না থাকলে গ্রামের গৃহস্থ পরিবার সেই বাড়িতে ছেলেমেয়েদের বিয়ে পর্যন্ত দিতে আগ্রহী হতেন না। এই কথা এখনো গ্রামাঞ্চলের মানুষের মুখে মুখে। সেই সময় ধান যাতে নষ্ট না হয় সে কারণে ডুলিতে ধান রেখে সেই ডুলির মুখ মাটি দিয়ে লেপে দিয়ে বন্ধ করে রাখা হতো। তখন তো চোর-ডাকাতের ভয়ে  স্বর্ণ ও টাকা-পয়সাও লুকিয়ে রাখা হতো ডুলির ধানের ভেতর।

ডুলি অপেক্ষাকৃত মজবুত। দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। বিভিন্ন সাইজের হয়ে থাকে। একটি বড় ডুলিতে ৪০ থেকে ৫০ একটি ছোট গোলায় ২০ থেকে ৩০ মণ ধান সংরক্ষণ করা যায়।

আজকাল যুগের হাওয়া পরিবর্তনের কারণে পরিবর্তিত হয়েছে সারা বছরের জন্য ধান রাখার ধরনও। দু’চারজন বড় গৃহস্থ ছাড়া ছোট-খাটো কৃষকরা এখন আর সেভাবে ধান মজুদ রাখতে পারেন না। খাওয়া-সাংসারিক খরচ মিটিয়ে যে সামান্য ধান থাকে তা কেউ বস্তায় কেউবা অন্য বাসন-কোসনেই রেখে দেন তা। ফলে এক সময়কার কৃষকদের অতি প্রয়োজনীয় ধানের গোলা বা ডুলি এখন সচরাচর চোখেই পড়ে না।

এখন ডুলি বা গোলার স্থান দখল করে নিয়েছে স্থায়ী পাকা অথবা টিনের গোলা। এই গোলা বাইরে রাখা যায় বলে ঘরের জায়গা খোলামেলা থাকে। কৃষকরা হাটবাজার থেকে একটি বড় গোলা ৫শ’ থেকে ৬শ’ ও একটি ছোট গোলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় কিনে বাড়িতেই ধান সংরক্ষণ করছেন।

প্রতিক্ষণ/এডি/জেবিএম

 

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G