কচুরিপানার জৈব সারে বিষমুক্ত আবাদ

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৫ সময়ঃ ১:০৩ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:০৩ অপরাহ্ণ

কৃষি প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পানিতে কচুরিপানা পঁচিয়ে জৈব সার (কম্পোস্ট) তৈরি করে সফলতা পাচ্ছেন কৃষক। ফলে এ ধরনের সার তৈরিতে কৃষকরা মনোযোগী হচ্ছেন। এতে একদিকে তাদের সাশ্রয় হচ্ছে অর্থ। অন্যদিকে জমিতে বিষমুক্ত সবজিcompostferti-1422265079ও আবাদ করতে পারছেন।

শীতকালে এ ধরনের সার তৈরিতে কৃষকরা খুবই ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তারা কাদা মাটি ও কচুরিপানা মিশ্রিত করে একত্রে রাখেন। ৪৫ দিন অতিবাহিত হলে এসব পঁচে যায়। এতে তৈরি হয় সার। আর এ সার-ই তারা জমিতে প্রয়োগ করেন। তাতে করে চাষাবাদেও পাচ্ছেন সফলতা। এমনিভাবে চাষাবাদ করে দরিদ্র কৃষকরা নিজেদের ভাগ্য বদলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

হবিগঞ্জ জেলার ৮টি উপজেলায় রয়েছে ৭৭টি ইউনিয়ন ও ৬টি পৌরসভা। কমবেশি এসবস্থানে নানা ধরণের ফসলের আবাদ হচ্ছে। জেলায় মোট ফসলী জমির পরিমাণ ২৯৫৩০০ হেক্টর। আর এরমধ্যে খাদ্য উৎপাদন হচ্ছে ৫৪৪২০৮ মেট্রিক টন (বাৎসরিক)। খাদ্য উদ্বৃত্ত থাকছে ১৯৮৪৫ মেট্রিক টন (বাৎসরিক)।

এসব খাদ্য উৎপাদনে প্রচুর পরিমাণে সারের প্রয়োজন হয়। অনেক সময় কৃষকরা টাকার অভাবে সার ক্রয় করতে সমস্যায় পড়তে হয়। সমস্যাগ্রস্ত কৃষকরা প্রাকৃতিকভাবে কাদা মাটি ও কচুরিপানা পঁচিয়ে সার তৈরি করে তাদের চাহিদা মেটাচ্ছেন। তাদের এ ব্যাপারে সহায়তা করছে হবিগঞ্জ কৃষি বিভাগ। ফলে কৃষকরা জৈব সার তৈরিতে উৎসাহিত হচ্ছে। এ ব্যাপারে আলাপকালে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার কৃষক বাবুল পাঠান বলেন, ‘সার নিয়ে আর ভাবতে হবে না। এখন সার তৈরি পদ্ধতি জানি। এ সার তৈরি করতে কোনো টাকা খরচ হচ্ছে না। নিজেদের তৈরি সার জমিতে প্রয়োগ করেই ভালো ফলন ঘরে তুলবো।

তবে এ সার তৈরি সহজ হচ্ছে জেলার হাওর এলাকায়। এখানে প্রচুর পরিমাণে কচুরিপানা ও পঁচা মাটি পাওয়া যায়। এসব মিশ্রিত করে রাখার জন্য অধিক পরিমাণে জলাশয়ও রয়েছে এখানে। বানিয়ারচংয়ের কৃষক রমজান আলী জানান, জমি চাষাবাদে প্রচুর সারের প্রয়োজন হয়। এজন্য জলাশয়ে কচুরিপানা ও কাদা মাটি দিয়ে প্রাকৃতিক সার তৈরি করছি। এ সার প্রয়োগ করে কেমিক্যালমুক্ত ফসল চাষ করব।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহ আলম বলেন, ‘চাষাবাদে হবিগঞ্জের কৃষকরা পূর্বের চেয়ে অনেক অগ্রসর। আর তাদের নানাভাবে সহায়তা করছে হবিগঞ্জ কৃষি বিভাগ। কৃষকরা আর বসে থাকছে না। তারা তৈরি করছে প্রাকৃতিক সার। এ সারে তারা চাষাবাদে নিয়ে আসছে সফলতা। তাদের এ সফলতাকে আরো এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি।’ উপ-সহকারী কৃষি অফিসার তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘জৈব সার (কম্পোস্ট) তৈরিতে কোনো টাকা পয়সা খরচ করতে হয় না, তবে নিজের শ্রম দিতে হবে। এ সার জমিতে প্রয়োগে যেমনটা ভাল ফসল হয়। তেমনি জমির মাটির কোনো সমস্যা হয় না। বরং মাটির উর্বরতা বাড়ে। আর এ সার তৈরি সময় লাগে ৪৫ দিন।’

প্রতিক্ষণ/এডি/স্বপন

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G