কম দামে তরঙ্গ বিক্রির উদ্যোগ বিটিআরসির

প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫ সময়ঃ ৪:১০ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:১২ পূর্বাহ্ণ

আইটি প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:

btrc-logoমূল্য কম ধরে ও ‘প্রতিযোগিতাহীন’ নিলামের মাধ্যমে অ্যববহৃত থ্রি-জি ও টু-জি তরঙ্গ নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। খাত সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ধারণা এতে কয়েক হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হবে সরকার।

টেলিযোগাযোগ সেবা আরো সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে হাতে থাকা ১৮০০ ও ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের সাড়ে ২৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ নিলামে তুলবে বিটিআরসি। চলতি বছরের ৩০ এপ্রিল এ নিলাম অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। এ উপলক্ষে দু’টি পৃথক গাইড লাইন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।

গাইড লাইনে এ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য অনেক কম ধরা হয়েছে। ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডের প্রতি মেগাহার্জ তরঙ্গে ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে প্রায় ২৩০ কোটি (৩ কোটি ইউএস ডলার), যেখানে গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত টু-জি নিলামে এই ক্যাটাগরির তরঙ্গের প্রতি মেগাহার্জের মূল্য ছিল প্রায় তিন হাজার কোটি টাকার মতো। অন্যদিকে ২১০০ মেগাহার্জ ব্যান্ডের তরঙ্গের ভিত্তিমূল্যও কম হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। এই ক্যাটাগরির প্রতি মেগাহার্জ তরঙ্গে ভিত্তিমূল্য ধরা হয়েছে ১৬৫ কোটি টাকা (২.২০ কোটি ইউএস ডলার)।

বিশেষজ্ঞরা আরো জানান, বর্তমান বিশ্বে ১৮০০ মেগাহার্জ ব্যান্ড খুব মূল্যবান তরঙ্গ বলে বিবেচিত। টেলিযোগাযোগ কোম্পানিগুলোর জন্য এটি একটি আদর্শ তরঙ্গ ব্যান্ড। এর মূল্য থ্রি-জি ব্যান্ডের চেয়ে অনেক বেশি হওয়া উচিৎ। কারণ বিশ্বে খুব বেশি দেশের হাতে আর এ তরঙ্গ নেই। তাই এর মূল্য বিটিআরসির নির্ধারিত ভিত্তিমূল্যের চেয়ে বেশি হওয়া উচিৎ।

উল্লেখ্য, এর আগে থ্রি-জির তরঙ্গ নিলামের সময় ভিত্তিমূল্য কম ধরায় সরকার প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব হারায়। ভারতের চেয়ে এক তৃতীয়াংশ কম মূল্যে ২১০০ মেগাহার্জের তরঙ্গ নিলামে তোলা হয়। সে সময় প্রতি মেগাহার্জ তরঙ্গের ভিত্তিমূল্য ধরা হয় ১৫০ কোটি টাকা (২.১ কোটি ইউএস ডলার)। আর মোবাইল কোম্পানিগুলোর জোটবদ্ধ হওয়ার কারণে সরকার পায় মাত্র চার হাজার কোটি টাকা। যেখানে বিটিআরসি আশা করেছিল তারা ৭ হাজার কোটি টাকা আয় করবে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক প্রক্রিয়ায় নিলাম অনুষ্ঠিত হলে ১৪ হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হতো।

এছাড়াও মোবাইলফোন অপারেটরদের আন্তর্জাতিক সংগঠন জিএসএমএ এই শর্তের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে। জিএসএমএর হেড অব পলিসি জন জিউস্টি স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে বলা হয়, নিলামের আগে সবপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন নতুন গাইড লাইন তৈরি করতে হবে।

গাইড লাইনে ১৮০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ৫ দশমিক ৬ ও ৫ মেগাহার্টজের দুটি এবং ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ৫ মেগাহার্টজ করে তিনটি ব্লক নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রকাশিত গাইড লাইনে নিলামে অংশ নিতে আবেদনের জন্য ফি ধরা হয়েছে ৫ লাখ টাকা। ২৯ মার্চের মধ্যে আবেদন জমা দিতে হবে। ৬ এপ্রিল নিলামে অংশগ্রহণের জন্য নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করবে বিটিআরসি।

নিলামে অংশগ্রহণে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে জামানতের অর্থ দিতে হবে। ৩০ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে নিলাম। আর তা হবে উন্মুক্ত ব্রিটিশ পদ্ধতিতে। কোনো প্রতিষ্ঠানের পূর্ববর্তী লাইসেন্স ফি বকেয়া থাকলে তারা নিলামে অংশ নিতে পারবে না। বর্তমানে যাদের থ্রি-জি তরঙ্গ রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠান নিলামে অংশ নিতে পারবে।

প্রতিক্ষণ/এডি/জয়

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G