কম্বোডিয়ায় বাঁশের ট্রেন,স্টেশন !
ঘণ্টায় ৩০০, ৩৫০, ৪০০ কিলোমিটার। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রেলের গতি বাড়িয়েই চলেছে বিভিন্ন দেশ। গতির যুদ্ধে এ বলে আমায় দেখ, তো ও বলে আমায়। আজ জাপান তো কাল চিন। বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল ট্রেনের শিরোপা পেতে ‘ট্রেন দৌড়ে’ মেতে আছে তারা।
কিন্তু জানেন কি এমন অনেক জায়গা রয়েছে, সেখানে রেল ব্যবস্থা ‘প্রাগৈতিহাসিক যুগে’ পড়ে রয়েছে। কম্বোডিয়ার ব্যাটমব্যাং ও পইপেট ঘিরে বিস্তৃত রেল লাইন তার অন্যতম উদাহরণ। এই লাইনে চলে বাঁশের রেল। এমন কী স্টেশনও পুরোটাই বাঁশের। তবে বুলেট ট্রেনের মতো এই রেল চড়ার কৌতূহল কম নয় পর্যটকদের। এক নজরে জেনে নেওয়া যাক বাঁশের রেল নিয়ে অবাক করা কিছু তথ্য।
কম্বোডিয়ার বাঁশের তৈরি এই রেলকে বলা হয় ‘নরি’। তবে এটা বাঁশের ট্রেন নামেই পরিচিত বিশ্বের কাছে। মিটার গেজ ট্র্যাকে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৫০ কিলোমিটার বেগে চলে এই ট্রেন।
২০০৬ সালে বিবিসির একটি রিপোর্টে বলা হয়, সপ্তাহে একদিন চলে এই ট্রেন। তবে চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে প্রতিদিনই এই পরিষেবা দেওয়া শুরু হয়েছে।
পরিকাঠামোর অভাব সত্ত্বেও এর জনপ্রিয়তা চোখে পড়ার মতো। সিঙ্গল লাইনে যখন মুখোমুখি হয়ে পড়ে দুই ট্রেন, সে সময় একটি ট্রেনকে লাইন থেকে সরানো হয়। ট্রেনগুলি সম্পূর্ণ বাঁশের তৈরি। চেষ্টা করা হয় ট্রেনটির ওজন হাল্কা রাখার, যাতে সুবিধা মতো ট্রেনকে লাইন থেকে সরানো যায়।
২০১৬ সালের অগস্টে চালু হয় ট্রেনের ব্রেক সিস্টেম। মাথা পিছু ভাড়া ৫ ডলার করে নেওয়া হয় যাত্রীদের কাছ থেকে। ৩ মিটার লম্বা কাঠের ফ্রেমে তৈরি করা হয় বাঁশের পাটাতন।
শক্তি উত্পাদনের জন্য ব্যবহার করা হয় ওয়াটার পাম্প বা গ্যাসোলিন ইঞ্জিন।
তাঁদের রেল সম্বন্ধে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, “আমি প্রতিদিন বাঁশের ট্রেন ব্যবহার করি, কারণ এর থেকে নিরাপদ যাতায়াত আর নেই।”
রসিকতা করে তিনি বলেন, “মোটরবাইকে চড়লে ঘুমানো যায় না, দূরে কোথাও গেলে ট্রেনে এক ঘুম অনায়াসে দেওয়া যায়।”
এই ট্রেন চলাচলে সরকারের তেমন নিয়ন্ত্রণ না থাকায় স্থানীয় বাসিন্দারাই এই লাইনে বাঁশের ট্রেন চালিয়ে থাকে।
তবে পরিত্যক্ত রেল নেটওয়ার্কেই চলাচল করে বাঁশের রেল। গোটা কম্বোডিয়ায় ৬১২ কিলোমিটার জুড়ে এই রেলপথ বিস্তৃত।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন