কালের স্বাক্ষী হাটিকুমরুল নবরত্ন মন্দির
নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যে কয়টি প্রাচীন মন্দিরের সন্ধান পাওয়া যায় তার মধ্যে অন্যতম নবরত্ন মন্দির। সিরাজগঞ্জ জেলার হাটিকুমরুল ইউনিয়নে প্রায় ১৫.৪ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে অবস্থিত এই মন্দিরটি, আনুমানিক ১৭০৪ থেকে ১৭২৮ খ্রিস্টাব্দে মুর্মিদাবাদের নবাব মুর্শিদকুলির শাসনামলে তার নায়েব জনৈক রামনাথ ভাদুরী স্থাপন করেন।
মন্দিরটির কোন শিলালিপি বা নির্ধারিত পরিচয় পাওয়া না গেলেও এই নিয়ে ঐতিহাসিকদের রয়েছে বিভিন্ন মতভেদ। তাদের অনেকেই মনে করেন, রাখাল জমিদার নামে পরিচিত রামনাথ ভাদুরী তার জমিদারি আয়ের সঞ্চিত কোষাগারের অর্থ দিয়েই এ মন্দিরটি নির্মাণ করেছিলেন।
কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা নবরত্ন মন্দিরটি ক্রমসরমান তিনতলা বিশিষ্ট। পোড়ামাটির ফলকে লতা-পাতা ও দেব-দেবীর মূর্তি সদৃশ কারুকার্য খচিত এই মন্দিরটির মোট চূড়ার সংখ্যা ছিলো নয়। মূলত, এই কারণেই এই মন্দিরটি পরিচিতি পায় নবরত্ন মন্দির হিসেবে।
অনেকে এটিকে দোল মন্দির হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকে। মন্দিরের বিশাল চত্বরে বিক্ষিপ্তভাবে আরোও তিনটি মন্দির রয়েছে । বহুকাল ধরে এ চারটি মন্দিরেই পূজা অর্চনা হতো। তবে কালের বিবর্তনে ভারত উপমহাদেশের জমিদারি প্রথার বিলুপ্তি, দেশ বিভাগ ও নানা রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ক্রমেই অরক্ষিত হয়ে পড়ায় এই মন্দিরটি থেকে খোয়া যায় সেই সময়ের মূল্যবান বিভিন্ন সামগ্রী। স্বাধীনতার পর থেকে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ মন্দিরটি পর্যায়ক্রমে সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে আসছে।
প্রাচীন স্থাপত্যের অনন্য নিদর্শন এই নবরতœ মন্দির। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের স্মৃতিচিহ্ন এই স্থাপত্যটিকে দেখতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে সমবেত দর্শনার্থীরা।