কাল আদালতে যাচ্ছেন না খালেদা
নিজস্ব প্রতিবেদক
দুর্নীতির দুই মামলায় হাজিরা দিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আদালতে যাচ্ছেন না বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
পুরান ঢাকার বকশীবাজারের প্যারেড মাঠে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের অস্থায়ী আদালতে দুর্নীতির দুই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
গত ১৯ নভেম্বর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় অভিযোগপত্রের ২৩তম সাক্ষী (জব্দ তালিকার সাক্ষী) ডাচ-বাংলা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার কামারুজ্জামান সাক্ষ্য দেন। এরপর পর্যায়ক্রমে সাক্ষ্য দেন ২৪ ও ২৫তম সাক্ষী দুদকের দুই কনস্টেবল মঞ্জুরুল হক ও সিরাজুল হক।
আদালতে না আসায় ২০, ২১ ও ২২তম সাক্ষী মেট্রো মেকার্স অ্যান্ড ডেভেলপার্স লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) মাইনুল ইমরান চৌধুরী, সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম-ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) জাকারিয়া খান এবং সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের এসইভিপি জিয়াউদ্দিন এম ঘূর্ণিকে আসামিপক্ষ জেরা করেনি। আগামীকাল তাঁদের জেরা করা হবে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়। এর কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি। জমির মালিককে দেওয়া ওই অর্থ ছাড়াও ট্রাস্টের নামে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধ লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলা করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশীদ।
ওই মামলার অপর আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তৎকালীন সহকারী একান্ত সচিব ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অন্যদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরো একটি মামলা করে দুদক।
মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এর আগে ওই দুই মামলায় খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় চলতি বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি তাঁর জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। পরে ৫ এপ্রিল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নেন তিনি।
গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ নয়জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির দুই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
প্রতিক্ষণ/এডি/এনজে