খালেদার পরোয়ানা বাতিল আবেদনের শুনানি আজ
আদালত প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদনের শুনানি বুধবার অনুষ্ঠিত হবে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ওই আবেদনের বিষয়ে শুনানি করতে চাইলে বিচারক আবু আহমেদ জমাদার এ কথা জানান।
তবে বিচারক জানান, যেহেতু সরকার গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে এ মামলা পরিচালনার জন্য বকশী বাজারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতকে নির্ধারণ করে দিয়েছেন, সেহেতু এ মামলার কোনো বিষয়েই ওই স্থানের বাইরে তিনি শুনতে কিংবা সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। এ বিষয়ে আগামী ধার্য তারিখে (আজ বুধবার) ওই স্থানে (বকশী বাজারে স্থাপিত অস্থায়ী আদালত) এ বিষয়ে শুনানি গ্রহণ করা হবে।
অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা ওই দুই দুর্নীতি মামলার শুনানিতে দীর্ঘদিন ধরে অনুপস্থিত থাকায় গত ২৫ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদ্দারের অস্থায়ী আদালত এ পরোয়ানা জারি করেন।
একই মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন।
একই সঙ্গে কোনো আসামি না থাকায় মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী দুদকের উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদকে আসামিপক্ষের জেরা বাতিল করে ৪ মার্চ দ্বিতীয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার খালেদা জিয়ার প্রধান আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন জানান, জামিন সাপেক্ষে কার্যালয়ে ফিরে আসার আশ্বাস এবং পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পেলে বিএনপির চেয়ারপারসন বুধবার আদালতে যাবেন।
এর আগে নানা কারণ দেখিয়ে দুই মামলার শুনানির নির্ধারিত ৬৩ কার্যদিবসের মধ্যে ৫৬ কার্যদিবসই অনুপস্থিত থেকেছেন বেগম খালেদা জিয়া। মাত্র সাতদিন হাজির হন তিনি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার প্রাক্তন সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসাীয় শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রাক্তন সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন খালেদা জিয়ার প্রাক্তন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। মামলায় হারিছ চৌধুরী শুরু থেকে পলাতক।
২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। গত বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে মামলা দুটিতে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার বিশেষ জজ-৩ এর বিচারক বাসুদেব রায়।
প্রতিক্ষণ /এডি/সুজা