প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেছে। কিন্তু জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুর্বৃত্তদের হাতে অপহৃত তরুণীর কোন খোঁজ মেলেনি এখনো। ফলে উৎকন্ঠা ও শঙ্কায় আছেন তার পরিবারের সদস্যরা। রোববার দুপুর ১২ টার দিকে জাবি ক্যাম্পাস থেকে অপহৃত হন ওই তরুণী।
এদিকে সোমবারও এ ঘটনার কোন কারণ এবং সন্দেহভাজন কাউকে চিহ্নিত করা যায়নি বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও অপহৃতার ছোট ভাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা জেফরুল হাসান চৌধুরী জানান, অপহৃত মেয়েটি (২৮) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও সম্প্রসারিত আল বেরুনী হলের এক কর্মচারীর মেয়ে। সে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইসলামনগরে পরিবারসহ থাকতো এবং সাভারের একটি বেসরকারি স্কুলে চাকরি করে বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
এদিকে, এ ঘটনায় রোববার পুলিশ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে এবং দেশের সব থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছে বলে জানান আশুলিয়া থানার ওসি মুহসিনুল কাদির। এছাড়া এই ঘটনায় পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
একই বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজের শিক্ষার্থী ও অপহৃতের ভাই সাইমুম ইসলাম রোবাবার জানান, ‘আমরা আশুলিয়া থানায় গিয়েছিলাম, কিন্তু পুলিশ মামলা নেয়নি। পুলিশ কাজ করছে, আগামীকাল (সোমবার) মামলা নেবে বলে আমাদের জানিয়েছে।’
এদিকে এ ঘটনায় সরব হয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার নিন্দা জানিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী দিদারুল হক বলেন, ‘দিনে দুপরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভিতরে যদি এই অবস্থা হয় তাহলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তা কি আসলেই আছে? আজকে ক্যাম্পাসের ভিতরে সবার সামনে থেকে যদি এক বহিরাগত তরুনীকে নিয়ে যেতে পারে তাহলে দুইদিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের সদস্যকে তুলে নিতে পারবে না তার কোন গ্যারান্টি আছে?’
উল্লেখ্য, বিশমাইল গেট থেকে এক যুবকের সঙ্গে কথা বলতে বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী ক্লাবের দিকে আসছিলেন একজন তরুণী। তাঁরা ক্লাবের সামনে এলে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন পান্দুয়া এলাকা থেকে একটি মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ-১৩৯১০৩) সেখানে এসে থামলে সঙ্গে থাকা যুবক ও গাড়িতে থাকা কতিপয় ব্যক্তি ওই তরুণীকে জোর করে গাড়িতে ওঠানোর চেষ্টা করে। এ সময় সে চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। কিন্তু কাছে পৌঁছানোর আগেই মেয়েটিকে তুলে গাড়িটি দ্রুত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশমাইল গেট দিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। পরে লোকজন সেখানে গিয়ে তার ডান পায়ের একটি জুতা, একটি কানের দুল ও একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি দেখতে পায়। ছবিটি ওই তরুণীর বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। গাড়িতে তুলে নেওয়ার সময় ধস্তাধস্তিতে এগুলো পড়ে যায় বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান গেটগুলোতে গাড়ি প্রবেশের সময় রেজিস্ট্রি খাতায় নিবন্ধন করে প্রবেশ করার ব্যবস্থা থাকলেও বেশ কয়েকটি পকেট গেট রয়েছে, যেগুলোতে কোনো নিরাপত্তা প্রহরা ও গাড়ি প্রবেশে নিবন্ধনের ব্যবস্থা নেই। নির্বিঘ্নে অপহরণের স্বার্থে দুর্বৃত্তরা তাই এই গেটটিকেই ব্যবহার করেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া