গাঁদা ফুলের ঔষধীগুণ

প্রকাশঃ ডিসেম্বর ১৩, ২০১৫ সময়ঃ ৫:০৮ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৯:১২ পূর্বাহ্ণ

Medicine bottles and calendula flowers on wooden background

ফুল হিসেবে গাঁদা ফুলের কদর আমারা সবাই জানি। তবে ঔষধ হিসেবেও এই ফুলটি বেশ উপকারি। নানান রোগের প্রাথমিক চিকিৎসায় গাঁদা ফুলের ব্যবহার বেশ কার্যকরি। এছাড়াও এই ফুলটি অনেক জটিল রোগ সারিয়ে তুলতে সক্ষম। আজ আমরা জানব ঔষধ হিসেবে গাঁদা ফুলের গুণাগুণঃ

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের উৎসঃ
গাঁদা ফুলের উজ্জ্বল কমলা ও হলুদ পাপড়িতে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যারোটিনয়েড। এই ফুলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি র‍্যাডিকেল জনিত কোষের ক্ষতির থেকে রক্ষা করে। ধূমপান, দূষণ ইত্যাদির ফলে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। ফ্রি র‍্যাডিকেল শরীরের কোষের ক্ষতি করে এবং এক পর্যায়ে গিয়ে ডিএনএ এর ক্ষতি সাধন করে। শরীরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ করলে ফ্রি র‍্যাডিকেলের এই ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে।

দৃষ্টিশক্তির কাজেঃ
গাঁদা ফুলের প্রাইমারী ক্যারোটিনয়েডে আছে লুটেইন ও জিয়াক্সান্থিন যা চোখের রেটিনাকে ভালো রাখে এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখে।

আলসার প্রতিরোধেঃ
গবেষণায় জানা গেছে, গরম পানিতে গাঁদাফুলের পাঁপড়ি দিয়ে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে সেই পানি দিয়ে চা বানিয়ে খেলে তা মুখ ও পাকস্থলির আলসার প্রতিরোধ করে ।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়ঃ
গাঁদা ফুলে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে । ১৯৯৮ সালের জার্নাল অফ নিউট্রিশনের একটি গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, গাঁদা ফুল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এই গবেষণায় ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা বলেছেন যে, গাঁদা ফুলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লুটেইন ব্রেস্ট ক্যান্সার টিউমারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।calendula-tea-doprops1
গবেষণায় আরো দেখা যায় যে, লুটেইন টিউমার এর সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি নতুন টিউমার কোষ গঠনেও বাঁধা দেয়। বলা হয়েছে, গাঁদা ফুল লিউকোমিয়া ও কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও সহায়ক। প্রচুর লাইকোপিন থাকায় হার্টের অসুখে ও প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

ক্ষত সারায়ঃ
কোথাও কেটে গেলে কিংবা আঘাত পেলে গাঁদাফুল অথবা তার পাতার রস দিলে রক্ত পড়া বন্ধ হয় এবং বেশ দ্রুত ক্ষত সেরে যায়। পোড়া ত্বকেও গাঁদা ফুলের রস লাগালে তাৎক্ষনিক প্রশান্তি মেলে। ব্রাজিলের গবেষকরা ইঁদুরের উপর গবেষণা করে দেখেছেন যে, ক্ষত স্থানে গাঁদাফুলের রস লাগালে নতুন স্কিন টিস্যু জন্মাতে সহায়তা করে এবং ক্ষত স্থানটি দ্রুত সেরে যায়।

ত্বকের যত্নেঃ

রোদে পোড়া ত্বকে গাঁদা ফুলের রস লাগালে কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্বালা ভাব চলে যায় এবং ত্বক শীতল হয়ে যায়। এছাড়াও গাঁদা ফুলের অ্যান্টি অক্সিডেন্টের কারণে ত্বকে বার্ধক্যের ছাপ পড়ে না সহজে। গাঁদাফুল হলো প্রাকৃতিক অ্যান্টিসেপ্টিক। তাই ব্রণের উপর গাঁদা ফুলের রস লাগালে দ্রুত ব্রণ সেরে যায়।

ইনফেকশন রোধেঃ
গোসলের আগে গাঁদাফুলের পাপড়ি পরিষ্কার পানিতে ফুটিয়ে নিন। সেই পানি কুসুম গরম থাকতেই গোসলের পানিতে মিশিয়ে গোসল করে নিন। ভ্যাজিনাল ইনফেকশন, ব্লাডার ইনফেকশন, একজিমা প্রতিরোধ করবে।

আরো যেভাবে ব্যবহার করা যায়ঃ
* গাঁদা ফুলের পাপড়ি শুকিয়ে গুঁড়ো করে জাফরানের বদলে ব্যবহার করা যেতে পারে।
* গাঁদা ফুলের পাপড়ি সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে চা বানিয়ে খাওয়া যায় ও মুখ ধোয়া যায়।
* সালাদের সাথে গাঁদা ফুলের তাজা পাপড়ি মিশিয়ে খাওয়া যায়।
 (এ ফুলে রয়েছে টার্পিনয়েড,এস্টার, ফ্ল্যাভোজেন্থিন। তাই ভেজিটেবল ডাই হিসেবেও এর বহুল ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়।)

প্রতিক্ষণ/এডি/জেবিএম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G