গাহি তাহাদের জয়গান
শারমিন আকতার
এত ভারী বোঝা নিয়েও তার চোখের কোণে কোথাও অসন্তুষ্টির কালিমা লেপন করা গেলনা। এই আমাদের গরবিনী সুহাসিনী অতি উজ্জ্বল আলোক রেখার প্রতিবিম্ব; এই আমাদের নারী। দিনশেষে যার ঠোঁটের কোণায় লুকিয়ে থাকা মুচকি হাসি রাতের আঁধারকেও ছাপিয়ে দাপিয়ে বেড়ায় দিগন্ত রেখার প্রজ্বলিত নিলীমায়।।
পড়ন্ত বিকেলের নিষ্ঠুর ছাপ তার সারা অঙ্গের আঙিনায় নির্লিপ্তভাবে প্রকট হয়ে উঠেছে। তবুও এই দু:সহ জঞ্জালকে উপড়ে ফেলে, নিরেট সত্যকে উপেক্ষা করে প্রশান্তির মুখোচ্ছবি ফুটিয়ে তুলেছে নিজের চারপাশ। যেন, কোনো কষ্টই তার কাছে কষ্ট নয়, কোনো বাধা তাকে দ্বিাধাগ্রস্থ করতে পারেনা। এভাবেই এগিয়ে যাক আমাদের সকল নারী।
‘বিশ্বে যাকিছু মহান সৃষ্টি চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী অর্ধেক তার নর’ এ শুধু কাব্যের প্রহেলিকা অথবা দূর মরিচিকা নয়; কবি নজরুলের এ বাণী একান্তভাবে অকপটহীন সত্যের শাণিত উচ্চারণ। মোরা দোহে মিলি করিয়াছি অপূর্ণ বচন। সাক্ষি সাবোদ যারা কহে নাই বিন্দু মিছে তারা। তবে আজি কেন লাগিলো এ ঘোর অমানিশা? ধুয়ে যাক সব পাপ, মুছে যাক সব শাপ। মুগ্ধ চোখেতে শুধু দেখিয়া যাইবো, আর মনের হরষে গাহিব পুরুষ-রমনীর মিলনবিজয়গাঁথা।
‘মুক্ত কর ভয়। আপনা মাঝে শক্তি ধর নিজেরে কর জয়।দূরুহ কাজে নিজেরে দিয় কঠিনও পরিচয়’। রবির বাণী করজোর করে মিনতি করছে, আর বলছে, ‘সত্য তাই যাহা সম্মুখে দেখিতে পাওয়া যায়। সত্যরে লও মানিয়া, মিথ্যেরে যাও ছাড়িয়া’।যখন নারী তার কর্মে হয়ে উঠে দক্ষ, তখন ভাবে হয়ে যায় সূক্ষ্ণ। এ দুয়ের মিলিত প্রয়াসে জন্ম হয় সূক্ষ্ণকর্মের। গাহি তাহাদের গান, ধরণীর হাতে দিল যারা আনি’ ফসলের ফরমান।
====