গ্রীক দেবী থেমিস, মৃনাল হক এবং আমাদের রাজনীতি!!

প্রকাশঃ জুন ৩, ২০১৭ সময়ঃ ৫:২৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:২১ অপরাহ্ণ

রাকিব হাসান :

গ্রীক দেবী থেমিসের প্রকৃত ভাস্কর্য

গ্রিক পুরান মতে, পরম শূন্যতা ছিলো আদিতে (শুরুতে)। কোন পুরুষের সংস্পর্শ ছাড়াই গেইয়া (পৃথিবী) গর্ভবতী হন, জন্ম নেন ইউরেনাস (আকাশ)। এবার ইউরেনাস তার জননীকে গর্ভবতী করেন। মাতা পুত্রের সঙ্গমে জন্ম নেন ১২ টাইটান। ৬ ভাই ৬ বোন। তাদের একজন থেমিস। থেমিসের পেটে ছয় সন্তান পয়দা করেছেন দেবরাজ জিউস। পুরান মতে, জিউস রাজহাঁস সেজে স্পেনের রাণীকেও রেপ করেছেন। শুধু রাণী নন, যেকোন নারীতেই তুষ্ট ছিলেন জিউস।

জিউসের বাবাও কম যান না। তার নাম ছিলো ক্রনাস । আর এই ক্রনাস দেবরাজ হবার জন্য, তার নিজের বাপের অণ্ডকোষ কেটে দিয়ে তাকে দেবরাজ পদ থেকে সরিয়ে দেন। গ্রিক পুরান মতে, গ্রিক দেবতারা মানবী ধর্ষণ করেছেন, দেবীরা মানব ধর্ষণ করেছেন। ষাঁড়ের সাথেও কী কী করেছেন!! নিরীহ পশুও তাদের কুনজর থেকে রক্ষা পায়নি!! এই মিথোলজি – যারা গ্রিক সাহিত্য পড়েছেন তারা কমবেশি সবাই জানেন।

এই পৌরাণিক যৌনতা নির্ভর আখ্যান থেকেই অনুমেয় দেবী থেমিসের প্রকৃত পরিচয়।

আর এই দেবী থেমিসই কিনা ন্যায়বিচারের প্রতীক!! সত্যের প্রতিমূর্তি! এরকম একটি দেবীর ভাস্কর্য হাইকোর্টের সামনে প্রতিস্থাপন করার আগে মৃনাল হক কি কুরুচিপূর্ণ আখ্যানটি জানতেন না?

কথিত যেসব প্রগতিশীল এই পৌরাণিক গল্প না জেনেই দেবী থেমিসকে স্থানান্তর নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে মায়াকান্না করেছেন তাদের জন্য আফসোস হয়!! সাথে মৃনাল হকের জন্যও! কারণ ভাস্কর মৃনাল হক এই দেবীকে সরানোর পর কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেছেন, তার মায়ের মৃত্যুতেও তিনি এমন করে কাঁদেননি।এর চাইতে মিথ্যাচার, আত্নপ্রতারণা এবং আত্নপ্রবঞ্চনা আর কী হতে পারে?

প্রতারণা তিনি শুধু নিজের সাথেই নন, সমগ্র জাতির সাথে করেছেন।ভাস্কর্যরূপী গ্রিক দেবীর গায়ে শাড়ি পরিয়ে দিয়ে বাঙালীয়ানা সাজ দেয়ার চেষ্টা করেছেন। প্রথমদিকে যখন এই ভাস্কর্য নিয়ে বির্তক ওঠে তখন তিনি এটাকে গ্রিক দেবী থেমিস নয় বলে সাফ জানিয়ে দেন। তিনি বলেন,‘ এটা কোনো গ্রিক দেবীর মূর্তি নয় বরং বাঙালি নারীর ভাস্কর্য। ন্যায় বিচারকের ভূমিকায় বাঙালি নারীর অবয়ব দেখাতে চেয়েছি এই ভাস্কর্যে।

অথচ পরবর্তীতে গণমাধ্যমে টকশোতে তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘থেমিসের এই ভাস্কর্য ন্যায়বিচারের প্রতীক। বিভিন্ন দেশের আদালত প্রাঙ্গনে এটা আছে। সে কারণে আমাদের হাইকোর্টের কর্তাব্যক্তিদের চাহিদামতো বাঙালি সাজে এটা তৈরি করেছি’। তখন চ্যানেলের টকশো সঞ্চালক রোবায়েত ফেরদৌস জানতে চান, কারা আপনাকে হাইকোর্টের সামনে এই ভাস্কর্য স্থাপন করতে বলেছে? আপনাকে যে অনুমতি দেয়া হয়েছে তার কোন কাগজপত্র আছে কীনা? জবাবে মৃনাল হক বলেন, ‘না আমার কাছে কোন লিখিত অনুমতিপত্র নেই, মৌখিকভাবে আমাকে বলা হয়েছে। কারা বলেছে সে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।’ ইউটিউব থেকে এই টকশো বেশ কয়েকবার দেখে একটি প্রশ্নই বারবার মনে হলো; একটি দেশের সর্বোচ্চ আদালতের সামনে কোন কর্তার মৌখিক আশ্বাসে, কোন অনুমতিপত্র ছাড়া কিভাবে একটি ভাস্কর্য নির্মাণ হতে পারে?

একটি অনুষ্ঠানে আলেমরা ভাস্কর্যের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ আদালত প্রাঙ্গণে গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্য স্থাপন করা উচিত হয়নি। এই ভাস্কর্য স্থাপনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটাকে আবার শাড়ি পরানো হয়েছে। এর কী মানে!

পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে হাইকোর্টের সামনে থেকে ভাস্কর্যটি স্থানান্তর করে এনএক্স ভবনের সামনে নিয়ে প্রতিস্থাপন করা হয়। এটা নিয়েই চলছে এখন রাজনীতি। একপক্ষ বলছে এটা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরাজয়। আরেকপক্ষ বলছে, আপসারণ না করে স্থানান্তরের বিষয়টি অযৌক্তিক, মেনে নেয়া যায় না। এটা নিয়ে বিভিন্ন চ্যানেলে চলছে একের পর এক টকশো। এরকমই একটি টকশোতে মুফতি সাখাওয়াত দাবী করেন, আদালত প্রাঙ্গণে কোন ধর্মীয় ভাস্কর্য থাকতে পারবে না। আর তখনই সুলতানা কামাল বলে বসেন, ভাস্কর্য না থাকলে মসজিদও থাকতে পারবে না। মসজিদ নিয়ে সুলতানা কামালের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদে গতকাল জুমআর নামাযের পর তাকে গ্রেফতারের দাবি জানান হেফাজতের কর্মীরা। হেফাজতের কথা বাদ দিন। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে কি মনে হয়, সুলতানা কামাল তাঁর এই বক্তব্যের মাধ্যমে কী বোঝাতে চেয়েছেন? মসজিদ সম্পর্কে এমন বক্তব্য কি ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত নয়? সুলতানা কামালরা কি এই দেশকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিতে চান?

কথিত প্রগিতিশীলদের মতে, হুজুররা মুর্খ, কিছু জানে না, বোঝে না। এদের সাথে বির্তক করা বৃথা। ভালো কথা। তাহলে এই মুর্খদের উস্কানী দিয়ে আপনারা কোন পান্ডিত্যের পরিচয় দিচ্ছেন? তাও আবার গ্রিক দেবী থেমিসের ভাস্কর্যের উপর ভিত্তি করে। এই ভাস্কর্য নিয়ে মায়াকান্নার আগে গ্রিক দেবীর যৌনতা নির্ভর পৌরানিক আখ্যানটি পড়ে নেয়ার অনুরোধ রইলো।

মৃনাল হকের শিল্পমানও প্রশ্নবিদ্ধ !!

যেই মৃনাল হকের ভাস্কর্য নিয়ে এত আস্ফালন, তার ভাস্কর্যের শিল্পমানও প্রশ্নবিদ্ধ! বাংলা ট্রিবিউন সহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় তার শিল্পমান নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে-

গ্রিক দেবী ছাড়াও রাজধানীতে বেশ কয়েকটি ভাস্কর্য রয়েছে ভাস্কর মৃনাল হকের। তিনি নানা জায়গায় গিয়ে নিজ উদ্যোগে ভাস্কর্য তৈরির কাজ করেছেন। প্রায় সময়ই তিনি বলে থাকেন, ‘নিজ খরচেই ভাস্কর্য তৈরি করি।’

যদিও তার কাজের শিল্পমান নিয়ে বিভিন্ন সময় সমালোচনা হয়েছে। সমালোচকরা বলে থাকেন, ভাস্কর্য নির্মাণে তিনি মনোযোগী নন এবং তার কাজে কিছু অবাস্তব দিক থেকে যায়, অসাবধানতার কারণেই। বিনা পয়সায় ভাস্কর্য তৈরি করে দিলেই শিল্পমানহীন ভাস্কর্য উপস্থাপন ঠিক কিনা, সে প্রশ্ন উত্থাপনও জরুরি বলে মনে করছেন সমালোচকরা।

থেমিসের ভাস্কর্যের নান্দনিক  ত্রুটির পাশাপাশি দেবীকে শাড়ি পরানো নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন সময়ে।

এই ভাস্কর্যটি ছাড়াও রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ‘রত্নদ্বীপ, হোটেল শেরাটনের সামনে ‘রাজসিক, পরীবাগ মোড়ে ‘জননী ও গর্বিত বর্ণমালা, ইস্কাটনে ‘কোতোয়াল, সাতরাস্তায় ‘ময়ূর, মতিঝিলের ‘বক, এয়ারপোর্ট গোল চত্বরের ভাস্কর্য, নৌ সদর দফতরের সামনে ‘অতলান্তিকে বসতি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের ভাস্কর্য, বঙ্গবাজারে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্যসহ দেশের বিভিন্নস্থানে তিন থেকে চারশ শিল্পকর্মের নির্মাতা তিনি। তবে সবচেয়ে বেশি বিতর্কও ঘিরে আছে তার শিল্পকর্ম নিয়ে।

শিল্প সমালোচকরা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ‘রত্নদ্বীপ’নামে ২০০৮ সালে নির্মিত মৃণাল হকের যে ভাস্কর্যটি রয়েছে তাতে যে ঝিনুকটি দেখা যায়, তা আমাদের দেশীয় কোনও প্রজাতির ঝিনুক নয়।

রাজধানীতে রূপসী বাংলা হোটেলের (শেরাটন) সামনে স্থাপিত মৃণাল হকের আরেকটি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ভাস্কর্যের নাম ‘রাজসিক। এ ভাস্কর্যটিতে দু’টি ঘোড়া একটা গাড়ি টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কোচোয়ান বসে আছেন সামনে, গাড়ির পেছনে একজন প্রহরী। আর গাড়িতে আছেন নবাব সলিমুল্লাহ, যিনি সপরিবারে নগরীর হালচাল দেখতে বের হয়েছেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ভেতরে যে নবাব বসে আছেন, সেটি মোটেও দৃশ্যমান নয়।

পরীবাগ মোড়ে হাতের বামে নজরে পড়বে খুব সম্প্রতি একুশ নিয়ে মৃণালের স্থাপিত ভাস্কর্য ‘জননী ও গর্বিত বর্ণমালা’। এতে দেখা যায়, মায়ের কোলে শহীদ সন্তান। কিন্তু মায়ের মুখের অভিব্যক্তিতে কান্না নাকি ক্ষোভ জমে আছে, তা বোঝা যায় না। বরং মনোযোগ না দিয়ে দেখলে হুট করে মনে হতে পারে শহীদমাতার মুখে এক চিলতে হাসি।

তেজগাঁও সাত রাস্তার মোড়ে ছিল মৃণালের ময়ূরের ভাস্কর্য। লোহা-লক্করের তৈরি। ওই ভাস্কর্যে ময়ূরী নয়, পেখম তোলা ময়ূরকেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল। কিন্তু নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বর্ষারানী। এ নিয়ে নাগরিকরা মুখ টিপে হেসেছেন। যদিও ফ্লাইওভারের কাজের জন্য বর্তমানে তা সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন নিসার হোসেন মনে করেন, ঢাকার ৯০ শতাংশ ভাস্কর্য কুরুচিপূর্ণ। শহরে ভাস্কর্য থাকতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘শিল্পের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে এই ভাস্কর্যগুলো সরিয়ে নেওয়া উচিত। ভাস্কর্য যারা বোঝেন তাদের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ভাস্কর্য স্থাপনের ব্যবস্থা করতে হবে। চলতি পথে, সড়ক দ্বীপে চাইলাম আর কিছু একটা বানিয়ে ফেললাম, এতে শহরের কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’

এর আগে বিমানবন্দরে মৃণাল হকের তৈরি লালনের ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বারবার তার তৈরি করা ভাস্কর্য নিয়ে এ ধরনের সমস্যার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনারাই ভালো বলতে পারবেন। আমি কাজ করে চলেছি- এটাই সত্য।’

মৃনাল হকের উত্থান

মূলত ১৯৯৫ সালে আমেরিকা যাওয়ার পরে মৃণাল হকের উত্থান ঘটে। নিউইয়র্কের সরকারি টিভিতে তার এক সাক্ষাতকার ২৬ বার এবং মার্কিন সরকারি চ্যানেল সিএনএন –এ ১৮ বার প্রচারের পর তিনি আলোচনায় আসেন। তিনি বাংলাদেশে থাকেন না।স্থায়ী ভাবে দেশে না থাকলেও ২০০২ সালের পর থেকে ভাস্কর্যের কাজে প্রায়ই তিনি দেশে আসেন। তার পুরো পরিবার নিয়ে তিনি আমেরিকাতে সেটেল হয়েছেন ১৯৯৫ সালে। তার বউ নাসরিন হক এবং পুত্র সৈকত হকের ফেসবুক আইডি দেখলেই বোঝা যায় তারা আমেরিকাতেই সেটেল এবং সেখানেই থাকছেন।

তবে ২০০২ সালের পর মৃনাল হক দেশে এসে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে একের পর এক ভাস্কর্য শিল্প নির্মাণ করেন ।

কে এই মৃনাল হক ?

মৃনাল হকের বিষয়ে একটি কলামে সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান বিস্তারিত তুলে ধরেছেন। উল্লেখযোগ্য অংশ দেয়া হল-

মৃনাল হক। তার বাবা অধ্যাপক একারামুল হক ভাষা আন্দোলনের মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন। রাজশাহী কলেজের শিক্ষক ছিলেন। আইয়ুবের ফৌজি শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ছিলেন। রাজশাহী কলেজ থেকে চাকরি চলে গিয়েছিল। সেসসময় রাজশাহীর প্রগতিশীল সহমর্মীরা তার প্রতি সহানুভূতির হাত বাড়িয়েছিলেন। শেষপর্যন্ত জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি সেকেলে লেটার প্রেস বা ছাপা খানা দিয়ে সংসার চালাচ্ছিলেন।

৭৫ এর ১৫ আগস্ট পরিবার পরিজনসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নৃশংসভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে সামরিক ক্যু-পাল্টা ক্যুর পথ ধরে সেনাশাসক জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসলেন। স্বাধীনতা বিরোধী দক্ষিণপন্থী, অতিবিপ্লবী চীনা পন্থী রাজনীতিবিদসহ সমাজের নানা মত পথের মানুষকে তার দল গঠনে শরিক করলেন। সেই রাজনীতিতে রাজশাহীতে যুক্ত হলেন অধ্যাপক একরামুল হক।

ভাস্কর মৃণাল হকের বাবা একরামুল হক ক্ষমতার দৌঁড়ে বেশ এগিয়ে গেলেন। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার শাসনামলের শেষ দিকে একরামুল হককে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য পদ দিলেন। এতেই একরামুল হকের ভাগ্যের চাকা ঘুরে গেল। অঢেল সম্পদের মালিক হতে থাকলেন। দূর হতে থাকলো অভাব-অনটন। পুত্র মৃণাল হকেরও দাপট বাড়তে থাকলো পিতার ক্ষমতার আলোয়।

রাজনৈতিক পরিচয়ের সূত্র ধরে, বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্যরিস্টার আমিনুল হক বিয়ে করেন মৃনাল হকের বোনকে।

রাজনীতির উত্থান-পতনের ঐ সময়টাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের জন্য ছিল অনেক বৈরী। উগ্রপন্থী, বিপ্লবী আর সেনাশাসকদের প্রতিহিংসার কারণে কঠিন বাস্তবতার মুখে ছিলো ছাত্রলীগ।

সেই দুঃসময়ে একরামুল হক ও তার পুত্র ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক মৃণাল হক বিনা উস্কানিতে, বিনা কারণে রাজশাহী নগর থেকে ট্রাকভর্তি গুন্ডা ভাড়া করে ক্যাম্পাসের হলে হলে ঘুমন্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলার তান্ডব চালিয়েছিলেন।

এতকিছুর পরও সময়ের পরিক্রমায় সেই মৃনাল হকই এখন সারাদেশে ভাস্কর্য গড়ার অনুমতি পান। অবাক করা বিষয় হলো, একটি রাজনৈতিক অধ্যায় থাকার পরও, শিল্পমান প্রশ্নবিদ্ধ হবার  পরও- সব সরকারের সময়েই সুবিধাভোগী ছিলেন মৃনাল হক।তার এই শক্তির উৎস কোথায়?

 

রাকিব হাসান
লেখক: সাংবাদিক

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G