চাই ট্রেন্ডি জুতা
তাজিন আক্তার, প্রতিক্ষণ ডট কম
ফ্যাশন সচেতনরা পোশাকের সঙ্গে সমান নজর দিয়ে থাকেন অনুষঙ্গকে। নিজেকে পরিপাটি করে সাজানোর পর স্টাইলিশ দেখানোর জন্য আপনার প্রয়োজন ট্রেন্ডি জুতা। যা হতে হবে পোশাক, পরিবেশ ও বয়সের সঙ্গে অবশ্যই মানানসই।স্টাইলিশ লুকের জন্য ট্রেন্ডি জুতা নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।
পোশাকের সঙ্গে মানানসই একজোড়া সুন্দর ও ট্রেন্ডি জুতা একজনকে করতে পারে স্টাইলিশ। তবে ফ্যাশনেবল জুতা মানেই সবার ধারণা থাকে হাই হিল নিয়ে। ফ্যাশন ট্রেন্ডের এই সময়ে সে ধারণা পাল্টে গেছে।ফ্যাশনের পাশাপাশি আরামের বিষয়টিও এখন প্রাধান্য পাচ্ছে সমানভাবে। জুতা এবং স্যান্ডেল কেনার সময় খেয়াল রাখতে হবে, এটি যাতে পরতে আরামদায়ক হয়। কয়েক ঘণ্টা পায়ে থাকবে, অতএব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ না করলে অসুবিধায় পড়তে হবে।
তাছাড়া চলতি সময়ের স্টাইল কিংবা ট্রেন্ড কী, তা বোঝা দরকার।ফ্যাশন, উপলক্ষ, কোন পোশাকের সঙ্গে পরবেন, কখন পরবেন ইত্যাদি মাথায় রাখতে হবে। ফ্যাশনের রেসে গিয়ে ভুল জুতা কিনলে চলবে না। এতে পায়ের ক্ষতি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জুতার দোকানে আপনাকে কিছুটা সময় দিতে হবে। ম্যাটেরিয়াল, জুতার ইন সোল, ভেতরের দিকটা এবং সোল ভালোভাবে দেখে কিনুন। সারাদিনের আপনার সঙ্গী যেহেতু জুতা তাই এ ব্যাপারে সচেতন হওয়া জরুরি।
তবে আপনি কোথায় যাচ্ছেন এর ওপরও নির্ভর করে অনেক কিছু। অফিসের পরিবেশে একরকম, আবার বন্ধুদের আড্ডায় একরকম, পার্টিতে গেলে একটু গর্জিয়াস—এভাবেই সম্মানভেদে বদলে যায় জুতার স্টাইল। তবে সময়ের পরিবর্তনে যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে জুতায় এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। ফ্যাশনের পাশাপাশি আরামদায়ক জুতার গ্রহণযোগ্যতা এখন প্রাধান্য পাচ্ছে। সময়ের হাত ধরে ফ্যাশন জগতে এসেছে বেশ পরিবর্তন।
মেয়েদের ক্যাজুয়াল জুতার ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট স্যান্ডেলের জয়জয়কার বিশেষ করে একদম ফ্ল্যাট চটিগুলো। এগুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে বলে তরুণীরা সহজেই পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং করে ব্যবহার করতে পারেন।
পাশাপাশি তরুণীরা বেছে নিচ্ছে হালকা হিলও, অর্থাত্ এক থেকে দেড় ইঞ্চি পাম্প শু যেগুলোর ওপর বিভিন্ন ফুল, পাথরের নকশা থাকে।
সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টপ, জিন্সের সঙ্গে তো যায়ই; পাশাপাশি শাড়ির সঙ্গেও মানিয়ে যায় এ জুতা। সে ক্ষেত্রে পোশাকের সঙ্গে জুতার রঙটা একটু মিলিয়ে পরলেই ভালো।
অফিস গেটআপ বা করপোরেট জগতে জুতা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসলে লেদারের তৈরি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে জুতার।
তারুণ্যের ফ্যাশনকে প্রাধান্য দিয়ে এতেও এসেছে অনেক পরিবর্তন। অফিশিয়াল শু’র পাশাপাশি রয়েছে ক্যাজুয়াল জুতা। কেডস এবং বুটের আদলে তৈরি হচ্ছে এসব, যা আপনার স্মার্ট লুককে ধরে রাখবে। শুধু ছেলেদের ফ্যাশনেই নয়, মেয়েদেরও রয়েছে ভিন্ন ডিজাইনের জুতা।
এসব লেদারের জিনিসের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর ফিনিশিং এবং স্থায়িত্ব। প্রতিনিয়ত আসছে নতুন ডিজাইন। জুতা এবং স্যান্ডেলের দাম নির্ভর করে ডিজাইন, ব্যবহার ম্যাটেরিয়াল এবং পণ্যের গুণগত মানের উপর। এখন দেশে প্রস্তুত জুতা এবং স্যান্ডেল যেমন পাওয়া যায়, তেমনি বাইরে থেকেও আসছে নানা ডিজাইনের জুতা।
ফ্যাশন হাউসগুলোর জুতা এবং স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে নির্দিষ্ট দামে। বাকি সব বিক্রি হয় দর কষাকষির মাধ্যমে। আমাদের দেশে জুতার সবচেয়ে বড় মার্কেট হলো এলিফেন্ট রোড।
পাশাপাশি বাটা, এপেক্স, জেনিস, লিবার্টি, বে এম্পোরিয়াম, স্পার্ক গিয়ার, গ্রেটিংসসহ দেশের বড় বড় ফ্যাশন হাউসগুলোতে পাবেন নান্দনিক ডিজাইনের সব জুতার কালেকশন।
পাম্প সু, লেডিস স্যান্ডেল, হাই হিল, সেমি হিল ছাড়াও জিন্স, সিল্ক, ভেলভেটসহ নানা ধরনের কাপড়ের ওপর ফুল বসানো জুতা এখন বেশ জনপ্রিয়।এগুলো কুর্তা-লেগিংস, পার্টি ড্রেস, সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে পরতে পারেন। পাওয়া যাবে ৬০০-৪০০০ টাকায়।
সালোয়ার-কামিজ কিংবা শাড়ির জন্য বেছে নিতে পারেন গোড়ালি বন্ধনী জুতা।এগুলো গোড়ালির কাছে ইলাস্টিক
অথবা লেদার দিয়ে উঁচু ডিজাইন করা থাকে, যার দাম ৪০০-৩৫০০ টাকা। স্লিপার কিনতে পারবেন ১৫০-১৫০০ টাকায়, পেন্সিল হিল ১০০০-৬০০০ টাকা, দেশি ফ্যাশন হাউসগুলোতে এখন চামড়ার তৈরি জুতা পাওয়া যাচ্ছে বেশ। পাওয়া যাবে ৭০০-২০০০ টাকায়।
পরিশেষে বলতে চাই, আপনার পছন্দের জুতাটি কেনার সময় চলতি ট্রেন্ডের কথা মাথায় রাখার পাশাপাশি ভাবতে হবে জুতার টেকসইয়ের ব্যাপারটিও। আর নিজের ব্যক্তিত্বকে ফুটিয়ে তুলতে সে রকম ডিজাইনের জুতা পরবেন।
প্রতিক্ষণ/এডি/রাজু