চুলের সৌন্দর্যে হেয়ার কালারের ব্যবহার
ফারজানা ওয়াহিদ
হেয়ার কালার দিন দিন মেয়েদের লুককে অনেক স্টাইলিশ করে তুলছে। এর অনেক ধরন রয়েছে, যা না বুঝে ব্যবহার করা ঠিক নয়। যেমন- সচারাচর শ্যাম্পু করলে কালার ধুয়ে যায়। এ কালারে বিভিন্ন রকম কেমিক্যালের ব্যবহার হয়। নীল, সবুজ, লাল, কমলা, হলুদ, বেগুনি, সিলভার, গোল্ডেন, মেজেন্টা যে কোনো রঙ করা যায়। লিকুইড রিনজ, জেল, স্প্রে হিসেবে পাওয়া যায় এবং এগুলো বিশেষ কোনো ক্ষতি করে না।
বেশ কয়েকবার শ্যাম্পু করলে তবেই কালার উঠে যায় এবং বেশ কয়েক রকম ডাই একত্রে মিলিয়ে ব্যবহার করলে তবেই মনের মতো কালার পাওয়া যায়। নাইট্রোঅ্যামিনিন, ডাই অ্যামিন, অ্যাজো অ্যানথ্যাকুইনোন ইত্যাদি ডাইয়ের সঙ্গে অ্যালকালাইজিং এজেন্ট, সেলডেন্ট, সারফেক্ট্যান্ট বা পরিষ্কারক থিকেনের সুগন্ধ ও পানি মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এগুলো লোশন, শ্যাম্পু হিসেবে পাওয়া যায়। চুলের রঙের টনিংয়ের জন্য এটি খুব ভালো। ওয়ালনাট স্টেন চুলের কালচে, বাদামি রঙ দিতে সক্ষম।
ভেজিটেবল ডাই :
এর রঙ অত্যন্ত প্রাচীন। চার হাজার বছর আগে মিসরীয় সুন্দরীরা অ্যালক বা হেনা ব্যবহার করতেন। হেনার পাতা শুকিয়ে গুঁড়া করা পেস্ট, ১ঘণ্টা লাগিয়ে রাখলে চুলে কালার ধরে যায়। সাধারণত লালচে কালার হয়। সিন্থেটিক হেনা প্রডাক্টগুলো হেনা এবং মেটালিক ডাইয়ের সংমিশ্রণ। এতে লাল সেডের কালার পাওয়া যায়।
পারমানেন্ট :
এই পদ্ধতিতে কালার চুলের কর্টেক্সের মধ্যে পৌঁছে যায়। ফলে দীর্ঘদিন কালার থাকে। ফেনিলিন-ডাই-অ্যামিন, টলুইন-ডাই-অ্যামিন, অ্যামিনো ফেনলের সঙ্গে হাইড্রোজেন-পার-অক্সাইড মিশিয়ে ব্যবহার করলে চুলের মধ্যে ঢুকে রঙিন মলিকিউল ডিপোজিট করে মেশাতে হয়। কাপলারে থাকে রিসরসিনল, ন্যাপথল ইত্যাদি ব্লন্ড থেকে ব্ল্যাক হেয়ার যে কোনো কালার তৈরি করা যায়। পাকা চুলে লাগালে হাইড্রোজেন-পার-অক্সাইড কালো চুলকেও বি্লচ করে দেয়। তারপর যে কালার হয় তা সব চুলকেই একই কালারের হতে সাহায্য করে। সাধারণত দুটি আলাদা বোতলে থাকে। একটি রঙবিহীন ডাই-প্রিকারসার, অন্যটি হাইড্রোজেন-পার-অক্সাইড। ব্যবহারের আগে দুটিকে একসঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে।
পারমানেন্ট হেয়ার ডাই যেহেতু কিউটিকল ভেদ করে চুলের ভেতরে পৌঁছায়, সেহেতু এতে হেয়ার শ্যাফটের ক্ষতি হতে পারে। পারমানেন্ট হেয়ার কালার করার আগে কয়েকটি কথা মনে রাখা ভালো। পারমানেন্ট কালারের ক্ষেত্রে স্ট্রেট বা রিবন্ডিং করতে চাইলে আগে স্ট্রেট করুন। পরে কালার করুন।
নতুন গজানো অর্থাৎ গোড়ার দিকে বেশি মন দিন, পরে কালার করা চুলের দিকে। কারণ চুলে বারবার কালার করলে ক্ষতি বেশি হয়। সবসময় ভালো পার্লারে অভিজ্ঞ হাতে কালার করাবেন। ত্বকের সঙ্গে মানানসই কালার নির্বাচন করুন চুলের জন্য। সবসময় ভালো ব্র্যান্ডের কালার নির্বাচন করুন। হেয়ার ডাইংয়ে অ্যালার্জি হলে ব্র্যান্ড পরিবর্তন করুন।
আপনি চুলে রেড, ব্রাউন, পাংক, পিংক, ব্লু-ব্ল্যাক, সল্ট অ্যান্ড পেপার গ্রে, নিওন গ্রিন, অ্যাশ ব্রাউন, গোল্ডেন ব্রাউন, গোল্ডেন ব্লন্ড, পেপার গ্রে যে কালারই করুন না কেন ঘন ঘন কালার বদলালে চুলের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে। সাধারণত আমাদের দেশীয় ত্বকে বা স্কিন টোনের সঙ্গে কপার, চিনামন, জিঞ্জার, গোল্ডেন ব্লন্ড, বাটার স্কচ, কপার কারামেল, মিডিয়াম অ্যাশ, বারগেন্ডি, প্রান্টেট ইত্যাদি শেডের কম্বিনেশন ভালো মানায়। কালারের একটি ব্যালান্সড কম্বিনেশন থাকা প্রয়োজন। কখনও এমন শেড সিলেক্ট করবেন না যেন চুলের শেডের কারণে আপনার মুখের ত্বক মলিন মনে হয়।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফজে