জাতীয় সংসদকে উচ্চকক্ষ করতে চান খালেদা

প্রকাশঃ মে ১০, ২০১৭ সময়ঃ ৭:২০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৭:২০ অপরাহ্ণ

সংবিধানের এককেন্দ্রীক চরিত্র অক্ষুন্ন রেখে বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থা সংস্কারের অংশ হিসেবে জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।

আজ বুধবার বিকালে রাজধানীর একটি হোটেলে রাষ্ট্র পরিচালনায় বিএনপির দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ‘ভিশন ২০৩০’ ঘোষণার শুরুতেই এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এককক্ষের সংসদীয় ব্যবস্থা চালু হয়। তবে ভারতে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে লোকসভার সদস্যরা সরাসরি ভোটে নির্বাচিত হন। বর্তমানে লোকসভার সদস্য সংখ্যা ৫৪৫ জন। আর উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার সদস্যদ ২৪৫ জন। এদের মধ্যে ১২ জনকে নির্বাচিত করেন রাষ্ট্রপতি। অন্যান্য সদস্যরা রাজ্য ও শায়ত্বশাসীত অঞ্চলগুলোর বিধানসভা কর্তৃক নির্বাচিত হন।

তবে বাংলাদেশে কী ধরনের উচ্চকক্ষ থাকবে, সেটা বলেননি খালেদা জিয়া। তার উত্থাপিত ভিশন ২০৩০ অনুমোদনের আগে এই বিষয়টি নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে বাদানুবাদের খবরও প্রকাশ হয়েছে গণমাধ্যমে। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএনপির শীর্ষ নেতাদের একটি অংশ চান না, বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ থাক। কারণ সে ক্ষেত্রে ভারতের মত বাংলাদেশকেও বিভিন্ন প্রদেশে ভাগ করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেন, “গণতন্ত্রের চেয়ে উন্নয়ন শ্রেয় এই ধারণা নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করার অপচেষ্টা বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত করবে।”

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে যে ‘বিতর্কিত ও অগণতান্ত্রিক বিধান’ যুক্ত করা হয়েছে, সেগুলো সংস্কার করার অঙ্গীকারের কথাও বলেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

তিনি বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সংবিধান সংশোধন করে গণভোট ব্যবস্থা পুনপ্রবর্তন করবে এবং জাতীয় সংসদকে সকল কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত করবে। ক্ষমতার ভারসাম্য আনতে জাতীয় সংসদে উচ্চ কক্ষ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।
খালেদা প্রতিশ্রুতি দেন, তার দল রাষ্ট্রক্ষমতা পেলে প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশ ও কারা ব্যবস্থানায় সংস্কার আনার মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও দক্ষতা নিশ্চিত করবে। প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সংবিধান অনুযায়ী প্রতিষ্ঠা করা হবে ন্যায়পালের পদ।

খালেদা জিয়া বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে খেলাধুলার ক্ষেত্রে বিশ্বে বাংলাদেশ যাতে কয়েকটি ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, সে লক্ষ্যে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। জাতীয় অলিম্পিক একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা হবে। দেশের মালিকানা জনগণের হাতে নেই। বিএনপি জনগণের হাতে দেশের ক্ষমতা তুলে দেবে।

খালেদা জিয়া বলেন, মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিএনপি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করবে। কমিশন গঠন করে টেলিভিশন, প্রিন্ট ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমের জন্য নীতিমালা তৈরি করা হবে।

উল্লেখ্য: ২০০৬ সালে ক্ষমতা ছাড়ার পর দুই দফায় সরকারবিরোধী আন্দোলনে গিয়েও সাফল্য পায়নি খালেদার দল। দশম জাতীয় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি এখন সংসদের বাইরে।

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে পরাজয়ের দায় সরকারকে দিলেও বিভিন্ন সময়ে দলের সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে আক্ষেপ শোনা গেছে জ্যেষ্ঠ নেতাদের কথায়। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে প্রথম এই ‘ভিশন ২০৩০’ এর রূপরেখা দেন ১৯৯১-১৯৯৬ ও ২০০১-২০০৬ মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা খালেদা জিয়া।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাই

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G