জুবায়ের হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি
আদালত প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজী বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র জুবায়ের আহমেদ হত্যার দায়ে ৫ জনের ফাঁসি ও ছয়জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।
এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার ১৩ আসামির মধ্যে বাকি ২ জন বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
আজ রোববার জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এবিএম নিজামুল হক এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডিতরা সবাই ছাত্রলীগের কর্মী।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- প্রাণীবিজ্ঞান বিভাগের আশিকুল ইসলাম আশিক, খান মোহাম্মদ রইছ, জাহিদ হাসান, রাশেদুল ইসলাম রাজু, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের মাহবুব আকরাম।
যাবজ্জীবন সাজা হয়েছে দর্শন বিভাগের ইশতিয়াক মেহবুব অরূপ ও কামরুজ্জামান সোহাগ, ইতিহাস বিভাগের মাজহারুল ইসলাম ও পরিসংখ্যান বিভাগের শফিউল আলম সেতু ও অভিনন্দন কুণ্ড ওরফে অভি ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের নাজমুস সাকিব তপু। আর খালাস পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের ছাত্র নাজমুল হাসান প্লাবন ও ইতিহাসের মাহমুদুল হাসান।
এর আগে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রায় ঘোষণার কথা থাকলেও হরতালে আসামিদের আদালতে হাজির করতে না পারায় জুবায়ের হত্যা মামলায় রায় পিছিয়ে আজ ৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করা হয় ।
এর আগে গত ২৮ জানুয়ারি মামলাটির যুক্তিতর্কের শুনানির পর রায় ঘোষণার জন্য ৪ তারিখ ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল।
ওইদিন মামলাটির জামিনে থাকা ৭ আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার ৫ আসামি এখনো পলাতক। এরা হলেন, খন্দকার আশিকুল ইসলাম, খান মোহাম্মদ রইস, রাশেদুল ইসলাম রাজু, ইসতিয়াক মেহবুব অরূপ, মাহবুব আকরাম ও জাহিদ হাসান।
এর আগে ট্রাইব্যুনাল মামলাটির ৩৭ জন সাক্ষির মধ্যে ২৭ জন সাক্ষির সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। এদের মধ্যে নিহত জুবায়েরের ভাই আব্দুল্লাহ আল মামুন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রাণ-রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. এসএম বদিয়ার রহমান, প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মো. ফরহাদ হোসেন ও পদার্থের অধ্যাপক বর্তমান পিপলস ইউনির্ভাসিটির ভাইস চ্যান্সেলর ড. আব্দুল মান্নান চৌধুরী, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আরজু মিঞাও রয়েছেন।
গত ১০ ডিসেম্বর আত্মপক্ষ শুনানিতে ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ৭ জন আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি বিকেলে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদকে কুপিয়ে জখম করেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপর তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ওইদিন রাতেই রাজধানী ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভোরে মারা যান জুবায়ের।
জুবায়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হলের ছাত্র ছিলেন। তার বাড়ি পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়ায়।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন আশুলিয়া থানায় ১৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্ত করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মীর শাহীন শাহ পারভেজ ২০১২ সালের ৮ এপ্রিল ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন।
২০১৩ সালের ৮ সেপ্টেম্বর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল-৪।
প্রতিক্ষণ /এডি/ বাবর