জুড়ীর ফুলতলায় চমক দেখাতে পারেন মোস্তফা
সিলেট জুড়ী প্রতিনিধি
আগামী ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মৌলভীবাজার জেলার জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রার্থী ও সমর্থকরা নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে প্রচার প্রচারণায়। ইউনিয়নের সবত্র চায়ের কাপে ঝড় উঠেছে।
চেয়ারম্যান, মেম্বার ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের প্রার্থীরা প্রতীক পাওয়ার পর নির্বাচনী প্রচারনায় কোমর বেঁধে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ব্যস্ত সময় পার করছেন পথসভা ও গণসংযোগের মাধ্যমে। পোষ্টার ও ব্যানারে ছেয়ে গেছে ইউনিয়ন, ওয়ার্ড এবং গ্রাম।
এদিকে আগামী ২৯ ডিসেম্বর জেলা ও উপজেলার মধ্যে মাত্র একটি ইউনিয়নে নির্বাচন হওয়ায় সকলের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ ফুলতলার এ নির্বাচন। ফলে এ ইউনিয়নের বেশ কদর রয়েছে সর্বত্র। অত্র ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এরা হচ্ছে আওয়ামীলীগের মনোনীত মাসুক আহমদ (নৌকা), স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা মিয়া (আনারস) ও আওয়ামীলীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল আলিম সেলু (ঘোড়া)।
এ ইউনিয়নের নির্বাচনে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে আনারস নিয়ে নির্বাচন করা স্বতন্ত্র প্রার্থী মোস্তফা মিয়া এখন পর্যন্ত সব দিক দিয়ে এগিয়ে আছেন।
ইউনিয়নের ভোটারদের কাছে মোস্তফা মিয়া একজন ভালো মানুষ হিসেবে পরিচিত। আনারস প্রতীক নিয়ে ইতিমধ্যে তিনি প্রচার-প্রচারণায় সাড়া ফেলে দিয়েছেন। ইউনিয়নের সকল ওয়ার্ডেই আনারস প্রতীক ভোটারদের মন জয় করতে সচেষ্ট হয়েছে।
ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, এ ইউনিয়নে মোস্তফা মিয়ার বিশাল এক ভোট ব্যাংক রয়েছে। নিজস্ব ভোট ব্যাংকের পাশাপাশি চা-বাগান ও বস্তিসহ পুরো ইউনিয়নে আনারস প্রতীকের ভোট রয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা, সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আনারস প্রতীক নিয়ে ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন মোস্তফা মিয়া সহ তাঁর কর্মী সমর্থকরা।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা মিয়া (আনারস) বলেন, আগামী ২৯ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে ইউপি নির্বাচন। এই নির্বাচনে আমি আনারস প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ইনশাআল্লাহ ইউনিয়নবাসী আমাকে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। আর আমি নির্বাচিত হলে এ ইউনিয়নকে পুরো জেলার মধ্যে একটি মডেল ইউনিয়ন হিসেবে গড়তে জনগনকে সাথে নিয়ে কাজ করব। আমার স্বপ্ন রয়েছে, বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে সীমান্তবর্তী ও চা-বাগান অধ্যুষিত এই ইউনিয়নটি নিয়ে। যেখানে কাঙ্ক্ষিত কোনো উন্নয়নই হয়নি। উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের সঙ্গে তুলনা করলে আমাদের ফুলতলা ইউনিয়ন অনেক পিছিয়ে রয়েছে। অনুন্নত এ অঞ্চলের রাস্তাঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, সাঁকো ইত্যাদি অনেক কিছুরই অভাব রয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার পর এসব সমস্যার সমাধান অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হবে। তাই ইউনিয়নবাসীর নিকট আমার প্রত্যাশা দলমত নির্বিশেষে আমাকে আনারস প্রতীকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
ফুলতলা ইউনিয়নের অনেক দূরদর্শার চিত্র তুলে ধরে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা মিয়া আরো বলেন, ফুলতলা ইউনিয়নবাসী সরকারী পরিসেবা নিতে এসে নানারকম হয়রানীর শিকার হন। তিনি নির্বাচিত হলে এসব হয়রানী বন্ধসহ স্বল্প সময়ে জন্ম-নিবন্ধন সনদ প্রদান করবেন। ফুলতলা ইউনিয়নের বিচার ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। নির্বাচিত হলে তিনি সব এলাকার মুরব্বিদের নিয়ে সামাজিক বিচার ব্যবস্থা গড়ে তুলবেন। তাছাড়া রাস্তা-ঘাট নির্মাণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া ও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। সরকারের বরাদ্দকৃত অনুদান জনগণের মাঝে শতভাগ বন্টণ করবেন।
তাছাড়া চা শ্রমিকদের গবাদিপশু চুরি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণসহ মাদক নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন। এছাড়াও তার মাসিক বেতন ভাতার অর্থ তিনি দু’ভাগে বিভক্ত করে এর ১ ভাগ চা শ্রমিকদের কল্যাণে আর ১ ভাগ বস্তির অসহায় মানুষদের কল্যাণে ব্যয় করবেন। তার প্রবাসী ছেলেদের অর্থায়নে তিনি একটি দারিদ্র বিমোচনে ত্রাণ তহবিল গঠন করে ফুলতলা ইউনিয়নের গরিব-দুঃখী অসহায় মানুষের সেবা করতে চান এই প্রবীণ জননেতা। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী তিনি।