ট্রেন্ডি হেয়ার স্টাইল ফর ম্যান
বাহারি সব ট্রেন্ডি ফ্যাশনেবল পোশাক,চুলের এক্সপেরিমেন্টাল কাটছাঁট, নিত্যনতুন হেয়ার স্টাইল কি শুধুই নারীদের জন্যে? না ফ্যাশন শুধুমাত্র নারীদের মধ্যেই আবদ্ধ না পুরুষরা ও নারীদের থেকে কম এগিয়ে না পুরুষরা ফ্যাশন সচেতন অনেক আগে থেকেই ।
চুলের স্টাইল নিয়ে এ যুগের ছেলেরা অনেক বেশি ঔৎসুক্ । বড় চুল হলে তো কথাই নেই। এর ঝক্কিটাও বেশি। চুলের স্টাইল অনেকটা নির্ভর করে মুখের গড়নের ওপর।সব ধরনের হেয়ারস্টাইলে সবাইকে মানায় না। মুখমন্ডল, শরীরের গড়ন, পেশা- এগুলোর সঙ্গে মানানসই হতে হয়।
অরণ্যচারী মুনিঋষিদের মাথার উপরে যে বান শোভা পেত, আজও তা আছে, তবে রকমফের বেড়েছে। স্টাইলিংয়ে সেসবের কদর বিশ্বজুড়ে আবার সব সময় এক রকম চুলের স্টাইলও ভালো লাগে না। লুকে একঘেয়েমি কাটাতে বড় চুলে ‘বান’ বা ঝুঁটি করা যেতে পারে। ছেলেদের বান একটু ভিন্ন ধরনের হয়।
চুলে ঝুঁটি বাঁধার এই স্টাইল হিপ্পিদের কাছ থেকে এলেও, ফুটবল তারকা ডেভিড বেকহামের মাধ্যমে বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে বেশ কয়েক বছর আগে।
যার জোয়ার চলছে এখনো। কিন্তু ছেলেদের করতে হয় মাথার মাঝে। ম্যান বান করার মতো চুল বড় হতে মোটামুটি ৮ থেকে ১২ মাস সময় লাগে। হেয়ার এক্সপার্টদের মতে, ম্যান বান এমন একটি স্টাইল, যা কিনা যেকোনো মুখের গড়নের সঙ্গেই মানানসই। তাই বিশ্বজুড়ে এই স্টাইল তরুণদের মাঝে বিশেষভাবে সমাদৃত।
ম্যান বান
এই বানকে ‘ব্র বান’ বা ‘হিপস্টার বান’ বলা হয়। এই হেয়ারস্টাইলে মাথার সব চুল একত্র করে একটু উঁচু করে মাথার ঠিক মাঝে এক জায়গায় গোল করে খোঁপার মতো বাঁধা হয়। তবে ঝুঁটি অবশ্যই একদম ছোট হতে হবে। এই হিপস্টার বানের সঙ্গে হিপস্টার গোঁফ বা এলোমেলো দাড়ি বেশ মানানসই।
সেমি বান
‘সেমি বান’ বা ‘টপ নট’ নামে পরিচিত এই বান করা হয় মাথার উপরের দিকের চুলগুলো দিয়ে। অর্থাৎ মাথার উপরের সব চুল মিলিয়ে একটি বান করা হয় মাথার মাঝখানে, অনেকটা ‘ম্যান বান-এর মতোই। এটি করতে হলে চুলের কাট এমন হওয়া দরকার যে কেবল উপরের অংশেই চুল থাকবে, আর পুরো মাথা চুলহীন।
হাফ বান
এটি ‘সেমি বান’ গোছের কিছু মনে হলেও আদতে তা নয়। ম্যান বান অথবা সেমি বানের মতো করেই একটি বান বাঁধা হয় কিন্তু সেটিকে চুলের ব্যান্ডের অর্ধেক পর্যন্ত বেঁধে ছেড়ে দিলে এটি তৈরি হয়ে যায়। এতে বেশ অনেকখানি চুল হেয়ার ব্যান্ডের বাইরে থাকবে। তার মানে, বানের বাইরেও আরেকটা বানের মতো হতে পারে।
কার্লি ম্যান বান
কোঁকড়া চুলের জন্য। এর বিশেষত্ব হচ্ছে, বানটি বাঁধার আগে চাইলে চুল কার্লার দিয়ে আরেকটু কোঁকড়া করে নেয়া যায়। এমন চুলে বান বাঁধার মজা হচ্ছে, এটি দেখতে বেশ ‘মজবুত’ লাগে!
হেয়ার বানের জন্য দরকারি পণ্য
ইলাস্টিক ব্যান্ড– বান শক্তভাবে বাঁধার জন্য
হেড ব্যান্ড– বানের ভেতর থেকে যে চুল অনিচ্ছাকৃতভাবে বেরিয়ে গেছে, সেগুলো এক জায়গায় করে রাখতে
কন্ডিশনার- শ্যাম্পুর পর কন্ডিশনার লাগালে চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দেখায়, বান বাঁধলেও ভালো দেখায়
হেয়ারস্টাইলিং ক্রিম- যেকোনো বানের স্থায়িত্ব বাড়ানোর জন্য
বড় চুলের যত্নে
লম্বা চুল যাতে গরমে যন্ত্রণার কারণ না হয়, সে জন্য নিয়মিত যত্ন নেয়া জরুরি। নিয়মিত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে পরিষ্কার রাখা উচিত। যারা অফিসে কাজ করেন তারা লেজার, স্টেপ, স্কয়ার লেজার করে কাটতে পারেন।
যাতে প্রয়োজনে চুল বেঁধে রাখা যায়। মাঝেমধ্যে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করা যেতে পারে। হালকা গরম তেল চুলে লাগিয়ে তোয়ালে পেঁচিয়ে রেখে মাথা ধুয়ে নিলে উপকার পাওয়া যাবে।
বয়স, পেশা, সামাজিক অবস্থান, চুলের বৈশিষ্ট্য, গায়ের রঙ, ফিজিক্যাল স্ট্রাকচার, চাকরির ধরন, লাইফস্টাইল- সবকিছুর ওপর ভিত্তি করেই হেয়ারস্টাইল নির্বাচন করতে হয়।
তবে স্টাইল যা-ই হোক না কেন, চুলের যত্ন নিতেই হবে। নিয়মিত তেল শ্যাম্পু না করলে চুলে ময়লা জমে।
হেয়ার প্যাক তৈরি করে লাগাতে পারেন। ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে অল্প পরিমাণে মধু আর জলপাই তেল মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে চুলে মেখে নিন। ২০ মিনিট পর চুল ধুয়ে ফেলুন।
চুলে যে স্টাইলই করুন না কেন, খেয়াল রাখতে হবে নিজেকে যেন মানানসই লাগে। চেহারা ও ব্যক্তিত্বে নতুন লুক দিতে বিভিন্ন ধরনের হেয়ার কাট নেয়া যেতে পারে।
প্রতিক্ষণ/এডি/তাজিন