ডায়নোসরের বিলুপ্তির কারণ
আজ থেকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বছর আগে পৃথিবীতে রাজত্ব করতো ডায়নোসর নামক অতিকায় বিশাল আকৃতির দানব প্রাণী। ওই সময়টা ডায়নোসর পৃথিবীতে দিব্যি ঘুরে বেড়াতো। হঠাৎ কী এমন হল ধ্বংস হয়ে গেল ডায়নোসর এর রাজত্ব?
নাসার ল্যাবরেটরির বিজ্ঞানীগণ গত ২৮ শে জুলাই ১৯৯৮ এ কিছু আলোকচিত্র (মহাশুন্য থেকে তোলা পৃথিবীর এক্সরে) প্রকাশ করেছেন। এই আলোকচিত্রে রয়েছে একটি মৃত আগ্নেয়গিরির মুখ। ডায়নোসরদের অবলুপ্তির সাথে এ মুখের সম্পর্ক থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীদের ধারণা।
বিজ্ঞানীদের মতে, আজ থেকে প্রায় ৬ কোটি ৫০ লক্ষ বছর আগে একটি গ্রহাণু বা ধুমকেতুর পৃথিবীপৃষ্ঠে পতনের ফলে এ আগ্নেয়গিরির মুখটি বন্ধ হয়ে যায়। বিজ্ঞানীদের ধারণা ঐ গ্রহাণু বা ধুমকেতুর পতনের ফলে পৃথিবীর আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন হয়। তাৎক্ষনিক বিস্ফোরণে এবং ধূলিমেঘে সারা আকাশ ঢেকে যায়। এ ধূলি পৃথিবী পৃষ্ঠে পড়তে লেগে যায় বেশ কিছু বছর। এর মধ্যে সূর্য রশ্নি পৃথিবীপৃষ্ঠে পড়তে পারেনি ফলে বিলুপ্ত হয় ডায়নোসর সহ যাবতীয় প্রাণীকুল।
১৯৯৪ সালের জুলাই মাসের শেষের দিকে গুমেকার লেভি-৯ ধূমকেতুর সাথে বৃহস্পতি সংঘর্ষের ফলে পৃথিবীর আবহাওয়া পরিবর্তনের আরো একটি সম্ভাবনাময় দিকেও দৃষ্টি আকৃষ্ট হয়েছে। রাডার প্রজেক্টের পরিচালিকা ড. ডায়না ইভানস বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে গ্রহাণু বা ধুমকেতুর পতনের এলাকায় আকার সম্পর্কে ধারণা করা। আর সেটা সম্ভব হলে বোঝা যাবে ঐ পতনের ফলে আবহাওয়া কতটুকু পরিবর্তন হয়েছিল।
ইভারসের মতে আলোকচিত্রে পানির ঝরনা এবং প্রাকৃতিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। আর এ সবটাই হয়েছে গ্রহাণুপুঞ্জ বা ধুমকেতুর পতনের ফলে। এলাকাটির অধিকাংশ স্থানই মাটিতে ঢাকা রয়েছে।
১৯৯২ সালে ওমানের উঘব শহর এলাকাটি আবিষ্কৃত হয়। মুরুভুমির প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত এ দুর্গম নগরীটিতে দূর-দূরান্তের ব্যাবসায়ীদের আগমন ঘটত। খ্রিস্টপূর্ব ২৮০০ সাল থেকে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ সাল পর্যন্ত সময়কালে শহরটি ধূলি ঝড়ে চাপা পড়ে।
তো যে কথা বলছিলাম, মূলত ধারনা করা হয় গ্রহাণু বা ধূমকেতুর পতনের ফলেই পৃথিবী থেকে ডায়নোসরদের অবলুপ্তি ঘটেছিলো। রিচার্ড ও তার সহকর্মীরা তাদের রিপোর্টটি শুক্রবার ‘জিওলজিক্যাল স্যোসাইটি অব আমেরিকান বুলেটিন’-এ প্রকাশ করেছেন।