ডায়াবেটিস নিয়ে ভুল ধারণা

প্রকাশঃ জানুয়ারি ৮, ২০১৬ সময়ঃ ১২:৫২ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

dbtবর্তমানে ডায়াবেটিস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে এটা সম্পর্কে সচেতনতা খুব কম এবং অনেক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে। আজ আমরা ডায়াবেটিস নিয়ে প্রচলিত ভুল ধারণা এবং এগুলোর সঠিক তথ্য সম্পর্কে জানবো।

বেশি চিনি খেলে ডায়াবেটিস হয়  

বেশি চিনি খেলে ডায়াবেটিস হয় না। টাইপ ১ ও টাইপ ২ নামে প্রধান দুই ধরণের ডায়াবেটিস হয়। যখন অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ করে দেয় তখন টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়। এনার্জির জন্য চিনিকে শরীরের উপযোগী করার জন্য ইনসুলিন কাজ করে। টাইপ ১ ডায়াবেটিস হওয়ার সঠিক কারণ জানা যায়নি। গবেষকদের মতে, পরিবেশগত কারণ, ভাইরাস বা জেনেটিক কারণে টাইপ ১ ডায়াবেটিস হতে পারে। তাই বেশি মিষ্টি খেলে ডায়াবেটিস হয় কথাটি সঠিক নয়।

টাইপ ২ ডায়াবেটিস হয় যখন শরীর পর্যাপ্ত ইনসুলিন উৎপন্ন করতে পারেনা অথবা শরীর যদি ইনসুলিন সঠিকভাবে ব্যবহার করতে না পারে তাহলে। ৪০ বছরের বেশি বয়সের মানুষের, অতিরিক্ত ওজন যাদের, পরিবারের কারো ডায়াবেটিস থাকলে এই প্রকার ডায়াবেটিস হয়। এছাড়াও কম বয়সী মানুষদেরও সমস্যাটি হয়।

ডায়াবেটিস হলে মিষ্টি খাওয়া যায় না  

ডায়াবেটিস হলে একেবারেই মিষ্টি খাওয়া যাবে না তা ঠিক নয়। ডায়াবেটিস হলেও মিষ্টি খাওয়া যায় তবে সংযমের সাথে খেতে হবে এবং নিয়মিত খাওয়া যাবে না। নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম এবং পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে সব খাবারই খাওয়া যায়।  

সব ধরণের ডায়াবেটিস একই রকম

বিভিন্ন রকমের ডায়াবেটিস আছে, প্রধান হচ্ছে- টাইপ ১ ও টাইপ ২ এবং গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস। প্রতিটা ধরনেরই আলাদা কারণ এবং নিয়ন্ত্রণের আলাদা পদ্ধতি আছে। যদি কারো ডায়াবেটিস হয়ে যায় তাহলে তাকে নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রতিদিনই তাকে সচেষ্ট থাকতে হবে। সব ধরণের ডায়াবেটিসই জটিল ও গুরুতর। শুধুমাত্র গর্ভাবস্থার ডায়াবেটিস বাচ্চার জন্মের পরেই ভালো হয়ে যায়।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায়

সকল ধরণের ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা যায় না। টাইপ ১ ডায়াবেটিস অটোইমিউন অবস্থা এবং এর সঠিক কারণ নির্ণয় করা যায়নি বিধায় এর কোন প্রতিকার বা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেই।

টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে ৫৮% প্রতিরোধ বা বিলম্বিত করা যায় এক্সারসাইজ ও স্বাস্থ্যকর খাওয়ার মাধ্যমে। বিভিন্ন কারণে টাইপ ২ ডায়াবেটিস হতে পারে। যদি বংশগত কারণে হয়ে থাকে তাহলে এটা পরিবর্তনের কোন উপায় নেই।

ইনসুলিন ডায়াবেটিস নিরাময় করে

ইনসুলিন নিলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় কিন্তু আরোগ্য লাভ হয়না। ইনসুলিন রক্ত প্রবাহ থেকে গ্লুকোজ বাহির করে কোষে নিয়ে যায় যেখানে এটা ভেঙ্গে এনার্জি বা শক্তি উৎপন্ন হয়। তাই ইনসুলিন নিলে রক্তের সুগার লেভেল নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় কিন্তু ডায়াবেটিসের অন্তর্নিহিত কারণ সংশোধন করা যায়না।

প্রচলিত এসব ভুল ধারণায় বিশ্বাস না করে ডায়াবেটিস হতে পারে সন্দেহ হওয়া মাত্র চিকিৎসকের পরামর্শে পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে নিন। যদি ডায়াবেটিস ধরা পড়ে তাহলে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন প্রণালীর পরিবর্তন, নিয়মিত ঔষধ গ্রহণ এবং নিয়মিত পর্যবেক্ষণের মধ্যে থেকে সুস্থ থাকার চেষ্টা করুন।

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G