তারুণ্যের ক্যাজুয়াল ঈদ
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
আর মাত্র কদিন। তারপরই আনন্দ ও সৌহার্দ্যের বার্তা নিয়ে আসবে ঈদ-উল-ফিতর। ঈদ মানেই পরিবার, বন্ধু-বান্ধব মিলেমিশে একটি দিন বিশেষভাবে উদযাপন করা। আর সেই উদযাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ পোশাক। ঈদের দিন নতুন পোশাকে, ব্যতিক্রমী পোশাকে সবাই নিজেকে সাজাতে চায়। বিশেষ করে, তরুদের এই ব্যাপারে উৎসাহের কমতি নেই।
কী হবে এবারের ঈদ ফ্যাশন? সাধারণত ঈদকে ধরে নেওয়া হয় সবচেয়ে জমকালো, সবচেয়ে দামী, সবচেয়ে রাজকীয় পোশাক পড়ার উপলক্ষ্য হিসেবে। কারুকাজ করা সালোয়ার-কামিজ কিংবা সিল্কের পাঞ্জাবী – এ সব কিছুই তুলে রাখা হয় ঈদের জন্য।
কিন্তু এখন সময়টাই আরামদায়ক, ক্যাজুয়াল পোশাকের। তাই আজকাল অনেক তরুণ ঈদের দিনের পোশাক নিয়েও একটু ব্যতিক্রমী চিন্তা-ভাবনা করছেন। আর যেহেতু এবার ঈদের দিনটি গ্রীষ্মের দিন। তাই অন্তত সন্ধ্যার আগ পর্যন্ত ক্যাজুয়াল পোশাকই হতে পারে তরুণদের সবচেয়ে বেশি পছন্দের।
তরুণীরা ঈদের জন্য বেছে নিতে পারেন ঢিলেঢালা ফতুয়া বা কামিজ। বেশ কয়েক বছর ধরে শর্ট কামিজের চল একেবারেই হারিয়ে গেলেও এখন লং কামিজের সঙ্গে শর্ট কামিজও চলছে।
এবার পরিবেশের সাথে সবচেয়ে মানানসই হবে হালকা কাজ করা সুতির কামিজ বা ফতুয়া। লিনেন কাপড় বা সুতি-লিনেন মিক্সড করা কাপড়ও চলবে। ঈদ গরমের মধ্যে হওয়ায় খুব উজ্জ্বল রঙের পোশাক নির্বাচন না করাই ভালো। ভালো হয় হালকা আকাশি, সাদা, গোলাপী প্রভৃতি রঙের পোশাক নির্বাচন করলে। তবে গাঢ় রঙ নির্বাচন করা যেতে পারে।
এবার মেয়েদের টপসের হাতার ফ্যাশনে চলবে ঢোলা, কার্ভ স্লিভ ও বেল স্লিভ। ডিজাইনের ট্রেন্ড বিষয়ে বলতে হয়, মেয়েদের ফতুয়া, শর্ট কামিজ ও টরসোর মতো পোশাকগুলোর উপর যদি ফ্লোরাল প্রিন্ট থাকে তবে তা হবে দারুণ ফ্যাশনেবল। ফ্লোরাল মোটিফ পোশাকে ভিন্ন শৈলী যোগ করে। তবে এই টেক্সচার সাধারণত সিম্পল কাটের প্যাটার্নেই ভালো মানায়। তবে যেহেতু এবার ঈদটাই হবে ক্যাজুয়াল তাই নিশ্চিন্তে ঈদের পোশাক হিসেবে বাছাই করতে পারেন ফ্লোরাল মোটিফসহ সিম্পল কাটের কোন ফতুয়া, কুর্তি বা কামিজ।
শর্ট বা সেমি শর্ট টপসের সঙ্গে পড়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী হচ্ছে চাপা প্যান্ট। এজন্য জেগিংস, লেগিংস, গ্যাবার্ডিন, টাইস কিংবা ডেনিম যে কোন কিছু বাছাই করতে পারেন আপনি। ডেনিমে রঙের তেমন বৈচিত্র্য না থাকলেও জেগিংস, লেগিংস বা টাইস পাবেন হরেক রকম রঙে। আপনি যখন টপসের সঙ্গে প্যান্ট বাছাই করবেন তখন সেটা আপনি আপনার রুচি অনুযায়ী ম্যাচিং করেও করতে পারেন অথবা কনট্রাস্ট কালারেরও বাছাই করতে পারেন। তবে হালকা রঙের টপস পড়লে কিছুটা গাঢ় রঙের প্যান্ট বাছাই করাই ভালো।
ক্যাজুয়াল পোশাকের সাথে তরুণীরা জুতা হিসেবে বাছাই করতে পারেন নর্মাল স্যান্ডেল বা স্লিপার।
আর ছেলেদের ঈদ ফ্যাশনে সবচেয়ে মানানসই হবে টি-শার্ট। সবচেয়ে ভালো হয় পোলো টি-শার্ট নির্বাচন করলে। পোলো টি শার্টের কাপড় খুবই মসৃন ও পাতলা। গ্রীষ্মের জন্য একরঙা পোলো টি-শার্ট খুবই ট্রেন্ডি ও ক্লাসিক। পোলোর বোতামগুলো পোলোর ফ্যাশনে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। যদি বড় ও টি-শার্টের বিপরীত রঙের বোতামসমৃদ্ধ টি শার্ট নির্বাচন করেন তবে তা হাল ফ্যাশনে ভালো মানিয়ে যাবে।
টি-শার্টের সঙ্গে পড়ার জন্য নির্বাচন করতে পারেন চিরাচরিত জিন্স। তবে গরমে চিনোস প্যান্ট আপনাকে জিন্সের চেয়ে বেশি স্বস্তি দেবে। আর চিনোসের সঙ্গে আপনি যদি টি-শার্ট ইন করে পড়েন তবে তা আপনার লুকে একটি সেমি ফর্মাল ভাবও এনে দেবে।
টি-শার্ট ও চিনোসের সঙ্গে পড়ার জন্য জুতা হিসেবে লোফার সবচেয়ে উপযুক্ত হবে। তরুণরাও পোশাকের জন্য হালকা ও গাঢ় – উভয় ধরণের রঙই বাছাই করতে পারেন। তবে উজ্জ্বল রঙ এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।
আবার অনেক আছেন, পাঞ্জাবি ছাড়া ঈদ পালন করতে চান না। তারা সুতির একরঙা বা স্ট্রাইপড শর্ট পাঞ্জাবির সাথে ডেনিম ও স্লিপার পড়তে পারেন। এতে পাঞ্জাবিও পড়া হবে এবং ইন ফর্মাল লুকও আসবে।
তাহলে চলুন জমকালো পোশাকটি ঈদ সন্ধ্যার ফর্মাল কোন পার্টির জন্য তুলে রেখে ঈদের দিনটি কাটিয়ে দেই ক্যাজুয়াল পোশাকে!
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া