তু বাঁচ গায়া, ম্যায় নেহি বাঁচ সাকা
“স্লাম ডগ মিলেনিয়াম ” ছবির সেই অন্ধ ছেলেটার কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে ? সেই ছেলেটা যে খুব সুন্দর গান গাইতো। জামাল সহ আরো কিছু ছোট ছোট শিশুদের সঙ্গে তাকেও ছেলেধরারা ধরে নিয়ে গিয়েছিলো। অনেকদিন পর জামালের সঙ্গে যখন একটা আন্ডারপাসে অন্ধ ছেলেটার দেখা হয়, দুজন দুজনকে চিনতে পারে। জামাল ছেলেধরাদের হাত থেকে পালিয়ে বাঁচলেও, অন্ধ ছেলেটা রক্ষা পায়নি। ছেলেধরারা তার চোখদুটো নষ্ট করে তাকে ভিক্ষে করতে পাঠায় বাইরে। অন্যদিকে জামাল দিব্যি এদিক-ওদিক কাজ করে জীবীকা চালিয়ে যায়। তাই অনেকদিন পর যখন জামালের সঙ্গে অন্ধ ছেলেটার দেখা হয়, সে তখন জামালকে বলে, “ তু বাঁচ গায়া, ম্যায় নেহি বাঁচ সাকা”।
বেশ কয়েক বছর ধরে প্রশ্নপত্র ফাঁসের যেন এক মহাউৎসব শুরু হয়েছে এই দেশে । এস.এস.সি., এইচ.এস.সি. থেকে শুরু করে বি.সি.এস পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসও বাদ যাচ্ছেনা । যেহেতু শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড, কাজেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্যে দিয়ে সেই মেরুদন্ড ভেঙ্গে ফেলার সব ধরণের আয়োজন যেন করা হচ্ছে। অধুনা এর সঙ্গে যুক্ত হলো মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস। তার মানে এবার মানুষের জীবন মরণ নিয়ে খেলা শুরু হলো। সব থেকে ব্রিলিয়েন্ট ছাত্র-ছাত্রীরা মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয় শুধু ডাক্তার হবার জন্যে নয়। একজন ডাক্তার হয়ে ওঠার সঙ্গে মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্নও অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত থাকে। কাজেই প্রশ্নপত্র ফাঁসের মধ্যে দিয়ে যারা ডাক্তার হবে, তারা কোন্ শ্রেণীর ডাক্তার হয়ে উঠবে তা না বললেও চলে।
আমাদের বেদনা সেই “ তু বাঁচ গায়া” তে। ইতিমধ্যে যারা ডাক্তার হয়ে গেছে, তারাও যেমন বেঁচেছে, রুগীরাও কম-বেশি বেঁচে গেছে। কিন্তু ভবিষ্যত ডাক্তাররা “ ম্যায় নেহি বাঁচ সাকা” র মতো, নিজেরাও যেমন বাঁচবেনা, অপরকেও বাঁচাতে সক্ষম হবেনা।
ফ্লোরা সরকার
লেখিকা
ই মেইল[email protected]
এই লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজের। এখানে প্রতিক্ষণ ডট কমের কোন নিজস্ব বক্তব্য নেই