তেরো দিনে বিশ্বের সপ্তাশ্চর্য ভ্রমণ
তিনবার চোখের সামনে মৃত্যুর দৃশ্য দেখেছেন তিনি।এতে থেমে যেতে পারতেন। কিন্ত ৩১ বছর বয়সী মেগান সুলিভানের ক্ষেত্রে উল্টোটাই ঘটেছে।দু:সাহসিক অভিযান নিয়ে তিনি আবার নেমে পড়েন।তার দু:স্বপ্নের মাস ফিরে আসে ২০১৪ সালের নভেম্ভরে।শিলা আরোহনের সময় ৫০ ফুট উপর থেকে পড়ে যাওয়ার কথা মনে হলে এখনও অবাক লাগে। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। এর কিছুদিন পরে নিজের স্কুটারটি চালানোর সময় গাড়ির ধাক্কায় অল্পের জন্য বেঁচে যান। এখানেই শেষ হয়ে যায়নি। নিয়মিত শরীর পরীক্ষার সময় তার স্কিন ক্যান্সার ধরা পড়ে।কয়েক সপ্তাহ তার নরক যন্ত্রণার কথা স্মরণ করে তিনি জানান, ক্যালিফোর্নিয়ার ইয়োসেমাইট ভ্যালিতে তার দিনগুলোর কথা । যেখানে তিনি তিন বছর আরোহনের জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহন করেন।তিনি জানান, ‘আমি দুহাজার ফুট উপরে উঠি কিন্ত পঞ্চাশ ফুট থেকে পড়ে যাওয়ার আতঙ্ক আমার মধ্যে ছিল। তখন আমার নিজেকে প্রশ্ন শুরু করি, এই ভীতিকর অবস্থায় উচ্চবিলাসী আরোহনের মাঝে আমি কি খুঁজতে চাই?’ কেন আমি পৃথিবীর কাছে গুরুত্বের সাথে নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম?নিজেকে প্রশ্ন করেন তিনি।তিনি জানান, দূর্যোগ আক্রান্ত সিনেমার মতো এক সপ্তাহ পরে তিনি আবার বাস দূর্ঘটনার শিকার হন। এরপর তিনি স্কীন ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।তিন সপ্তাহের মধ্যে দূর্ভাগ্যের কবল থেকে ফিরে আসেন।মেগানের মন ছিল সব সময় কৌতূহলী।তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতার পর পরিবারের সদস্য ও বন্ধুরা তাকে যেকোনো কিছু সহজভাবে নিতে বলেন।কিন্ত তিনি আরো দুঃসাহসী হয়ে ওঠেন।এর দু সপ্তাহ পরে তার জীবনে নতুন লক্ষ্য আছে। এখন থেকে নতুন করে বেঁচে থাকা চাই। তাই সিদ্ধান্ত নিলেন, তেরো দিনে বিশ্বের সপ্তাচর্য পরিভ্রমণ করবেন। এই কয়েকদিন তিনি কাজের বাইরে থাকতে পারবেন। আমি চার বছর ধরে সঞ্চয় করে আসছি।আমি সবকিছু আমার ফ্লাটে নিয়ে আসতাম যা আমি এক বছরে ব্যবহার করতাম না।পরে সেগুলো বাইরে বিক্রি করে দিতাম।‘প্রতিটি গন্তব্যে আমি দু রাত কাটাতাম যার অধিকাংশই প্লেনে ঘুমের মধ্যে কেটে যেত। চীনের গ্রেট ওয়ালের কাছে আমার প্রত্যাশা কম থাকলেও আমি সেখানে সেরা অভিজ্ঞতা অর্জন করি।বেইজিং আমার পছন্দের একটি জায়গা।মাচুপিচুতে আমার মন আন্দোলিত হয়েছে খুব।কিন্ত আমি মেক্সিকোতে সাত ঘন্টা ছিলাম তাই চিচেন ইতজা মন্দিরে অল্প কিছু সময় ছিলাম।’আমার জীবনের সনচেয়ে খারাপ মাস কেটে যাওয়ার পর আমি ভাবলাম কীভাবে আমি জীবনযাপন করছি। আমার এই উপলব্ধি হয়েছে যে, জীবনে যা কিছু চেয়েছি তা থেকে একটি জিনিসই আমাকে দূরে রেখেছে, সেটি হচ্ছে আমি নিজে। আমি সব সময় বলতাম সময় কিংবা অর্থ নেই। কিন্ত এখানে অজুহাতই সবচেয়ে বড় কারণ বলে জানান তিনি।আমি মূলত আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় পেতাম।আমার গন্তব্য অনিশ্চিত এটি চিন্তা করা বন্ধ করে কীভাবে প্রতিটি দিন বেঁচে থাকবো এবং সেই সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আমার আছে এটি চিন্তা করার প্রয়োজন ছিল। আমার জীবনের বড় আক্ষেপ হচ্ছে মিস হয়ে যাওয়া সুযোগ নিয়ে। ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে সেই সুযোগটি ছিনিয়ে এনেছি এবং এটি করেও দেখিয়েছি।প্রতিক্ষণ/এডি/জেডআর
|