তৈরি হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ

প্রকাশঃ জুন ২৪, ২০১৫ সময়ঃ ৮:১৬ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৪১ পূর্বাহ্ণ

প্ত্রতিক্ষণ ডেস্ক

gmt 2অজানাকে জানার ব্যাপারে মানুষের আগ্রহের কোনো কমতি নেই। মহাবিশ্বের রহস্যের সমাধান করতে মানুষ সাহায্য নিয়েছে প্রযুক্তির, তৈরি করেছে দূরবীক্ষণ যন্ত্র। তবে প্রশ্নের উত্তর যতটা না মিলেছে, তার চেয়ে বেড়েছে নতুন প্রশ্নের সংখ্যা। এমন অনেক হিসাব-নিকাশ মেটাতেই তৈরি হতে যাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ, যার নাম জায়ান্ট ম্যাগিলান টেলিস্কোপ (জিএমটি)। সিএনএন জানিয়েছে এ খবর।

লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির লাস কাম্পানাস পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে বসানো হবে এই সুবিশাল টেলিস্কোপ। জিএমটিতে থাকছে সাতটি দর্পণ, যার প্রতিফলক পৃষ্ঠের আকার হবে প্রায় ২৫ মিটার। শুধু আকার-আয়তনের দিক থেকে নয়, এই টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশ দেখা যাবে অনেক বেশি নিখুঁত ভাবে। মানের দিক থেকে হাবল টেলিস্কোপের তোলা ছবির চেয়ে ১০ গুণ এগিয়ে জিএমটি।

আতাকামা মরুভূমির মধ্যে প্রায় ২২ তলার সমান উঁচু গম্বুজ আকৃতির এক স্থাপনায় নির্মিত হবে প্রকাণ্ড এই টেলিস্কোপ। আর এটি জনবিচ্ছিন্ন ধু ধু মরুভূমির আকাশ-মহাকাশের নিখুঁত সব ছবি তুলতে পারবে। মানবসৃষ্ট আলো গবেষণায় কোনো বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। বিশাল এই কর্মযজ্ঞে খরচ হচ্ছে প্রায় ১০০ কোটি ডলার। আর এই প্রজেক্টের অর্থায়নে আছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের প্রায় ১১টি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান। আশা করা হচ্ছে, ২০২১ সালে আলোর মুখ দেখবে মানব ইতিহাসের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় টেলিস্কোপ জিএমটি।

জায়ান্ট ম্যাগিলান টেলিস্কোপ অর্গানাইজেশনের (জিএমটিও) চেয়ারম্যান ও শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিদ্যা ও জ্যোতির্পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক উইন্ডি ফ্রিডম্যান জিএমটি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত।

তিনি বলেন, ‘জিএমটি জ্যোতির্বিদ্যার এক নতুন যুগের সূচনা করতে যাচ্ছে। ডার্ক ম্যাটার ও ডার্ক এনার্জির রহস্য উদঘাটন কিংবা নিকটবর্তী কোনো নক্ষত্রে বসবাসযোগ্য গ্রহের সন্ধান করবে এটি।’

জিএমটি নিয়ে বেশ আশাবাদী যুক্তরাজ্যের রয়্যাল অ্যাস্ট্রোনমি সোসাইটির ডেপুটি এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি রবার্ট ম্যাসি। তার মতে, ‘আমি নিশ্চিত, আগামী কয়েক দশকে এই দৈত্যাকৃতির সব টেলিস্কোপ আমাদের অনেক বড় প্রশ্নের জবাব দেবে। যেমন—আমাদের পৃথিবী এই মহাবিশ্বে আর দশটি গ্রহের মতোই অথবা বিগ ব্যাং-এর ঠিক পরমুহূর্তে জন্ম নেওয়া নক্ষত্রটি কেমন ছিল!’

‘ডার্ক ম্যাটার’ ও ‘ডার্ক এনার্জি’ নিয়ে বিজ্ঞানীদের ভাবনার শেষ নেই। অনেক হিসাবের গোলমাল করে বিজ্ঞানীদের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে এই রহস্যময় মহাজাতিক শক্তি। এবার সে রহস্যের অনেকখানি সমাধান হবে বলেই আশা করছেন সবাই। একই সঙ্গে এক হাজার ৩০০ কোটি (১৩ দশমিক ৮ বিলিয়ন) বছর আগে সংগঠিত হয়ে যাওয়া বিগ ব্যাং থেকে নিঃসৃত আলোকতরঙ্গ ধরা পড়বে এই দৈত্যাকৃতির টেলিস্কোপে। মহাবিশ্ব সৃষ্টির অনেক অজানা তথ্য হয়তো প্রকাশ পাবে জিএমটির কল্যাণে।

প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G