নিজ দেশের রত্নদের চেনেন তো?
তাজিন আকতার
১. ‘পাইরেটস অফ দা ক্যারিবিয়ান’ সিনেমা দেখেননি এমন কেউ কি আছেন? আচ্ছা কুং ফু পান্ডা, ‘ম্যাডাগ্যাস্কা ’ তো দেখছেন? চরম মজার ‘ম্যাগামাইন্ড’ তো অবশ্যই দেখার কথা। এ ধরণের আরো অনেক সিনেমায় বিশাল বড় রোল প্লে করেছেন একজন বাংলাদেশী। শুধু কাজই করেননি,তিনি প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে অস্কারও জিতেছেন। নাম নাফিজ বিন জাফর।
২. কিছুদিন আগে পাশের দেশ ভারতের সে কী গর্ব প্রিয়াংকা চোপড়াকে নিয়ে।কারণ তিনি আমেরিকান একটা টিভি সিরিজে কাজ করেছে। নাম ‘কুয়ানটিকো’। এই কুয়ানটিকো নিয়ে তো আমাদেরও গর্ব করার কথা ছিলো, কারণ এই সিরিজ’টার যিনি লেখিকা তিনি বাংলাদেশী, তার নাম সরবানী আহমেদ। আফসোস আমরা তার নামই জানিনা।
৩. লজ্জার হলেও সত্যি আমরা আরো অনেকের নাম জানিনা। অবশ্য আমরা নাম না জানলেও, সারা পৃথিবী জানে, ‘ফাস্ট এ্যান্ড ফিউরিয়াস’ এ গাড়ির গতি দেখে আমরা হাত তালি , সিনেপ্লেক্সে বসে শিস বাজাই। আমেরিকায়, ভারতে বসে যখন এ্যাক্সোডাম: গর্ডস এ্যান্ড কিংস, ফিফটি শেডস অফ গ্রে, ব্যাটসম্যান ভার্সেস সুপারম্যান, ডন অফ জাস্টিস দেখে দর্শকেরা হাততালি দেয়। সেই হাত তালির আওয়াজ বাংলাদেশ পর্যন্ত পৌঁছায়। এরকম বাঘা বাঘা সব সিনেমায় কাজ করেছেন আমাদেরই ছেলে, আমাদের গর্ব ওয়াহিদ আইবিএন রেজা।
৪. এতক্ষণ সিনেমার কথা বললাম, এবার একটু অন্যান্য ক্ষেত্রের দিকে তাকাই। মাত্র কিছুদিন আগে সমগ্র এশিয়ার যুবকদের বস হিসেবে পৃথিবী বিখ্যাত ম্যাগাজিন ফোর্বসে জায়গা করে নিয়েছেন আমাদের দেশের ছেলে, উসামা বিন নূর। কত জন চিনি আমরা তাকে? তিনিও তো দেশের জন্য বিশাল বড় সম্মান বয়ে আনলেন।
৫. লিপু আউলিয়ার কথাতো জানা উচিত। তিনি একজন বিখ্যাত অটোমোভি ইঞ্জিনিয়ার , ডিজাআনার, কোচ বিল্ডার। ২০০৪ সালের দিকেই ইন্টারসেকশন ম্যাগাজিনের নজরে আসেন তিনি। ২০০৬ সালে ডিসকভারি চ্যানেল তাকে অনুরোধ করে মাত্র ৮ সপ্তাহে দুটি গাড়ি বানিয়ে দেয়ার জন্য। তিনি তা বানাতে সময় নেন মাত্র ৭ সপ্তাহ। এত এত ট্যালেন্টেড মানুষকে আমরা চিনি ন। চিনলেও বা কতজন চিনি?
৬. গর্ব করার মতো আমাদের আরো অনেক অনেক অনেক নাম রয়েছে। সারা পৃথিবীর দ্বিতীয় সেরা ওয়েবসাইট ‘ইউটিউবের’ প্রতিষ্ঠাতাও আমাদের বাংলাদেশের। নাম জাওয়েদ করিম।
৭. এছাড়া পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষকে বিনামূল্যে শিক্ষাদান করছেন যিনি তিনি সালমান খান। ভারতের নায়ক সালমান খান নয়, তিনি আমাদের সালমান খান। বিলগেটস থেকে শুরু করে সারা পৃথিবীর গুণীজনেরা তার প্রশংসায় মেতে থাকে। পৃথিবীর একশো প্রভাবশালী মানুষের মধ্যে তার স্থান থাকে উপরের দিকে।
৮. ড. ইউনুসের কথাতো আমরা জানিই। এইতো সেদিন সারা পৃথিবীর জীবিত জ্ঞানী ব্যক্তিদের তালিকা করা হয়েছে, সেখানে পোপ, কোয়েলহোর পরই তিনি আছেন।
আমাদের গর্ব করার জন্য যথেষ্ট লম্বা লিস্ট রয়েছে,আফসোস আমরা তা জানিনা। আমরা সারাদিন কী নিয়ে পড়ে থাকি এটাও আমরা জানিনা। আমরা এটাও জানিনা, আসলে কাদেরকে নিয়ে গর্ব করতে হবে।
ভারতের মানুষ ক্রিকেটারদের নাম, ফিল্ম স্টারদের নাম যেমন জানে তেমনি করে তারা সুন্দর পিচাইয়ের নামও জানে, সম্মান করে। আমাদেরও জানতে হবে, পেশাদার আনন্দ দানকারীদের মতো করেই যোগ্য উদ্যোক্তদের নামও। তাদের সম্মান করতে হবে, এতে তারা আরও বেশি উৎসাহিত হয়ে দেশের জন্য আরও বড় কিছু অর্জন করতে পারবেন।
======