নির্বাচন বর্জন করেছে জামায়াত প্রার্থীরা
ভোটকেন্দ্র দখল, জাল ভোট প্রদান ও রাতেই বাক্স ভরার অভিযোগ করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
রোববার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে দলের সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান ধানের শীষের ২২ প্রার্থী এবং স্বতন্ত্র ৪ প্রার্থীর নির্বাচন বয়কটের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই জনগণের নিকট প্রতীয়মান হয় যে, একাদশ নির্বাচন সরকারের নির্দিষ্ট ছক ও নকশা অনুযায়ী সম্পন্ন হতে যাচ্ছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও জোটের পক্ষ থেকে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ দেয়া হয়। আন্তর্জাতিক মহল থেকেও নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে আহ্বান জানানো হয়। কিন্তু শুরু থেকেই একতরফা নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি নিয়ে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন একতরফাভাবে সরকারি দলকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করছে। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ ও সমতল মাঠ তৈরিতে ব্যর্থ হন। এতদসত্ত্বেও আমরা আশাবাদী ছিলাম নির্বাচন কিছুটা হলেও নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে এবং জনগণ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি যে, জনগণের সকল প্রত্যাশাকে অবজ্ঞা করে শনিবার ২৯ ডিসেম্বর রাতেই দেশের অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ব্যালট পেপারে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে ব্যালট কেটে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে রাখা হয়। রোববার ভোট শুরুর সময় জনগণ ভোট কেন্দ্রে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাদেরকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। এমনকি ধানের শীষ প্রতীকের এজেন্টদেরকে ভোট কেন্দ্রে ঢুকতে দেয়া হয়নি। কোথাও কোথাও হামলা করা হচ্ছে এবং হামলা এখনো অব্যাহত আছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতিতে ভোটারদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রার্থী ও ভোটারগণ আক্রমণের শিকার হয়ে মারাত্মতকভাবে আহত হয়েছেন। দেশের সর্বত্রই নির্বাচনের নামে প্রহসনের নগ্ন চিত্র ফুটে উঠেছে। প্রকৃতপক্ষে এটা কোনো নির্বাচনই নয়। নির্বাচনের নামে এটি একটি ব্যালট ডাকাতির প্রহসন এবং জনগণের সাথে প্রতারণা করা ছাড়া আর কিছুই নয়।’
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, ‘ভোটার ও সাধারণ জনতার ওপর সরকারের অব্যাহত হামলায় জনগণের জীবন আজ বিপন্ন। সর্বত্রই চলছে সশস্ত্র মহড়া। জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগ তো দূরের কথা জান-মালের কোনো নিরাপত্তা নেই। এই একতরফা নির্বাচনকে কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়ে যায় না। তাই বিদ্যমান পরিস্থিতিতে জামায়াতে ইসলামীর যেসব প্রার্থী ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন সব আসনসমূহে আমরা নির্বাচন প্রত্যাখ্যান ও বয়কট করার ঘোষণা দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রহসনের এ নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের আয়োজন করার জন্য আমরা নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রতি/ এডি/রন