কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সভা, সমাবেশ ও মিছিলে নিষেধাজ্ঞা বহালের মধ্যেই প্রশাসনিক ভবনে কর্মী সভার পর এবার নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরেই এবার মিছিল করেছে শাখা ছাত্রলীগ। খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যার পর বিশ্ববিদ্যালয় ৬৩ তম সিন্ডিকেট সভা, সমাবেশ ও মিছিল নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেয়। যা এখনও বহাল রয়েছে।
প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল সাড়ে দশটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে থেকে শাখা ছাত্রলীগ নেতা ইলিয়াস হোসেন সবুজ ও রেজা-ই-এলাহীর নেতৃত্বে নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে মিছিল বের করে ছাত্রলীগ। মিছিলটি সমাজবিজ্ঞান, ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদ হয়ে বিজ্ঞান অনুষদ ভবন ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে এসে কাঁঠালতলায় গিয়ে শেষ হয়। পরে কাঁঠালতলায় এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। তবে ৬৩তম সিন্ডিকেটের নিষেধাজ্ঞা এখনও বহাল আছে বলে নিশ্চিত করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ মজিবুর রহমান মজুমদার।
নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই ছাত্রলীগের এমন কর্মসূচিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আইন জারি করে এবং সে আইন যদি প্রশাসনের নাকের ডগায়ই ভাঙ্গা হয়, তাতে প্রশাসন জেগে ঘুমানোর ভান করছে বলতে হবে। এর আগেও একবার এমনটি হয়েছে। তাহলে কাগজে কলমে কেন?
নিষেধাজ্ঞা বহালের মধ্যেই মিছিল করার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা ইলিয়াস হোসেন সবুজ জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনেক কিছুই নিষিদ্ধ। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষকবৃন্দই এসব মানেন না। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির বিষয়ে বিধি নিষেধ থাকলেও শিক্ষকরা রাজনীতি করছেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে আবার বিরোধও দেখা যায়। সেখানে আমরা নবীন শিক্ষার্থীদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ গ্রহনের আহবান জানিয়েছি।
মিছিলের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অনুমতির আছে কিনা এমন প্রশ্নে সাধারণ সম্পাদক রেজা-ই-এলাহী বলেন, প্রক্টরের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়া হয়েছে। ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান আলিফ বলেন, ‘মিছিলের বিষয়ে আমার সম্মতি ছিল। কিন্তু তারা যে মিছিলটি ক্যাম্পাসে ভিতরে করবে তা জানতাম না।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রক্টর ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন বলেন –’সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সকলকে শ্রদ্ধাশীল হওয়া উচিত। ছাত্রলীগ বা যারাই হোক না কেন, তাদের এটা করা উচিত হয়নি। এবং তারা আমার কাছ থেকেও কোন অনুমতি নেয়নি।”
এদিকে গত ১৭ জানুয়ারি নিষাধাজ্ঞা বহালের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে ছাত্রলীগের কর্মীসভার অনুমতি দিয়েছিল প্রক্টরিয়াল বডি। সভা সমাবেশে নিষেধজ্ঞা বহাল থাকার পরও প্রশাসনিক ভবনে কর্মী সভার অনুমতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
উল্লেখ্য, গেল বছরের শোকাবহ আগষ্টের প্রথম প্রহরে হল দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে কাজী নজরুল ইসলাম হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ সাইফুল্লাহ নিহতের জেরে দীর্ঘ ৫৬ দিনের অনিদিষ্টকালের বন্ধের পর ৬৩ তম সিন্ডিকেটে সকল ধরণের সভা-সমাবেশের নিষেধাজ্ঞার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেয় প্রশাসন। যা এখনও বহাল রয়েছে।