পরিবার গঠনে ইসলাম

প্রকাশঃ মে ১৯, ২০১৫ সময়ঃ ২:৪৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৩৯ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :

familyমানুষ সমাজবদ্ধ জীব। সমাজের মূল স্তম্ভ হলো পরিবার। সমাজের প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো পরিবারের সঙ্গে সম্পৃক্ত। মানুষ তার পরিবার থেকেই সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রাথমিক পরিচয় লাভ করে। মানুষ হিসেবে আমরা সবাই সুখপ্রত্যাশী। সুতরাং সুখ নিশ্চিত করতে হলে সুস্থ ও সমৃদ্ধ পরিবার গড়ে তুলতে হবে।

পরিবারে স্বামী-স্ত্রী এবং বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সুসম্পর্ক অত্যন্ত জরুরি। বাবা-মাসহ পরিবারের বড় সদস্যদের আচার-আচরণ শিশুদের ওপর প্রভাব ফেলে এবং সে অনুযায়ীই তারা অন্যদের সঙ্গে আচরণ করে। পরিবার গঠন তথা বিয়ের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন জরুরি। তাই পবিত্র ইসলামে বর বা কণে নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাদেরে ঈমান ও নৈতিক চরিত্রের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে ছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়ে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে হবে। যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে পরস্পরের পছন্দ-অপছন্দের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। এ কারণে আলেম-ওলামাসহ বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে একমত যে, সুস্থ ও সুন্দর দাম্পত্য জীবনের জন্য ধৈর্য্য, আত্মত্যাগ ও প্রেম-ভালোবাসার মতো অনেক গুণের সমন্বয় থাকা জরুরি।

ইসলাম পরিবারের ভিত্তিকে শক্তিশালী ও সুসংহত রাখতে পারস্পরিক বিরোধ এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেয়। ইসলাম মনে করে, স্বামী-স্ত্রী হচ্ছে পরস্পরের অতি আপনজন।

বস্তুত পরিবার হলো একটি বড় ধরনের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এই কেন্দ্রের প্রশিক্ষক হলেন বাবা-মা। শিশু-কিশোররা এই পরিবার থেকেই ভালোবাসা, আত্মত্যাগ ও সাহসিকতার মতো মহৎ গুণগুলো আত্মস্থ করে। সন্তানরা তার বাবা-মায়ের কাছ থেকে আচার-আচরণ ও শ্রদ্ধাবোধ শেখে, যা তার পরবর্তী জীবনের জন্য মাইলফলক হয়ে থাকে। এ কারণে সন্তানদের কাছ থেকে প্রাপ্য শ্রদ্ধা ও সম্মান পেতে হলে নিজেদের সদাচারী হতে হবে এবং নিজেদের পক্ষ থেকে অন্যকে সম্মান দেখানো শিখতে হবে।

বিশ্বজুড়েই বিয়ের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি ও পারিবারিক জীবন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। যার কারণে পরিবার ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে বাবা-মা উভয়ের স্নেহ-মমতায় বেড়ে ওঠার সৌভাগ্য হচ্ছে না অনেক শিশুর। তাদের কারও শুধু বাবা আছে অথবা মা। যা ওই শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য কোনোভাবেই সহায়ক নয়।

ইসলামের বিধানে, স্বামী-স্ত্রীর পরস্পরের প্রতি দায়িত্ববোধ ও সহযোগিতার মধ্য দিয়েই দাম্পত্য জীবন সুখী ও সমৃদ্ধ হয়। ইসলাম স্বামীর ওপর স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির ভরণপোষণের দায়িত্ব দিয়ে স্বামী-স্ত্রীকে তাদের পারস্পরিক অধিকার মেনে চলতে বলেছে। সে সঙ্গে ইসলাম নারীর প্রতি সন্তান লালন-পালনের দায়িত্ব দিয়ে তাকে পরিবারের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার মতো কঠিন দায়িত্বের বাইরে রেখেছে।

এই পারিবারিক রূপরেখায় পরিবারের প্রত্যেক সদস্যের যেমন কিছু অধিকার রয়েছে, তেমনি কিছু দায়িত্বও রয়েছে। যে দায়িত্ববোধ মানুষের মনে সৃষ্টি করে সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষা, জন্ম দেয় নৈতিকতা, যা একটি কাঙ্ক্ষিত সুখী পরিবারের মূল চালিকাশক্তি।

 

প্রতিক্ষণ/এডি/নুর/বাদল

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G