পরীক্ষায় ফেল, বাড়ি থেকে পালিয়ে কোটিপতি
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
অম্বরীশ মিত্র সঠিকভাবেই তার জীবনকে একটা অ্যাডভেঞ্চারের সাথে তুলনা করেন। পরীক্ষায় ফেল করে বাড়ি থেকে পালিয়ে দিল্লি চলে যান। পূর্ব-ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের ধানবাদের সাধারণ পরিবারে জন্ম নেয়া অম্বরীশ মিত্রের গল্পের শুরুটা সেখানেই । ঘটনা খানিকটা সিনেমার আংশিক কোনো সিক্যুয়াল বলে ভুল মনে হতে পারে, তবে এর ভিন্নতা সেখানেই।
বাড়ি পালানো সেই ছেলেটির আশ্রয় হয় এক বস্তিতে। ছোট্ট একটা ঘরে মাটিতে শুয়ে রাত কাটাতে হতো তাকে। একই ঘরে থাকতো আরও ছয় জন। দিনে খবরের কাগজ বেচা আর রেস্টুরেন্টে বয়গিরি করে খাবারের ব্যবস্থা করত ছোট্ট সেই কিশোর।
সেখানেই পত্রিকায় ব্যবসার নতুন আইডিয়া নিয়ে প্রতিযোগিতার একটি বিজ্ঞাপন দেখলেন। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছিল ওই প্রতিযোগিতার বিজয়ী পাবেন ১০ হাজার ডলারের সমপরিমাণ অর্থ।
১৬ বছর বয়সী অম্বরীশ মিত্র সেই বিজ্ঞাপন দেখে প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন। শেষে তিনিই বিজয়ী হলেন। স্বল্প আয়ের নারীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার আইডিয়া দিয়েছিলেন তিনি।
পুরস্কারের টাকা দিয়েই এরপর ব্যবসা শুরু করলেন তিনি। ব্যবসায়ের নাম দিলেন উইমেন ইনফোলাইন। ব্যবসায় সফল হলেন বাড়ি পালানো সেই ছোট্ট ছেলেটি। নিজের প্রতিষ্ঠানে একশো পঁচিশ জন কর্মচারীকে চাকরি দিলেন তিনি।
তবে এক সময় নিজের ব্যবসা বিক্রি করে সেই টাকা নিয়ে তিনি চলে গেলেন লন্ডনে। কিন্তু ব্রিটেনে ব্যবসা দাঁড় করানোটা খুব সহজ কাজ ছিল না। নানা ঘাত প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে এক সময় অম্বরীশের সঙ্গে দেখা হয় ওমর তায়েবের।
দুজনে মিলে শুরু করলেন নতুন এক মোবাইল ফোন অ্যাপ। এর নাম দিলেন ব্লিপার। এরপর অম্বরীশ মিত্রকে আর পিছু হঠতে হয়নি। ব্লিপারের আয় এখন দেড়শা কোটি ডলারেরও বেশি।
লন্ডন, নিউইয়র্ক, সানফ্রান্সিসকো, সিঙ্গাপুর, দিল্লিসহ ১২টি শহরে ব্লিপারের অফিস রয়েছে। এই কোম্পানিতে কাজ করেন মোট ৩শ কর্মচারী। সারা বিশ্বে ৬৭ হাজার স্কুলে ব্লিপারের অ্যাপ ব্যবহৃত হচ্ছে।
বর্তমানে জনপ্রিয় পোকেমন ভিডিও গেমটিতেও একই ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার হয়েছে। তবে ব্লিপার অ্যাপসটি আসে এরও ৫ বছর আগে। কোম্পানিটির দাবি ২০১১ সাল থেকে অ্যাপসটি বিশ্বে ১৭০টি দেশের ৬৫ মিলিয়নের বেশি মানুষ ব্যবহার করছেন।
অ্যাপসটির ব্যবহার অত্যন্ত সহজ হওয়ায় এটি সহজে জনপ্রিয়তা পেয়েছে বলে জানান, টেকনোলজি বিশেষজ্ঞ ক্রিস গ্রিন। সম্প্রতি ভারতে বেড়াতে এসেছিলেন আম্বারিশ মিতরা। জানান, চেষ্টা থাকলে শুধু বেঁচে থাকা নয়, কিছু করাও সম্ভব।
প্রতিক্ষণ/এডি/রাসিব