পর্যটক শুন্য সিলেট !

প্রকাশঃ জানুয়ারি ১৭, ২০১৫ সময়ঃ ২:৪০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ২:৪০ অপরাহ্ণ

সিণেট প্রতিবেদক.প্রতিক্ষণ ডট কম

সিলেটভ্রমণ পিপাসুদের প্রিয় সিলেট অঞ্চলে। হরতাল আর অবরোধের ফাঁদে পড়ে ভরা মৌসুমেও পর্যটকদের আনাগোনা আশংকাজনক হারে কমে গেছে

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।পর্যটক না আসায় এ শিল্পকে কেন্দ্র করে সিলেট বিভাগে গড়ে ওঠা সহস্রাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট খাঁ খাঁ করছে ।

এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা যেমন ক্ষতির মুখে পড়েছেন, তেমনি হোটেল-মোটেলে কর্মরত লোকজন অনেকটা বাধ্যতামূলক ছুটিতে পড়ে অসহায় দিনযাপন করছেন।

এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও নাশকতার আশঙ্কা বেড়ে যাওয়ায় অনেক প্রবাসীও দেশে আসছেন না। যর ফলে সিলেটের পর্যটন শিল্প বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে মনে করছেন এ শিল্পের ব্যবসায়ীরা।

রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ট্যুর অপারেটরদের সংগঠন টোয়াব কর্মকর্তারা।

হরতাল-অবরোধের কারণে পর্যাপ্ত পর্যটক না পাওয়ায় চলতি মৌসুমে শত কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।

সিলেট হোটেল ও গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তাহমিন আহমদ  বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে গত পর্যটন মৌসুমে সিলেট ছিল পর্যটক শূন্য। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশ ছিল অস্থিতিশীল। অপর দিকে২০১৩ সালের শেষ দিকে দেশে অস্থিতিশীলতা চরম আকার ধারণ করে। এতে গত মৌসুমেও সিলেটের পর্যটন খাতের আয় ছিল খুব কম।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা এবার একটুলাভেরআশা করেছিলেন ।  বাড়বে পর্যটকের আনাগোনা।

কিন্তু বর্তমান পর্যটন মৌসুমেও ২০ দলের টানা অবরোধ ও হরতালে সে আশা ভেস্তে যেতে বসেছে।

তাহমিন আহমদ বলেন,  নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই চার মাসকে  পর্যটন মৌসুম ধরা হয়।

এ সময়  সিলেটের জাফলং, বিছনাকান্দি, মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, লালাখাল, পাংথুমাই, ভোলাগঞ্জ, মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর, বাইক্কা বিল, টেকেরঘাটরাতারগুল, লাউয়াছড়া, হামহাম জলপ্রপাত, শ্রীমঙ্গলের চা বাগান, সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর,  ও হবিগঞ্জের সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে ঢল নামে দেশি-বিদেশি পর্যটকের।

এ সময় ভ্রমণকারীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলো।

এছাড়া হযরত শাহজালাল (রহ.) ও হযরত শাহপরাণ (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করতে প্রতিদিন অসংখ্য পর্যটক আসেন সিলেটে।

চলতি পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই  ব্যবসায়ীরা আশায় বুক বাঁধলেও ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে নাশকতা ও হরতাল-অবরোধে পর্যটকদের আগমন থমকে গেছে। অনেক পর্যটক সিলেটে আসা বাতিল করেছে বলে জানান তাহমিদ।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি সালাহ উদ্দিন আলী আহমদ বলেন, এখনই হোটেল-মোটেলের ব্যবসার উপযুক্ত সময়, কিন্তু হরতাল অবরোধে তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে প্রবাসীরাও আসছেন না দেশে। এর প্রভাব পড়ছে এ শিল্পে।

সিলেট ওভারসীজ সেন্টারের নির্বাহী কর্মকর্তা শামসুল আলম বলেন, সিলেট বিভাগের চার জেলা-সিলেট, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের কয়েক লাখ লোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করেন।প্রায় সাড়ে ৫ লাখ প্রবাসীর বাস যুক্তরাজ্যে। আর মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে রয়েছেন প্রায় ২০ লাখ সিলেটি প্রবাসী।

প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী ডিসেম্বরে ছুটিতে দেশে আসেন। কিন্তু এবার রাজনৈতিক অস্থিরতায় প্রবাসীরা দেশে আসছেন কম।

তবে  নিরাপত্তা বিষয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা বলেন, পর্যটকরা নিরাপত্তা চাইলে তা দিতে প্রস্তত রয়েছে পুলিশ প্রশাসন।

তবে দেশের পর্যটকরা সিলেট আসার আগে পুলিশ সুপার অফিসে চিঠি দিলে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

প্রতিক্ষণ/এডি/সাইমুম

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G