পাখি প্রেমিক ড. ওয়াদুদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ড. আব্দুল ওয়াদুদ এক বিচিত্র মানুষ। পাখির সাথে তার প্রেম, পাখির সাথেই তার সংসার।
তার সংগ্রহশালায় আছে বিশ্বের ৮৭টি দেশের পাঁচ শতাধিক দুর্লভ পাখি। পাখির পিছনে তার মাসে খরচ তিন লাখ টাকা। শুধুমাত্র শখের বসে তিনি এই বিশাল পাখি সম্ভার গড়ে তুলেছেন।
ক’দিন আগে তিনি আমেরিকা থেকে ৬০ লাখ টাকা মূল্যের বিশ্বের সবচেয়ে দামি ও বিরল এক জোড়া প্যারাডাইস পাখিও কিনে এনেছেন।
ঢাকার হাতির পুলে সোনারগাঁও রোডে ২২/২ নম্বর বাসায় তার এই বিশাল পাখি সম্ভার। ড. ওয়াদুদ বলেন দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে তিনি পাখি পোষেন এবং পাখি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। পাখির এসব দিকগুলো দীর্ঘ গবেষণা করে ড. আব্দুল ওয়াদুদ ফিকামলি তত্ত্বের আবিষ্কার করেছেন।
মন ও আত্মার সুস্থতার জন্য বিনোদন ভিত্তিক অনুশীলন পদ্ধতি। আগ্রহী দর্শনার্থীরা তার চিড়িয়াখানা পরিদর্শন করতে পারে সংগ্রহশালায় আরও আছে অবাক পাখি স্কারলেট ম্যাকাও। আরো আছে ৪০ লাখ টাকায় কেনা বিরল পাখি বস্নু গোল্ড ম্যাকাও। তার সম্ভারে থাকা ১৪ লাখ টাকা মূল্যের স্কারলেট ম্যাকাও দেখতে শুধু সুন্দরই নয়, এর আছে বহুগুণও।
ড. ওয়াদুদ জানান শেখালে পাখিটি মানুষের অনুকরণে কথা বলতে পারে, খেলাধূলা করতে পারে কিছু কিছু । এমনকি খেলনা সাইকেলও চালাতে পারে। এই পাখি সবার সাথে মিশতেও পারে। সারা দুনিয়ায় এই জাতের পাখি খাঁচায় পোষা আছে মাত্র ২০০টি।
সার্ক পাখিটির দৈর্ঘ্য ৩৩ থেকে ৩৫ ইঞ্চি হয়ে থাকে। এদের গড় আয়ু ৫০ বছর। এই পাখি বছরে এক থেকে দুইবার চারটি ডিম পাড়ে। এই বিরল প্রজাতির পাখি উপমহাদেশে ১০টির বেশি নেই।
ব্রাজিল, মেক্সিকো, কোস্টারিকা, পানামা ও এলসালভাদরসহ ক্যারিবিয়ান অঞ্চলে পাখিটি দেখা যায়। আরও অনেক পাখির সংগ্রহ রয়েছে তার ব্যক্তিগত ওই মিনি চিড়িয়াখানায়।
আব্দুল ওয়াদুদ জানালেন, ১৯৯৭ সালে গোল্ড ম্যাকাও দুটি আনা হয় ব্রাজিল থেকে। প্রথম দিকে কলা তরল করে ফিডার দিয়ে খাওয়ানো হতো। ধীরে ধীরে পাখি দুটি প্রশিক্ষণের পর কথা ও মানুষের আচরণ বুঝতে শেখে।
তিনি ১৪ বছর ধরে ব্লু গোল্ড ম্যাকাও পাখির ডিম থেকে বাচ্চা ফোটানোর ওপর গবেষণা করেন। এর আগে দুবার ডিম দিলেও শেষ পর্যন্ত বাচ্চা ফোটেনি। এবার চেষ্টা সফল হয়েছে। এরা সাধারণত ছয় মাস পরপর দুটি থেকে সর্বোচ্চ চারটি ডিম দেয়।
তার সংগ্রহশালায় আরও যে সব বিরল পাখি রয়েছে তা হলো গ্রীন উইং ম্যাকাও, হ্যান্স ম্যাকাও, কাইক, পিন্যান্ট, সিনাসন, আফ্রিকান গ্রে প্যারট, লেডি আমহাস্ট, রোবিনো, রোজেলা ব্যাক ক্যাপ, বাজরিকা, ইস্টার্ন রোজেলা, আমাজান প্যারট, রক পাবলার বুরকিস, ক্যারাকিট, কাকারাকি, বিভিন্ন প্রজাতির কাকাতুয়া, সানকর্নার, হলুদ, সিলভার বস্নু-ধূসরসহ বিভিন্ন রং ও প্রজাতির টিয়া, বাজরিগর, জাভা, ইলেক্টাস, ডায়মন্ড ডাভ, গ্রীন ডাভ, ফিঞ্চ, রেইনবো লরী, চ্যাটারি লরী, ব্যাক ক্যাপ লরী, জানদিয়ার, প্যারাকিট, মুলুকান কাকাতুয়া, সালফার ক্যাস্টেট কাকাতুয়া, গোল্ডেন ফ্রিজেন্ট, সিলভার ফ্রিজেন্ট, পোর্ট লিংকন, মংক প্যারাকিট, প্রিন্সেস অব ওয়েলস, আমেরিকান কুট, হেরিং গার্ল, নর্দান পিনটেইল, নাট ক্রাকার, ওয়াল ক্রিপার, স্টোন কার্লি প্রভৃতি।
ড. ওয়াদুদ জানান হাতিরপুলের সোনারগাঁও রোডের ২২/২ নম্বর বাসায় তার মিনি চিড়িয়াখানা দর্শনার্থীরা বিনামূল্যেই পরিদর্শন করতে পারেন।
একই সঙ্গে এসব পাখি পোষতে আগ্রহীদের সেখান থেকে সহায়তাও করা হয়। তার আশা ভবিষ্যতে দেশের প্রতিটি জেলায় পাখির চিড়িয়াখানা বানাবেন। কোন পাখি প্রেমিক যদি পাখি ক্রয় করতে চাই সেক্ষেত্রে ক্রয় করতে পারে তার চিড়িয়াখানায় বিক্রয় জন্য অনেক পাখি রয়েছে।
প্রতিক্ষন/এডি/নুর/রায়হান/মেহেদী