পাহাড়ে তুলা চাষে নতুন স্বপ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পাহাড়ে তুলা চাষ করে আর্থিক সচ্ছলতার স্বপ্ন দেখছেন চাষীরা । ইতোমধ্যে পাহাড়ের ঢালে তুলা চাষ করে অনেকে লাভবান হয়েছেন । তুলা অত্যন্ত লাভজনক ফসল ।
বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৪৫ লাখ বেল তুলার চাহিদা রয়েছে । কিন্তু সারাদেশে তুলা উৎপাদন হচ্ছে মাত্র দেড় লাখ বেল । এ কারণে তুলা উৎপাদনের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার ।
বান্দরবানে পানির অভাব থাকায় শত শত হেক্টর জমি পতিত পড়ে থাকত। তুলা চাষে পানি কম লাগায় এবং অন্যান্য খরচ কম হওয়ায় সম্প্রতি বান্দরবানে তুলা চাষ বাড়ছে । তুলার সাথে সাথী ফসল চাষ করা যায় বলেও তুলার প্রতি চাষীদের আগ্রহ বাড়ছে ।
জেলা সদরের মেঘলা পাড়ার চাষী উপ্রু মারমা জানান, আগে তারা পাহাড়ে জুম চাষ করতেন, জুমের ফাঁকে ফাঁকে পাহাড়ে তুলা চাষ করতেন। সম্প্রতি তারা পাহাড়ের ঢালে তুলা চাষ করে লাভবান হয়েছেন। প্রতি কানি (চল্লিশ শতক) জমিতে ৬-৭ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ৮ মণ ফলন পেয়েছেন, যার বাজার মূল্য ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা ।
তাছাড়া তুলা বীজ ও জ্বালানী হিসেবে তুলাগাছ বিক্রি করেও চাষীরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানা যায় ।
তুলাচাষী বোলুভদ্র চাকমা বলেন, পাহাড়ী তুলার চেয়ে সমভূমি জাতের তুলা চাষ বেশি লাভজনক। সমভূমি জাতের তুলার গাছগুলো ছোট, দেখতে সুন্দর এবং তুলার দামও ভাল পাওয়া যায়। বাজারে এই তুলার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ জন্য বান্দরবানে সমভূমি জাতের তুলা চাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বান্দরবান জেলা তুলা উন্নয়ন কর্মকর্তা শামসুল বারী জুয়েল জানান, তুলা উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান জোনের অধীনে জেলার ছয়টি উপজেলায় চার হাজার তিনশ ৪৩ জন চাষী প্রশিক্ষণ নিয়ে তুলা উৎপাদন করছেন। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে তুলা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ হাজার আটশ ২০ হেক্টর পাহাড়ী জমিতে এবং একশ ৮৫ হেক্টর সমভূমিতে ।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বান্দরবান জেলায় চার হাজার তিনশ ৪৩ জন চাষী তুলা চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। চাষীদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তুলা উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের ওপর ব্যাপক ধারণা দেওয়া হয়েছে ।
ফলে তুলা উৎপাদন করে তারা লাভবান হচ্ছেন। নিবিড় তুলা চাষ কর্মসূচির আওতায় চাষীদের বিনামূল্যে বীজ, প্রশিক্ষণ এবং প্রযুক্তি ব্যবহারে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে জেলার পতিত এবং অনাবাদী সব জমি তুলা চাষের আওতায় আনা হবে।
প্রতিক্ষণ/এডি/আকিদ