পিঁপড়াদের তৈরি শহর!(ভিডিও)
ডেস্ক রিপোর্ট, প্রতিক্ষণ ডট কম:
প্রথমে তারা ব্রাজিলে বেশ বড় দেখে একটা পিঁপড়ার বাসা নির্বাচন করলো। এরপর এই বাসার প্রবেশ দ্বার দিয়ে (আসলে এটি প্রবেশ দ্বার নয় মূলত পিঁপড়াদের গড়ে তোলা বাতাস চলাচলের পথ দিয়ে) সিমেন্ট ঢালা শুরু করলো। সিমেন্ট দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল, এগুলো বাসার ভিতরে যেয়ে জমাট বেঁধে গেলে পরে মাটি খুঁড়ে তারা দেখতে পারবেন যে আসলে কেমন এই পিঁপড়ার বাসা। কিন্তু এই সিমেন্ট ঢালার সময় হল বিপদ। যতই সিমেন্ট ঢালে না কেন এই পিঁপড়ার গর্ত কোনভাবেই পরিপূর্ণ হয় না!
অবশেষে টানা ৩ দিন ধরে ১০ টন সিমেন্ট ঢালার পর পূর্ণ হল গর্ত! এর পরে বিশেষজ্ঞরা ১ মাস অবসর নিলেন যাতে এই সিমেন্ট পরিপূর্ণভাবে শক্ত হয়ে যায়। তারপর শুরু হলো মাটি খোঁড়াখুঁড়ি। আর বেড়িয়ে আসতে থাকলো পিঁপড়াদের মহানগরী। বেশ কিছুদিন আগে এক অজ্ঞাত কারণে পিঁপড়াগুলো এই বাসা পরিত্যাগ করে চলে গেছে। আর একারনেই গবেষণার জন্য এই বাসাকে বেছে নেন গবেষকরা।
পিঁপড়াদের এই বাসা খুঁজে বের করার নেতৃত্ব দেন প্রফেসর লুইস ফোরজি “Professor Luis Forgi”, তারা যা খুঁজে পেলেন তা দেখে রীতিমত নিজেরাই ভীমরি খেলেন। তাদের নির্বাচিত পিঁপড়ার এই বাসা ৫০ স্কয়ার ফুট এলাকাজুড়ে অবস্থিত আর এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে ২৬ ফুট গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত!
বিশেষজ্ঞরা পিঁপড়াদের এই মহানগরীর প্রতিটি অংশ তৈরির উদ্দেশ্যকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে বের করেছেন। তারা যেসব জিনিষ আকিষ্কার করেছেন তা আপনাকে রীতিমত অবাক করে দেবে।
পিঁপড়াদের মহানগরীর বৈশিষ্ট্যঃ
এই মহানগরী তৈরি করতে পিঁপড়াদের মোট ৪০ টনের মতো মাটি সড়াতে হয়েছিল।
এই মহানগরীতে বায়ু প্রবাহের জন্য ছিল আলাদা আলাদা সুড়ঙ্গ। পর্যাপ্ত বাতাসের ব্যাবস্থা ছিল আর ছিল একটি মহাসড়ক যা মহানগরীর কেন্দ্রকে আশপাশের অংশের সাথে সংযুক্ত করে রেখেছিল।
এখানে পিঁপড়ারা গড়ে তুলেছিল ফাঙ্গাসের বাগান। যেখানে তারা ফাঙ্গাসের চাষ করতো। এই ফাঙ্গাস লার্ভা পিঁপড়ার মূল খাবার।
রাণী পিঁপড়ার বাসস্থান সবথেকে বড় করে গড়ে তোলা আর এর আশেপাশে যত জায়গা আছে সবগুলো সৈনিক পিঁপড়াদের থাকার স্থান।
এই মহানগরীতে একটি রানী পিঁপড়ার অধীনে ৩০০ মিলিয়ন পিঁপড়া বসবাস করতো।
মহানগরীর একটা অংশ শুধুমাত্র আবর্জনা সংরক্ষনের জন্য ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে মানুষের পরেই এই পিঁপড়ারা সব থেকে জটিল সামাজিক ব্যাবস্থা গড়ে তুলতে সক্ষম। আর এই কারণেই এদের মহানগরী এতটা জটিলভাবে গড়ে তোলা হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/পাভেল