পিস টিভিঃ ১২টি অজানা তথ্য

প্রকাশঃ জুলাই ১০, ২০১৬ সময়ঃ ৩:১৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:১৯ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ

bangla-slide

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে দু দুটো জঙ্গি হামলার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার নিষিদ্ধ হবে বলে জানা গেছে। জঙ্গিবাদে উসকানি দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে এই ইসলামিক টিভি চ্যানেলটির বিরুদ্ধে। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, বাংলাদেশের অধিবাসীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় এই চ্যানেল।
আসুন জেনে নিই “মানবতার সমাধান” বাক্যটিকে স্লোগান হিসেবে গ্রহণ করা পিস টিভি সম্পর্কে ১২টি তথ্য যা হয়তো আপনি নাও জানতে পারেন।

১। পিস টিভি ইসলাম প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে পরিচালিত একটি টেলিভিশন চ্যানেল।

২। পিস টিভি একটি অলাভজনক স্যাটেলাইট টেলিভিশন নেটওয়ার্ক চ্যানেল যেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই থেকে বিশ্বব্যাপি পরিবেশন করা হয়। পিস টিভির অনুষ্ঠানমালা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে দৈনিক ২৪ ঘন্টা ইংরেজী ভাষায় প্রচারিত হয়ে থাকে।

৩। পিস টিভির প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি হলেন বিশ্ববরেণ্য ইসলামিক পণ্ডিত ডা. জাকির নায়েক। তিনি একজন ইসলামিক প্রচারক হিসেবে ভারতের মুম্বাই নগরী থেকে দ্বীন প্রচারে ভূমিকা রাখছেন।

৪। পিস টিভির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ২০০৬ সালের ২১ জানুয়ারি। এর পর থেকে পিস টিভি চ্যানেলটি বিশ্বের ২০০টি দেশেরও বেশি দেশে সম্প্রচারিত হয়ে আসছে।

৫। পিস টিভির ৩টি শাখা চ্যানেল রয়েছে। এগুলো হলো পিস টিভি উর্দু, পিস টিভি বাংলা এবং পিস টিভি চাইনিজ। উর্দুভাষীদের জন্য পিস টিভি উর্দু চালু করা হয় ২০০৯ সালে এবং ২২শে এপ্রিল ২০১১ সালে চালু করা হয় পিস টিভি বাংলা চ্যানেলটি যা মূলত বাংলাভাষী দর্শকদের জন্য চালু করা হয়েছে।

৬। পিস টিভিতে মূলত ২ ধরণের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। যথা – বক্তৃতার অনুষ্ঠানমালা ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানমালা। বক্তৃতার অনুষ্ঠানমালাসমূহ প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এবং শিক্ষামুলক অনুষ্ঠানমালা শিশুদের জন্য প্রচারিত হয়।

৭। বেশ কয়েকটি জনপদে বিতর্কিত হলেও সমগ্র বিশ্বে তুমুল জনপ্রিয় পিস টিভি। ২০১৩ সালে আরবনিউজ জানায়, বিশ্বে ২০০ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ পিস টিভি দেখে। এই ৩ বছরে এর দর্শকসংখ্যা আরো বেড়েছে নিঃসন্দেহে।

৮। ডাক্তার জাকির নায়েক পিস টিভির প্রতিষ্ঠাতা হলেও তিনি কিন্তু এর মালিক নন। দুবাই ভিত্তিক একটি কোম্পানি এর মালিক। যদিও জাকির নায়েক সেই কোম্পানির নাম প্রকাশ করেননি।

৯। ২০০৬ সাল থেকে ভারতে চ্যানেলটির সম্প্রচার চালু থাকলেও ২০০৯ সালে ভারতের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয় হতে রেজিস্ট্রেশন না করায় ২০১২ সালে ভারতে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়।

১০। পিস টিভির বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে এই টেলিভিশন চ্যানেল মুসলমানদের সুন্নি সম্প্রদায় ব্যাতীত সিয়া, আহমাদী প্রভৃতি অন্য সম্প্রদায়গুলোকে হেয় করে দেখানোর চেষ্টা করে এবং ইহুদীদের সরাসরি ইসলামের শত্রু বলে অভিহিত করে।

১১। পিস টিভি মূলত অনুদানভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠান। শুধু ২০০৯ সালেই চ্যানেলটি ইসলামিক রিসার্চ ফাউন্ডেশন থেকে ১.২৫ মিলিয়ন ইউরো গ্রহণ করে। তবে বাংলাদেশের ইসলামি সাময়িকী মাসিক মদীনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান পত্রিকাটির এক পাঠকের প্রশ্নের জবাবে ফতোয়া দিয়েছেন যে পিস টিভিকে অনুদান অর্থ্যাৎ যাকাত দেওয়া বৈধ নয়। তিনি বলেন, যাকাত পাবার জন্য গরীব, ফকির, মিসকিন হতে হবে; অন্যথায় সে যাকাত পাবার উপযুক্ত নয়। আরেকটি বিষয় হলো- যাকাত আদায়ের জন্য ‘তামলীক’ শর্ত, অর্থাৎ উপযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে যাকাতের অর্থের মালিক বানানো। সুতরাং পিস টিভির মালিক গরীব নন, তাই তিনি যাকাত পাবারও উপযুক্ত নন। আর অন্যদিকে চ্যানেলের মধ্যেও যাকাতের মালিক হওয়ার যোগ্যতা নেই। কারণ- চ্যানেল কোনো ব্যক্তি নয়, বস্তু। টিভি গরীবও না। সুতরাং পিস টিভিসহ কোনো টিভি চ্যানেলকে যাকাতের অর্থ দিলে ইসলাম সম্মত উপায়ে যাকাতের জন্য যথা নিয়মে না হওয়ার কারণে ঐ যাকাত হিসেবে দাতা ব্যক্তির যাকাত আদায় হবে না। যাকাত তার নির্দিষ্ট হকদারকে দিতে হবে, নতুবা যাকাত আদায় হবে না।

১২। জানা গেছে, গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় দেশি-বিদেশি ২০ জন নিরীহ মানুষের হত্যাকারী ৫ জঙ্গির মধ্যে ২ জন, নিবরাস ইসলাম ও রোহান ইমতিয়াজ পিস টিভির সভাপতি জাকির নায়েকের অনুসারী ছিলেন।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G