পৃথিবীর দশটি আকর্ষণীয় স্থান

প্রকাশঃ আগস্ট ২০, ২০১৫ সময়ঃ ৫:১৯ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৫১ পূর্বাহ্ণ

প্রতিক্ষন ডেস্ক

এই পৃথিবীতে কোন মানুষ বেঁচে থাকবে না৷সবাইকে একদিন চলে যেতে হবে। কিন্তু মৃত্যুর আগে দু’চোখ ভরে দেখে নিতে হবে সুন্দর এ পৃথিবীকে, যতটা সম্ভব৷ বিশ্বের অনেক জায়গায় আছে যেখানে পর্যটকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে ।

আংকোর ভাট, কম্বোডিয়া :

the_Angkor_Wat, combdia

বিশ্বের অন্যতম একটি ভ্রমণের জায়গায় হিসেবে অবস্থিত কাম্বোডিয়ার উত্তরে সিয়েম রিপ শহরের আংকোর ভাট৷ দ্বাদশ শতাব্দীতে নির্মিত এই মন্দির বা মন্দিরগুচ্ছটি এখন ভ্রমণের স্থান হিসেবে পরিচিত৷ আদতে বিষ্ণু মন্দির হলেও, হিন্দু ও বৌদ্ধধর্মের অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটেছে এখানে৷ চারিদিকে বিশাল এই স্থাপনার অসাধারণ ভাস্কর্য তাই আজও আপনাকে চমকে দেবে, জাগাবে শিহরণ৷

গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ, অস্ট্রেলিয়া :

AU_GreatBarrierReef- Austrila

অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল বরাবর প্রায় ১,৮৬০ মাইল জুড়ে বিস্তৃত এই গ্রেট বেরিয়ার রিফ৷ এটি একাধারে একটি ন্যাশনাল পার্ক এবং হেরিটেজ সাইট৷ এখানে আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় প্রবাল প্রাচীর, হাজারো রকমের বাহারি মাছ আর সাদা তিমিসহ অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণী৷

মাচু পিচু, পেরু :

machu_picchu

পেরুর ভুবন বিখ্যাত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন মাচু পিচু পঞ্চদশ শতাব্দীর ইনকা আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ধ্বংসাবশেষ৷ ইনকা রাজা ইউপানকি ২৩৬০ মিটার উচ্চতায় মাচু পিচুর ওপর তৈরি করান এক পূর্ণাঙ্গ শহর৷ আর তারই ধ্বংসাবশেষ দেখতে এখনও সেখানে ছুটে যান দূর দূরান্তের মানুষ৷ প্রায় তিন হাজার সিঁড়ি ভেঙে ওপরে ওঠেন তারা৷

গ্রেট ওয়াল অফ চায়না, চীন :

great-wall-china

কথায় আছে, মহাশূন্য থেকেও দেখা যায় চীনের প্রাচীর বা গ্রেট ওয়াল অফ চায়না৷ তবে পৃথিবীর এই দীর্ঘতম প্রাচীর দেখে অবাক হননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া বোধহয় কঠিন৷ ইট আর পাথর দিয়ে তৈরি এই প্রাচীর দৈর্ঘ্য ২,৬৯৫ কিলোমিটার, উচ্চতায় ৪.৫৭ থেকে ৯.২ মিটার এবং প্রস্থে ৯.৭৫ মিটার৷ শোনা যায়, মাঞ্চুরিয়া আর মঙ্গোলিয়ার যাযাবর দস্যুদের হাত থেকে চীনকে রক্ষা করতেই তৈরি হয়েছিল এই গ্রেট ওয়াল অফ চায়না৷

তাজ মহল, ভারত :

taj-mahal , india

সাদা ধবধবে মার্বেল, আর তার ওপর রুবি, ফিরোজা, কোরাল, ক্যাটস আই, ব্লাড স্টোন দিয়ে অনন্যসুন্দর কারুকার্য৷ আগ্রায় যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই স্মৃতিসৌধের মতো রাজকীয় সমাধি, স্থাপত্যে রোম্যান্টিকতার এমন নিপুণ মুন্সিয়ানা কোথাও নেই৷ মুঘল সম্রাট শাহজাহান তাঁর স্ত্রী মমতাজ মহলের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এই সৌধটি নির্মাণ করেন৷ ১৬৩২ খ্রিষ্টাব্দে শুরু হয়ে ১৬৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত চলে তাজমহল তৈরির কাজ৷

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র :

grand-kaniyan..usa

গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে অবস্থিত একটি গিরিখাত৷ এর বেশিরভাগ অংশই গ্র্যান্ড ক্যানিয়ন ন্যাশনাল পার্ক-এর ভেতরে পড়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম একটি জাতীয় উদ্যান৷ গিরিখাতটির মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে কলোরাডো নদী৷ ৪৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১,৮০০ মিটার গভীরতা বিশিষ্ট গ্র্যান্ড ক্যানিয়নকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দিয়েছে তার অসামান্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য৷ প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট এই গিরিখাতের সংরক্ষণে একটি বড় ভূমিকা পালন করেন। তিনি প্রায়ই এখানে শিকার এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যে আসতেন।

কলোসিয়াম, রোম :

kalasiam..rome

বিশ্বের অন্যতম একটি স্থান হলো ইটালির রোম শহরে অবস্থিত কলোসিয়াম৷ এটা মূলত ছাদবিহীন একটি মঞ্চ, যেখানে কমপক্ষে ৫০ হাজার দর্শক বসে গ্ল্যাডিয়েটরদের প্রতিযোগিতা, মানুষ ও প্রাণীদের নানা খেলা, প্রদর্শনী ইত্যাদি উপভোগ করতেন৷ এই কলোসিয়ামের কারণে রোম নগরীকে রক্ত আর হত্যার শহর বলেও ডাকা হতো এক সময়৷

ইগুয়াসু জলপ্রপাত, আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল :

iguazu_falls_border-of_brazil_and_argentina

আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের সীমান্তে বরাবর দেখা যাবে জলপ্রপাত৷ ইগুয়াসু নদী যেখানে পারানা নদীর সাথে মিলিত হয়েছে, তার ২৪ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত এটি৷ পারানা মালভূমির ঢাল বেয়ে পাহাড়ি ঝর্ণাধারা নেমে এসে প্রায় ৭৩ মিটার নীচে পতিত হয়ে সৃষ্টি হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার এই প্রাকৃতিক বিস্ময়৷ আকারে ইগুয়াসু কিন্তু নায়াগ্রা জলপ্রপাতের চাইতে বড়৷

আলহামব্রা, স্পেন :

alhambra, spain

একগুচ্ছ পান্নার মাঝে যেন একটি মুক্তো । নবম শতকে দক্ষিণ স্পেনে নির্মিত একটি দুর্গের ভিত্তির ওপর এই দুর্গ-প্রাসাদের পত্তন ঘটান স্পেনের শেষ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী৷ বাইজেন্টাইন ও মুসলিম স্থাপত্যের পরম্পরায় তৈরি এ দুর্গ-প্রাসাদে স্থানীয় লাল মাটিতে ব্যবহার করা হয়৷ সে জন্যই এর নাম আলহামব্রা ৷

আয়া সোফিয়া, তুরস্ক:

turusko

ইস্তানবুলে অবস্থিত আয়া সোফিয়াকে তুর্কিরা বলেন হাজিয়া সোফিয়া বা সেন্ট সোফিয়া৷ ৫৩৭ খ্রিষ্টাব্দে খ্রিষ্টান জাস্টিন এটি প্রতিষ্ঠিত করেন৷ পরে, ১৯৩৪ সালে, আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক একে জাদুঘরে পরিবর্তিত করেন৷ সুলতান আহমেদ এলাকার মূল আকর্ষণই হচ্ছে আয়া সোফিয়া, যার জন্য প্রতিদিন হাজারো মানুষ জড়ো হন৷ ১৯৮৫ সালে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য স্থাপনার তালিকায় স্থান পায় আয়া সোফিয়া৷

প্রতিক্ষণ/এডি/এমএস

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G