পোকামাকড় দমনে পাচিং পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
এ বিষয়ে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পাশাপাশি পারি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট নামে একটি বেসরকারি সংস্থাও কাজ করছে। মোহনগঞ্জ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ক্ষতিকর পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য পাচিং পদ্ধতি ব্যবহারের ওপর বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় কৃষি বিভাগ কৃষকদের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করে আসছে।
চলতি মৌসুমে পৌরসভাসহ উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৮ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ হয়েছে। এবার ক্ষেতে পোকার আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষার জন্য কৃষকরা কীটনাশকের পরিবর্তে অগ্রিম পাচিং পদ্ধতি বেছে নেয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম নাফিজ জানান, পাচিং দুই ধরনের হয়_ জীবন্ত ও মৃত। জীবন্ত পাচিং হলো ধঞ্চে, শণ, পাট এবং মৃত পাচিং হলো বিভিন্ন ধরনের মৃত ডালপালা দিয়ে পাখির জন্য আশ্রয় কেন্দ্র গড়ে তোলা।
তিনি আরো জানান, ক্ষতিকারক পোকামাকড়ের হাত থেকে ফসল রক্ষার জন্য পাচিং ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার প্রতিটি অঞ্চলে আমন চাষে পাচিং ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যয়হীন এবং কম সময়ে জৈবিক উপায়ে পোকামাকড় দমন করতে পারায় এ পদ্ধতি দিন দিন কৃষকদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
উপজেলা তেথুলিয়া গ্রামের কৃষক হাদিস মিয়া, গড়াউন্দ গ্রামের আবুল কালাম, পানুর গ্রামের শহিদুল ইসলাম ও জজ মিয়াসহ সচেতন কৃষকরা জানান, ধান ক্ষেতে গাছের মরা ডালপালা ও বাঁশের কঞ্চি দাঁড় করিয়ে জৈবিক পদ্ধতিতে ক্ষতিকারক পোকা দমন করা যায়। বিভিন্ন ধরনের পাখি ডালপালায় বসে ক্ষতিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে রোগবালাই থেকে ফসলকে রক্ষা করে।
পারি ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্টের মোহনগঞ্জ শাখার মাঠ ব্যবস্থাপক মধুসূদন সাহা বলেন, আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে এ এলাকার কৃষকদের উন্নয়ন ও সচেতনতার লক্ষ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কাজ করে আসছি। পাচিং পদ্ধতিও আমাদের কাজের একটি অংশ।
তিনি আরো বলেন, পাচিং পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে ফসলের রোগবালাই দমন যেমন সহজভাবে করা যায় তেমনি অর্থও সাশ্রয় হয়। পাশাপাশি জমির উর্বরতাও বৃদ্ধি পায়। কেননা কীটনাশক ব্যবহারে জমির উর্বরতা হ্রাসসহ মৎস্য প্রজননে মারাত্মক ক্ষতি করে। এ ছাড়া কীটনাশকের মূল্যও অনেক বেশি। তাই ধান চাষে পাচিং পদ্ধতির প্রতি কৃষকদের আগ্রহ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/নোমান