প্রচারণায় নামবেন খালেদা জিয়া
নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণায় নামবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। ২৩৪টি পৌরসভার অনুষ্ঠিতব্য এ নির্বাচনে প্রত্যেক এলাকায় প্রচারণার সুযোগ না পেলেও নির্বাচনের আগে নিয়ম মাফিক তিনদিনই দলীয় প্রার্থীদের জন্য ভোট চাইবেন তিনি। প্রার্থীদের পক্ষে আইন মেনে নির্বাচনি প্রচারণায় নামতে খালেদা জিয়ার জন্য ইসির পক্ষ থেকে কোনও বাধা নেই জানিয়েছেন কমিশন সচিব।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার বলেন, ইলেকশনে যখন নেমে গেছি, তখন খালেদা জিয়ার প্রচারণায় না নামার কোন কারণ দেখি না। তবে, তিনি অসুস্থ। যতটা পারেন, তিনি মাঠে থাকবেন। হয়তো সব জায়গায় যেতে পারবেন না। তবে, তিনি মাঠে নামবেন বলে আমি মনে করি। এ ব্যাপারে তিনি এখনও কোন সিদ্ধান্ত দেন নি। দ্রুত এ বিষয়ে জানা যাবে।
এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত কোনও আলোচনা বা সিদ্ধান্ত হয় নি বলে দাবি করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রচারণায় নামবেন, তবে এখনও আলোচনা হয় নি। এখনও সিদ্ধান্ত হয় নি।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, কোন এলাকা থেকে নির্বাচনি প্রচারণায় মাঠে নামবেন খালেদা জিয়া, ঠিক কোন সময়ে নামবেন, এ বিষয়ে কাজ করছেন তার তিন উপদেষ্টা। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন নেতাও তাদের সহায়তা করছেন। তবে এই সূত্রটি এইসব দায়িত্বশীলের কোনও নাম-পরিচয় দিতে পারে নি। সূত্রের দাবি, তিনদিনের প্রচারণায় খুব বেশি এলাকায় যাওয়া সম্ভব হবে না খালেদা জিয়ার। তার শারীরিক অবস্থার দিকে খেয়াল রেখে হয়তো ১০ থেকে ১৫ টি এলাকায় বক্তব্য রাখতে পারবেন তিনি।
সূত্রে জানা যায়, পৌর নির্বাচনকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে দলটি। এক্ষেত্রে নানা সংশয় মাথায় রেখেই নির্বাচনে এসেছে বিএনপি। পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা ধরনের পরিকল্পনাও গ্রহণ করছে তারা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্বাচনি আইন মেনেই প্রচারণায় নামবেন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া। দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে তার প্রচারণা দিয়েই এগিয়ে থাকতে চায় বিএনপি।
এদিকে, খালেদা জিয়ার প্রচারণার বিষয়টি সরকারের মধ্যে চিন্তার সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী এমপি, মন্ত্রী ও সরকারের সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করেন, এমন ব্যক্তিরা প্রচারণায় সুযোগ না পাওয়ার বিষয়টিও সরকারের মধ্যে দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে। এটি আরও তীব্রভাবে প্রকাশিত হয়েছে শনিবার বিকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্যে। এদিন রাজধানীর শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আলোচনায় তিনি অভিযোগ করে বলেন, খালেদা জিয়া যে সুযোগ পাবেন, আমরা কেন সেটি পাব না? সবার সমান সুযোগ রাখা দরকার ছিল। কমিশন কাজটা ঠিক করে নি, ঠিক করে নি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে ইসি সচিব সিরাজুল ইসলাম কোনও মন্তব্য করতে রাজি হন নি। তবে তিনি বলেন, অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন, তারা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। খালেদা জিয়া এখন মন্ত্রী-এমপিদের সমমর্যাদায় নন। তিনি এ ধরনের সুযোগ-সুবিধাও নেন না। সেক্ষেত্রে তার প্রচারণায় কোনও বাধা নেই।
মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্যটিকে অফেনসিভ পজিশন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। তিনি বলেন, মনে হয়, নাসিম সাহেব অফেনসিভ পজিশনে গেছেন। ইসি তো ৯০ শতাংশ তাদের হয়ে কাজ করছে। এডমিনিস্ট্রেশনের লোকদের রিটার্নিং অফিসার পদে বসানো হচ্ছে। দ্রুত নির্বাচন করছে। আমরা তো আগেও বলেছি, দলীয় প্রতীকে নির্বাচনের উদ্দেশ্য ভিন্ন। কু-মতলব আছে। সবার মতামত না নিয়েই তারা নিয়ম করছে। ফলে, যেখানে কমিশন হাত-পা নাড়ে সরকারের কথায়, সেখানে ম্যাডামের প্রচারণায় সমান সুযোগ নেই বলে যে মন্তব্য, সেটির নিশ্চয় অন্য উদ্দেশ্য আছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি