প্রধানমন্ত্রীকে ‘শোপিস’ বললেন এরশাদ
নিজস্ব প্রতিবেদক
সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ প্রধানমন্ত্রীসহ স্পিকার ও বিরোধী দলীয় নেতাকে ‘শোপিস’ বলে উল্লেখ করেন। ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
আর এ মন্তব্য করে তাৎক্ষণিকভাবে নারী সদস্যদের তোপের মুখে পড়েন তিনি। এ সময় সংসদে সভাপতির আসনে ছিলেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদও অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত ছিলেন।
নিজেদের ক্ষমতা বাড়ানো নিয়ে এর আগে জাতীয় সংসদে একাধিকবার দাবি জানালেও ‘নিজেরা যে ক্ষমতাহীন’ তা মানতে নারাজ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্যরা। এ কারণেই সোমবার জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ যখন তাদেরকে ‘শোপিস’ বলে আখ্যায়িত করলেন তখন চিৎকার করে সম্মিলিতভাবে এর প্রতিবাদ জানালেন তারা। আর তখন বরাবরের মতোই পুরুষ সদস্যরা মুচকি হাসি নিয়ে বসে ছিলেন নিজ আসনে।
নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এরশাদ তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে বলেন, ‘আমরা কথায় কথায় বলি, আমাদের প্রধানমন্ত্রী নারী, স্পিকার নারী, সংসদ উপনেতা নারী, বিরোধীদলীয় নেত্রী নারী, কিন্তু এরা শোপিস। এরা কিন্তু শোপিস। বাইরে কিন্তু এই অবস্থা নেই। বাইরে নারীরা অসহায়।’
তিনি এ মন্তব্য শুরু করার সঙ্গে সঙ্গেই চারদিক থেকে নারী সদস্যরা এর তীব্র প্রতিবাদ শুরু করেন। তবে তাতেও থেমে যাননি এরশাদ। তিনি তার বক্তব্য ফের বলেন, ‘বাইরে কিন্তু নারীরা অসহায়। মনে আছে ২১ ফেব্রুয়ারিতে রাতের বেলার কথা। নারীরা শহীদ মিনারে থাকেন না, যায় না। কোনো নারী সেখানে যায় না। কেননা ভয়ে যায় না। আমি যদি ভুল কোনো কথা বলে থাকি তাহলে উথড্রো করলাম। কথা হলো মধ্যরাতে নারীরা সেখানে যেতে ভয় পায়। কেন ভয় পায়?’
তখনও নারী সদস্যরা এর প্রতিবাদ করতে থাকলে এরশাদ তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বসুন মাননীয় সদস্য বসুন, নিরবতা পালন করুণ। পহেলা বৈশাখের কথা মনে আছে? আমি ছিলাম না। এদেশের সংস্কৃতি, সবাই মিলে আনন্দ করা। সেখানে যা হয়েছিল তা নিয়ে কি বিচার হয়েছে? ভিডিওতে যার যার ছবি এসেছিল তাদের বিচার হয়নি। আমার সময়ে একটি নারীকে এসিড ছোড়া হয়েছিল, তাকে আমি ফাঁসি দিয়েছিলাম। যে কারণে এসিড ছোড়া কমেও গিয়েছিল।’
এরশাদের বক্তব্য শেষ হলে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মাননীয় সদস্য যেসব অসংসদীয় শব্দ ব্যবহার করেছেন সেগুলো এক্সপাঞ্জ করা হলো।’
প্রতিক্ষণ/এডি/নির্ঝর