ফরমালিনযুক্ত খাবারে সয়লাব ফরিদপুর

প্রকাশঃ মার্চ ১২, ২০১৬ সময়ঃ ৩:৫১ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৩:৫২ অপরাহ্ণ

ইয়াকুব আলী তুহিন (ফরিদপুর প্রতিনিধি)

faridpur

ফরিদপুরের বাজারগুলোতে ফরমালিনযুক্ত খাবারে সয়লাব। এসকল ভেজাল মিশ্রিত খাবার খেয়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে জেলা শহরের সাধারণ মানুষ। এসব খাদ্যের বিরুদ্ধে এখনি ব্যবস্থা না নিলে চরম ভোগান্তিতে পড়বে জেলার সদর উপজেলার সাধারণ জনগন।

ফরিদপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র তিতুমীর বাজার। বাজারের প্রধান ফটকের সামনে রয়েছে বেশ কয়েকটি ফলের দোকান। বাহারী রকমের রসালো ফল সাজিয়ে রাখা হয়েছে সেখানে, ফলগুলো দেখতে সুন্দর হলেও তা ফরমালিনে পরিপূর্ণ। চোখের সামনে এসব বিষাক্ত ফল বিক্রি হচ্ছে অবাধে। ফরমালিনযুক্ত থাকায় দোকানীরাও নিরাপদ। ১০/১২ দিন বিক্রি না হলেও ফলগুলো পচে না, দেখতে মনে হয় এই বুঝি গাছ থেকে পেড়ে আনল।

হাজী শরীয়তুল্লাহ বাজার। মাছ বাজারে কোন মাছি নেই। মাছ আর পচে না। কারণ জানতে চাইলে জানা গেল যে, মাছে দেওয়া আছে ফরমালিন। সাথেই গুড় বাজার, বাজারে আসল গুড় পাওয়া কঠিন। যা আছে তার বেশীর ভাগই চিনি দিয়ে তৈরী। গরু বাজারে মহিষ জবাই হলে তা বিক্রি হচ্ছে গরুর নামে। পাঠি বিক্রি হচ্ছে খাসির নামে। পানি মিশিয়ে বিক্রি হচ্ছে দুধ।

ফল বিক্রেতারা জানায়, আমরা ফলে ফরমালিন মিশাই না। ফল আমদানির সময়ে ফরমালিন মেশানো হয়। যেখান থেকে ফল আমদানি করি, সেখানেই ফরমালিন মেশায়। আমরা কি করতে পারি?

ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বলেন, মৃতদেহ পচন রক্ষায়, সাধারণত ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। এ ছাড়া মেডিকেল কলেজগুলোতে শিক্ষার্থীদের শিক্ষার জন্য অনেকদিন ধরে রাখা জীবজন্তুর ক্ষেত্রে প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে জীবের পচন রক্ষায় ফরমালিন ব্যবহার করা হয়। চিড়িয়াখানা বা জাদুঘরে অনেক প্রাণী দীর্ঘদিন রয়েছে ফরমালিন মেশানোর জন্য।  

কিন্ত এখন এটি বাজারের খাদ্যের মধ্যে দিয়ে আমরা খাচ্ছি যা দুঃখজনক। ফরমালিন মিশ্রিত খাবার খেলে স্কিন ক্যান্সার, মুখের ভিতরে ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, কিডনির ক্যান্সার, পরিপাকতন্ত্রের কালাইটিফ, লেফ্রোইটিজসহ নানা ধরনের জটিল রোগ হয়ে থাকে।

ভোক্তা সংস্থা ক্লাবের সদস্য প্রতিনিধি শেখ ফয়েজ আহমেদ বলেন, বাজারে ফরমালিন মিশ্রিত খাদ্যের চিহ্নিতকরণ মেশিন থাকা সত্ত্বেও অভিযান বন্ধ রয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে বলা হয় মেশিনটি নষ্ট কিন্তু তারা নতুন কোন মেশিন আনছে না। কেন আনছে না তা আমার জানা নেই।

জেলার বাজার কর্মকর্তা বলেন, আদালতে আমাদের বর্তমানের মেশিনের উপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।  আমাদের মেশিনটিও নষ্ট। মাঝে মাঝে আমরা মোবাইল কোর্ট করি। তিনি ফরিদপুরের কোন খাদ্য দ্রব্যে ফরমালিন নেই বলেও দাবী করেন।

প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, আসলে ফরমালিন আছে কিনা সেটা নির্ধারণ করতে পারছি না। তবে বিভিন্ন বাজারগুলোতে আমাদের পক্ষ হতে সচেতনতামুলক ব্যানার দেওয়া হয়েছে। আমি এখন এ বিষয় কিভাবে নিরসন করা যায় সে ব্যবস্থা নেব।

জেলার জনগনের মৌলিক দাবী ভেজালমুক্ত খাদ্য। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা সেই খাদ্য আজ অখাদ্যে পরিণত করছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট স্থায়ী সমাধান করার আবেদন জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। তা না হলে অখাদ্যই আমাদেরকে খাদ্য হিসাবে গ্রহণ করতে হবে। পরিনাম; আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হবে রোগা, মেধাহীন।

 

 

#লাইক ও শেয়ার দিয়ে প্রতিক্ষণের সাথে থাকুন।

 

 

প্রতিক্ষণ/এডি/এফটি

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G