ফাঁসি কার্যকরের আগ মুহূর্তে স্থগিত
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, প্রতিক্ষণ ডটকম:
পাকিস্তানের হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত এক তরুণের ফাঁসি কার্যকর করার কয়েক মিনিট আগে নাটকীয়ভাবে তা স্থগিত করা হয়েছে।
পরিবার ও তার আইনজীবী জানান, তাকে ফাঁসির সাদা ইউনিফরম পরানো হয়েছিল। প্রস্তুত ছিল ফাঁসির মঞ্চ।
এরপর তাকে বলা হলো তার শেষ ইচ্ছা লিখতে। তিনি লিখলেন। তারপরই তার ফাঁসি কার্যকর স্থগিত করা হয়।
ওই যুবকের নাম শাফকাত হোসেন। তার আইনজীবী জানান, ২০০৪ সালে যখন তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয় তখন তার বয়স ছিল ১৪ বছর।
পরিবারের অভিযোগ হত্যার কথা স্বীকার না করায় তার বিরুদ্ধে নির্মম নিপীড়ন চালানো হয়। তাকে সিগারেটের ছ্যাঁকা দেয়া হয়। তার নখ উপড়ে ফেলা হয়।
শাফকাতের ভাই গুল জামান জানান, তার ফাঁসি অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
তা মা মাখনি বেগম বলেন, ‘আমরা সারারাত জেগে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করেছি। তাকে যে আবার জীবিত দেখতে পাব সেই আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু আল্লাহর শোকরিয়া যে তিনি এই নির্মম শাস্তি থেকে আমার ছোট ছেলেকে রক্ষা করেছেন।’
মানবাধিকার সংগঠনগুলো দাবি করছে, হত্যাকাণ্ডের সময় শাফকাতের বয়স আসলে কত ছিল এবং স্বীকারোক্তির জন্য তার ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছিল তার তদন্ত করতে হবে।
গুল জামান বলেন, শাফকাতকে যখন ফাঁসির জন্য প্রস্তুত করা হয় তখন তিনি তার পাশেই ছিলেন।
‘ফাঁসির জন্য তাকে সাদা ইউনিফরম পরানো হয়। তখন তাকে তার শেষ ইচ্ছা লিখতে বলা হয়। তিনি (শাফকাত) লিখেন: আমি নির্দোষ। তারা যেজন্য আমাকে ফাঁসি দিতে চায় আমি সেই অপরাধ করিনি। তারা অপরাধীদের বাঁচাতে চায় এবং ইতোমধ্যেই তাদের খালাস দেয়া হয়েছে।’
পাকিস্তানে বুধবারও নয়জনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই দিনে ২১ জনের ফাঁসি কার্যকর করা হলো।
শাফকাতের পরিবার বুধবার পাকিস্তানের ত্রুটিপূর্ণ বিচার ব্যবস্থা এবং স্বীকারোক্তির জন্য নির্যাতনের সমালোচনা করে সরকারের কাছে মর্মস্পর্শী একটি চিঠি লেখে।
পাকিস্তানের আইনে ১৮ বছরের কম বয়সী কারো মৃত্যুদণ্ড হয় না এবং নির্যাতনের মাধ্যমে স্বীকারোক্তি আদায়ও গ্রহণযোগ্য নয়।
সূত্র: রয়টার্স।
প্রতিক্ষণ/এডি/কেয়া