ফিরে এল বাঙালির শোকের মাস

প্রকাশঃ আগস্ট ১, ২০২১ সময়ঃ ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৩৯ পূর্বাহ্ণ

আবারও  ফিরে এল সেই শোকাবহ আগস্ট।১৯৭৫ সালের এই দিনে বাংলাদেশের ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হয়েছিল এক কালো অধ্যায়ের। এক ঘৃণ্য নিকৃষ্ট নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের। স্বাধীনতাবিরোধী দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ঘাতকদের নিষ্ঠুরতার হাত থেকে রক্ষা পায়নি বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠপুত্র শিশু রাসেলও।

ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এই হত্যাকাণ্ডে বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী, মহিয়সী নারী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, জাতির পিতার জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল ও তার স্ত্রী সুলতানা কামাল, দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল ও তার স্ত্রী রোজী জামাল, কনিষ্ঠ পুত্র কিশোর শেখ রাসেল, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম সংগঠক ও জাতির পিতার ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আব্দুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত, আব্দুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদ নৃশংসভাবে হত্যার শিকার হন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

’৭৫-এর ১৫ আগস্ট নরপিশাচ রূপি খুনিরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে ঘৃণ্য ইনডেমনিটি আইন জারি করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে দীর্ঘ ২১ বছর বাঙালি জাতি বিচারহীনতার কলঙ্ককের বোঝা বহন করতে বাধ্য হয়। পরে ১৯৮১ সালে ১৭ মে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনা প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। আর তখনই উদ্যোগ নেওয়া হয় জাতির কলঙ্কমোচনের। জাতির পিতাকে হত্যার ঘটনায় দীর্ঘ ২১ বছর বন্ধ থাকার পর উদ্যোগ নেওয়া হয় খুনিদের বিচারের। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে নিয়মতান্ত্রিক বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ২০১০ সালে ঘাতকদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করেন শেখ হাসিনা।

এ শোকের মাসেই আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনার জন্ম হয়। ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা করা হয়। এবার ঘাতকদের মূল টার্গেট ছিলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। অলৌকিকভাবে বেঁচে যান তিনি। তার ক্ষত বয়ে বেড়াচ্ছেন আজও।

শোকের মাস আগস্ট ঘিরে প্রতি বছর দেশজুড়ে নানা কর্মসূচি পালিত হয়। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও সীমিত পরিসরে শোকের কর্মসূচি পালিত হবে। সীমিত পরিসরে কড়াকড়িভাবে স্বাস্থ্যবিধি আগস্ট মাসের কর্মসূচি পালনের জন্য নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

প্রতিক্ষণ/এডি/শাআ

 

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G