ফেরত যাচ্ছে বিশ্বব্যাংকের টাকা

প্রকাশঃ জুলাই ১, ২০১৫ সময়ঃ ৬:০৪ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৬:০৪ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

world bankঅনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তুলে আটটি প্রকল্প থেকে ফেরত যাচ্ছে বিশ্বব্যাংকের টাকা। এসব প্রকল্পের প্রায় ৩০ লাখ ডলার প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ২৪ কোটি টাকা (১ ডলার ৮০ টাকা হিসাবে)।

উল্লেখ্য,গত মে মাসে সংস্থাটির ঢাকা মিশনের প্রধান ইউহানেস জাট অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগকে (ইআরডি) চিঠি দিয়েছিলেন। ৩০ জুনের মধ্যে প্রকল্পগুলোতে উল্লিখিত দুর্নীতির অংশের টাকা তাদের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়ার সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী বিশ্বব্যাংক। কিন্তু এর মধ্যে বিশ্বব্যাংকের অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছিল ইআরডি। কিন্তু সে যুক্তিতে সন্তুষ্ট হয়নি সংস্থাটি। ফলে সরকারকে উক্ত অর্থ সহায়তা টাকা ফেরত দিতে হচ্ছে। এর মধ্যে সবার আগে ফেরত যাচ্ছে ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড চিলড্রেন অ্যাট রিস্ক প্রকল্পের টাকা।

ইআরডির একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে সংস্থাটি অসন্তোষ জানিয়ে আসছিল বেশ আগে থেকে। সর্বশেষ গত ৩০ মার্চ বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের ঋণ থেকে ৪৪ কোটি টাকা বাতিল করে। গত দুই বছরে প্রকল্পটি থেকে আরো ৭০ কোটি টাকা বাতিল করা হয়। পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য আরাস্তু খান (বিশ্বব্যাংকের প্রাক্তন দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রতিক্ষণকে বলেন, এটি নতুন ঘটনা নয়। এর আগেও এ ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল। তখন প্রায় ৯৩ হাজার কোটি টাকার মতো ফেরত যায়।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিস ও ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, আট প্রকল্পের প্রায় ২৪ কোটি টাকা প্রত্যাহার করার কথা বলা হয়েছে। এসব প্রকল্পে যে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছিল, তার মধ্যে শুধু অনিয়ম ও দুর্নীতির অংশের অর্থ ফেরত চাওয়া হয়েছে। এর আগে গত ৩০ মার্চ ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড চিলড্রেন অ্যাট রিস্ক প্রকল্প থেকে ৪৪ কোটি টাকা প্রত্যাহার করে বিশ্বব্যাংক। এ প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের লিড অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে কোথাও কোনো অনিয়ম বা দুর্নীতি হলে সরকারকে এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে বিশ্বব্যাংক। তবে কোনো প্রকল্পে অর্থায়নের ক্ষেত্রে বাস্তবায়ন-প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়।

এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে, উচ্চশিক্ষায় গুণগত মান বৃদ্ধি প্রকল্প, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রজেক্ট (এনএটিপি), ঝরে পড়া শিশুদের পুনর্বাসন প্রকল্প-২ (রস্ক), সেকেন্ড রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প (আরটিআইপি-২), স্ট্রেনদেনিং রিজিওনাল কো-অপারেশন ফর ওয়াইল্ড লাইফ প্রটেকশন ইন এশিয়া প্রকল্প, এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম ফর পুওরেস্ট প্রকল্প, স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহেন্সমেন্ট প্রকল্প ও ক্লিন এয়ার সাসটেইনেবল এনভায়রনমেন্ট প্রকল্প।

জানা যায় যে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বর্তমানে ৩৩টি প্রকল্প চলমান। এসব উন্নয়ন প্রকল্পে তাদের ৭৫০ কোটি ডলারের অর্থায়ন রয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ১৪টি প্রকল্পের ঋণের আংশিক অর্থ প্রত্যাহার করেছে বিশ্বব্যাংক। আরো কয়েকটি প্রকল্পের অর্থ বাতিল হওয়ার পথে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। তবে ২০১১ সালের ২৯ জুন দুর্নীতির অভিযোগে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়ন বাতিল করে বিশ্বব্যাংক। এর পর থেকে সংস্থাটির অর্থ সহায়তা ফেরত যাওয়ার বিষয়টি আলোচিত হয় বেশি।

প্রতিক্ষণ/এডি/জহির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G