ফেসবুক বন্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে
নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশের একজন নাগরিকেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক বন্ধের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।
আজ সোমবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তারানা হালিম।
প্রতিমন্ত্রী জানান, ইন্টারনেট সেফটি সলিউশন নিশ্চিত করতে কাজ করছে সরকার। বিভিন্ন নিরাপত্তা ইস্যুতে ফেসবুকের সঙ্গে একটি চুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। ফেসবুক ব্যবহার করে যে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করা হয়, সরকার যেন তা তদারক করতে পারে সে জন্য ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে। এর ফলে জননিরাপত্তা নিশ্চিত হবে এবং ফেসবুক অপব্যবহারকারীদের ধরতে পারবে সরকার।
ফেসবুকসহ এসব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের কারণে দেশের প্রায় ১১ হাজার ই-কমার্স ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান সাংবাদিকরা। সরকারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য এই যে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, এর প্রতিকার সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘একজন মানুষের জীবনের মূল্য অনেক বেশি।’ সাময়িক যে ক্ষতি হচ্ছে, সেই ক্ষতি মেনে নিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
তারানা হালিম বলেন, ‘সরকার আইনসম্মতভাবেই এসব বন্ধ করে রেখেছে। দেশের জননিরাপত্তা, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সবকিছু দেখা সরকারের দায়িত্ব। এই নিরাপত্তা বিধানের জন্য সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এমন সিদ্ধান্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই নেওয়া হয়েছে। কোনো কোনো দেশ আছে, যারা পুরো ইন্টারনেট সুবিধাই বন্ধ করে দেয়। বাংলাদেশে তো সেটা করা হয়নি।’
কবে নাগাদ ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যম খুলে দেওয়া হবে—তা জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত এটা বন্ধ থাকবে।’
এ সময় ‘পরবর্তী নির্দেশ’ কোথা থেকে আসবে—তা জানতে চান সাংবাদিকরা। এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের জন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে একটি সমন্বিত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যখন আবার সমন্বিতভাবে সিদ্ধান্ত আসবে, তখনই খুলে দেওয়া হবে।’
সামাজিক এই যোগাযোগমাধ্যমগুলো বন্ধ না করে সরকার নাশকতাকারীদের দমন করতে পারত কি না—এ প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এর আগে অন্য যুদ্ধাপরাধীদের রায়ের পর ফেসবুক ব্যবহার করে অনেক ধরনের নাশকতা হয়েছে। তখন ফেসবুক খোলা ছিল। তবে এবার বন্ধ থাকায় তেমন বড় কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটাকেই সরকার সাফল্য হিসেবে দেখছে।
মাথাব্যথার জন্য এটা মাথা কেটে ফেলার শামিল কি না—জানতে চাইলে তারানা হালিম বলেন, ‘এই কথাটা আমাকে অনেকে করেন। মন্ত্রিপরিষদের কিছু সদস্য আমাকে এ প্রশ্ন করেছেন। তবে আমরা মাথা কেটে ফেলিনি, কিছু সুবিধা বন্ধ করেছি মাত্র। এসবও সাময়িকভাবে করা হয়েছে। এখনো পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সময়মতো সব খুলে দেওয়া হবে।’
প্রতিক্ষণ/এডি/এআরকে