বন্দুকযুদ্ধ, শাসকদলের অন্তর্দ্বন্দ্ব, পরিণতি কোথায়?

প্রকাশঃ আগস্ট ২৬, ২০১৫ সময়ঃ ১১:৪৪ পূর্বাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ১:২০ অপরাহ্ণ

হায়দার আকবর খান রনো

ronoশাসক দল স্বীয় হীন স্বার্থে ফ্রাঙ্কেনস্টাইন তৈরি করেছিল। তা হলো ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। শাসক দলের তরুণ বাহিনী। এদের হাতেই এক সময় ওঠেছিল আগ্নেয়াস্ত্র। লাইসেন্স করা অথবা লাইসেন্সবিহীন। বিভিন্ন সময়ে আমরা দেখেছি, পুলিশের পাশে থেকে এবং পুলিশের আশ্রয়ে তারা পিস্তল ব্যবহার করেছেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করার জন্য, তাদের মিছিল-সমাবেশ, এমনকি সামান্য মানববন্ধনের কর্মসূচিকেও ভন্ডুল করার জন্য। বিএনপি জামায়াত তো বটেই, এমনকি অনেক কম শক্তিশালী কমিউনিস্ট পার্টিও এই পেটোয়া বাহিনীর আক্রমণের বাইরে ছিল না। গত মেয়র নির্বাচনের সময় কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী কাফি রতনের (ঢাকা উত্তর) পথসভাতেও ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ‘বীরপুরুষরা’ সশস্ত্রভাবে আক্রমণ চালিয়েছিল। প্রকাশ্যে পিস্তল ব্যবহারের ছবি ছাপা হয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। টেলিভিশনে সচিত্র প্রতিবেদন প্রদর্শিত হয়েছে। একবার নয়, অনেকবার।

আমরা আগেও বহুবার সাবধানবাণী উচ্চারণ করেছিলাম। সরকার ও সরকারি দলের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেছিলাম যে, এই ভাবে অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের স্বাধীনতা দান করলে, আইন-শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়বে। সেটা রাষ্ট্র পরিচালনা যারা করছেন, তাদের জন্য শুভ হবে না। আমরা আরও বলেছিলাম যে, যাদেরকে নির্বাচনের ভোট কেন্দ্র দখলের কাজে নিয়োজিত করা হচ্ছে, তারা শুধু ওইটুকু দখল করেই সন্তুষ্ট থাকবে না। তাদের প্রভুদের জন্য নির্বাচন কেন্দ্র দখল জরুরি ছিল। এবার নিজেদের জন্য কি অন্য কিছু দখল করার প্রয়োজনীয়তাবোধ করবে না? অবশ্যই করবে। দখলি কালচার তাদেরকে পেয়ে বসবে, তারা দখল করতে উদ্যত হবে, পরের জমি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ, টেন্ডার বাক্স। এমনকি নদী ও নারী দখলও। এক এক ভয়ানক পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে। এরাই সরকারের পতন ঘটাতে পারে।

বাইরের কোন রাজনৈতিক শক্তি আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটাতে পারবে বলে আপাতত মনে হচ্ছে না। প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ইতোমধ্যে সেই শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। মেরী শেলীর বিখ্যাত উপন্যাসের চরিত্র ফ্রাঙ্কেনস্টাইনের দানবের হাতেই তার সৃষ্টিকর্তার মৃত্যু ঘটেছিল, সেটা কল্পকাহিনী হলেও, ইতিহাসে এর বাস্তব উদাহরণ অনেক আছে।

পৃথিবীর বড় বড় একনায়কতান্ত্রিক শাসকরা বিরোধী পক্ষের উপর চরম জুলুমবাজি করে থাকেন, কিন্তু তাও একটা সিসটেম মেনে করা হয়। এইভাবে নিয়ন্ত্রণহীন ফ্রাঙ্কেনস্টাইন বাহিনী যারা তৈরি করেছে, তাদের কর্তৃত্ববাদী শাসন দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেনি। গত ১৩ আগস্ট এক গোলটেবিল বৈঠকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, ‘রাজনৈতিক আশ্রয় থাকলে আইন তাকে স্পর্শ করতে পারে না’। এ বড় ভয়ংকর কথা। এটা যে কেবল গণতন্ত্রকেই নির্বাসিত করছে তাই নয়, এই পরিস্থিতি অর্থনীতিতেও নৈরাজ্য এবং সমাজ জীবনে অস্থিরতা, অস্থিতিশীলতা ও চরম অভিশাপ নিয়ে আসবে। শাসক দল প্রায়ই বলে থাকে, গণতন্ত্র দরকার নাই, এখন দরকার উন্নয়ন। গণতন্ত্রবিহীন উন্নয়নের মডেল হিসাবে তারা প্রায়ই মালয়েশিয়ার মাহাথির মহম্মদের নাম উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের সাথে মাহাথিরের মালয়েশিয়ার অনেক পার্থক্যের মধ্যে একটি বড় পার্থক্য ছিল এই যে, সেই দেশে আইনের ঊর্ধ্বে এমন মাস্তান বাহিনী ছিল না, টেন্ডারবাজিও ছিল না, শাসক দলের নিজেদের মধ্যে খুনোখুনিও ছিল না।

আমাদের বুধবার-এর গত সংখ্যায় ১৩ আগস্ট পুলিশ সদর দফতরে অনুষ্ঠিত এক সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে আগত পুলিশ সুপারদের অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। কালের কণ্ঠের (১৪ আগস্ট ২০১৫) রিপোর্ট অনুযায়ী, একাধিক এসপি বলেছেন, ‘মাঝে মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের নেতারা এসে নানা তদবির করেন। বিশেষ করে টেন্ডার নিয়ে বেশী ঘাপলা। সরকারি খাস জমি দখল।… মাঝে মধ্যে ওই নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলা যায় না’।

এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন বলে কিছু থাকে না। এর পরিণতি দেখি সমাজ জীবনে। অনাচার, অত্যাচার, অবিচার সংক্রামক ব্যধির মতো বিস্তার লাভ করেছে। শিশু নির্যাতন ও শিশু হত্যা এবং ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে আতংকজনকভাবে। এটা কোন সরকারের জন্যই সুখকর নয়। এমনকি যে সরকার জনগণের স্বার্থ নিয়ে ভাবে না, তাদের জন্যও নয়। কারণ যে শ্রেণীর স্বার্থে সরকার দেশ চালাচ্ছে চূড়ান্ত বিশ্লেষণে সেই শ্রেণীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি প্রণালীবব্ধভাবে শোষণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রেও নানা ধরনের অসুবিধা তৈরি করে।

তাই শেষ পর্যন্ত সরকার বাধ্য হয়েছে পদক্ষেপ নিতে। বিশেষ করে সেই সকল ক্ষেত্রে যেখানে অন্তর্দলীয় কোন্দলে নিজ দলের ক্যাডাররা মারা যাচ্ছে। অথবা যেখাবে সরকারের ভাবমূর্তি একেবারেই ধসে পড়ছে।

এই মাস আগস্ট মাস। শোকের মাস। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জন্য সেন্টিমেন্ট থাকাটা খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু আওয়ামী লীগের তরুণ প্রজন্ম, যারা কোন আদর্শ দ্বারা উদ্বুদ্ধ নয়, যারা কখনো সংগ্রাম করেনি, যারা ক্ষমতার দম্ভ, অপব্যবহার ও লুটপাটের ক্রিয়াকলাপের মধ্যদিয়ে বড় হয়েছে, তাদের কাছে তেমন কোন সেন্টিমেন্ট আছে বলে মনে হয় না। বরং নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা শোক দিবস পালন উপলক্ষে চাদাবাজি করেছে এবং চাদার ভাগাভাগি নিয়ে অথবা প্রতিপত্তির লড়াইয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষ করেছে। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি দিয়ে পোস্টার করা হলেও তার মধ্যে প্রকট হয়ে ফুটে ওঠেছে আত্মপ্রচার। শোক দিবসে, শোকের মাসে, শোকের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে খুনোখুনি – এতোটাই উদ্ধত্যপূর্ণ বাড়াবাড়ি যে সরকারের পক্ষে তা সহ্য করা সম্ভব হয়নি। সরকার এবার এই সকল অপরাধের সাথে জড়িতদের বিরদ্ধে এ্যকশনে গেছে।

দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে আইনগত এ্যকশনকে আমরা স্বাগত জানাবো। কিন্তু সরকার একদিকে স্বীয়দলের লোকদের অপরাধকে আড়াল করতে চেয়েছে, অপরদিকে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এ্যকশনে গেছে। কিন্তু সেটাও আইনসম্মত এ্যকশন নয়। সরকার দ্বিবিধ অন্যায় করেছে। এটাকেও রাষ্ট্রীয় অপরাধ বললেও অত্যুক্তি হবে না।

গত ১৮ আগস্ট মাত্র ছয় ঘন্টার ব্যবধানে র‌্যাব-পুলিশের সাথে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে ছাত্রলীগের দুই নেতা। রাজধানীর হাজারীবাগ থানার ছাত্রলীগের সভাপতি আরজু মিয়া ও মাগুরার ছাত্রলীগের নেতা মেহদি হাসান আজিবর। পরদিন ১৯ আগস্ট একই রকমের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে কুষ্টিয়ার যুবলীগ নেতা জাকির। ঢাকার ছাত্রলীগ নেতা আরজু এই মাসেই রাজা মিয়া নামে এক কিশোরকে পিটিয়ে হত্যা করেছিল। গত মাসে মাগুরায় ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের অভ্যন্তরীণ সশস্ত্র সংঘর্ষ ও গোলাগুলিতে জনৈক বৃদ্ধ গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান এবং এক গর্ভবর্তী নারী ও তার পেটের কন্যাসন্তানও গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সরকারি দলের মাস্তানদের অন্তর্বিরোধে পেটের শিশুও নিরাপদ ছিল না, যে তখনো পর্যন্ত পৃথিবীর আলো দেখেনি। এই ঘটনার মামলার অন্যতম আসামী ছিল ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত মেহেদি হাসান আজিবর।

১৫ আগস্ট শোক দিবসে কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে প্রতিপত্তির লড়াই সশস্ত্র সংঘর্ষে রূপ নিয়েছিল যার পরিণতিতে জনৈক যুবলীগ কর্মী নিহত হয়। হত্যাকারীদের তালিকার মধ্যে ছিল যুবলীগের আরেক কর্মী জাকির যে নিজেও পরবর্তীতে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।

ক্রসফায়ার বা তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যাবার ঘটনা নতুন নয়। বলাই বাহুল্য, বিচার বহির্ভূত হত্যা কখনই সমর্থনযোগ্য নয় এবং এই সবই হচ্ছে একনায়কতান্ত্রিক প্রবণতা মাত্র। এই সকল বিষয়ে এতোদিন নিশ্চুপ থাকলেও এখন নিজেদের ওপর ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের কৌশলটি ব্যবহৃত হওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ করেছেন শাস দলের একাংশ। ছাত্রলীগ নেতারা বলছে, এটা মেনে নেয়া যায় না। বন্দুকযুদ্ধকে এইবার তারা সাজানো নাটক বলে অভিহিত করেছে। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফজলে নূর তাপস সরাসরি বন্দুকযুদ্ধের গল্পকে অস্বীকার করে বলেছে, ঢাকার ছাত্রলীগ নেতা আরজুকে হত্যা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও বলেছেন, ক্রসফায়ার সমাধান নয়। কিন্তু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের আনন্দ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘ঠিক হয়েছে! এ্যকশন শুরু হয়ে গেছে’।

মনে হয়, সরকার নিজ দলে শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে। তারই কৌশল হলো ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ। প্রায় একই সময়ে আমরা র‌্যাবের আরেক কৌশলও দেখতে পাচ্ছি। বন্দুকযুদ্ধ বা ক্রসফায়ারের বানোয়াট গল্পের পাশাপাশি গণপিটুনির গল্প শোনানো হচ্ছে। গত ১৯ আগস্ট তেমনি জয়দেবপুরে গণপিটুনিতে জনৈক যুবক মারা গেছে বলে র‌্যাব জানিয়েছে। কিন্তু সংবাদপত্রে প্রকাশিত খবর থেকে জানতে পারি যে, স্থানীয় জনগণ ‘গণপিটুনির তত্ত্বে’ বিশ্বাস করছে না। কয়েক মাস আগে ঢাকার মিরপুরে গণপিটুনিতে তিন যুবক মারা গিয়েছিল বলে সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছিল। কিন্তু ওই যুবকদের গায়ে ৫৪টি বুলেট পাওয়া গিয়েছিল। সেটাও সরকারি সূত্রে পাওয়া ময়না তদন্তের ফলাফল। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে যখন মিথ্যাচার করা হয়, তখন আমরা সাধারণ জনগণ বড় অসহায়বোধ করি।

সাম্প্রতিক সময়ের এই সকল ঘটনাবলীর সারসংক্ষেপ করলে যা দাড়ায় তাহলো – গণবিচ্ছিন্ন সরকার স্বীয় শাসনকে টিকিয়ে রাখার জন্য যতো বেশী করে দলীয় মাস্তানদের ওপর নির্ভর করছে, প্রধানত ছাত্রলীগ ও যুবলীগ, ততোবেশী করে এই আদর্শহীন তরুণ বাহিনী লুটপাট ও অরাজকতা সৃষ্টিতে লিপ্ত হচ্ছে এবং তারই পরিণতি অন্তর্দ্বন্দ্ব ও খুনোখুনি। আইন সালিশ কেন্দ্রের হিসাব মতে, ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল (ডিসেম্বর) পর্যন্ত আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে মারা গেছে ১৭২ জন, আহত হয়েছে ১৩৬৯১ জন এবং আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এই সময় সশস্ত্র সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এক হাজার ১১১টি।

এই সকল খবর শাসকদলের জন্য যে সুখকর নয়, তা বলাই বাহুল্য। শাসক দল উভয় সংকটে পড়েছে। তবু নীতি-নির্ধারকগণ শেষ পর্যন্ত সীমিত আকারে হলেও নিজ দলের ‘কিলার’ ক্যাডারদের বিরুদ্ধে এ্যকশনে নেমেছেন। ওবায়দুল কাদেরের ভাষায় ‘এ্যকশন শুরু হয়ে গেছে’। কিন্তু এই এ্যকশন যে শাসকদলের সংকটকে আরও ঘনীভূত করবে তাই-ই নয়, গণতন্ত্রের সম্ভাবনা আরও দূরে সরে যাবে এবং শাসকদলকে আরও কর্তৃত্ববাদী ও আরও একনায়কতান্ত্রিক হয়ে উঠতে বাধ্য করবে।

বড় দুঃসময়ের মধ্যদিয়ে আমরা অতিক্রম করছি। ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধ নয়, গণপিটুনির সাজানো নাটকও নয়, বরং গণতান্ত্রিক শাসন, আত্মসমালোচনা, আত্ম-সমীক্ষা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাই দেশকে যে কোন ধরনের ভয়াবহ পরিণতি থেকে রক্ষা করতে পারবে। এমনকি শাসক দলের জন্যও তা চূড়ান্ত বিশ্লেষণে রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করতে পারে। এই উপলব্ধি কি শাসক দলের হবে? যদি হয় তবে তা তাদের এবং দেশের জন্য মঙ্গল। যদি না হয়, তাহলে বলতে হবে, কপালে আরও অনেক দুঃখ আছে।

 

(আমাদের বুধবার)

এই লেখার দায় লেখকের একান্তই নিজের। এখানে প্রতিক্ষণ ডট কমের কোন নিজস্ব বক্তব্য নেই

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G