বন্যাঃ কলম্বো ছাড়লো ২ লাখ মানুষ
প্রতিক্ষণ ডেস্কঃ
শ্রীলংকায় গত সপ্তাহের শেষে শুরু হওয়া বন্যা মারাত্নক আকার ধারণ করেছে। দেশটির রাজধানী কলম্বোর প্রায় ২ লাখ বাসিন্দা রাবারের তৈরি ডিঙ্গী নৌকা ও ভেলায় করে অতিকষ্টে শুক্রবার বন্যাকবলিত নগরীটি থেকে নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে চলে যাচ্ছে। এদিকে দেশটির অন্যান্য স্থানে নতুন করে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ায় ত্রাণ তৎপরতা বিঘ্নিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, শ্রীলংকায় গত ২৫ বছরের মধ্যে এটা সবচেয়ে বেশি পরিমাণ বৃষ্টিপাতের ঘটনা। এই বর্ষণের ফলে বড় ধরনের ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে মানুষ ৫০ ফুট মাটির নিচে চাপা পড়েছে। এখন পর্যন্ত প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে ৬০ জনের বেশি লোক মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। অনেক মানুষ এখনো নিখোঁজ হওয়ায় মৃতের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। শ্রীলংকার সরকারি কর্মকর্তারা দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের প্রতি অবিলম্বে অন্যত্র চলে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
গতরাতে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কলম্বোর বড় একটি অংশ থেকে মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এই অভিযানে নৌকা ও হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হয়।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজধানী থেকে ২ লাখ মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। ৪ লাখ মানুষ রাষ্ট্র পরিচালিত ত্রাণ শিবিরগুলোতে যেতে বাধ্য হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেলানি নদীর পাশে অবস্থিত কলম্বোর উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নদীটির পানি দুকূল উপচে জনপদগুলোকে প্লাবিত করে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র জানিয়েছে, রাজধানী থেকে ২ লাখ মানুষ অন্যত্র চলে গেছে। ৪ লাখ মানুষ রাষ্ট্র পরিচালিত ত্রাণ শিবিরগুলোতে যেতে বাধ্য হয়েছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কেলানি নদীর পাশে অবস্থিত কলম্বোর উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় উপকণ্ঠ। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নদীটির পানি দুকূল উপচে জনপদগুলোকে প্লাবিত করে।
প্রধানমন্ত্রী রানিল উইক্রেমেসিঙ্গের অফিস থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে দ্বিধা করছে। তারা তাদের জিনিসপত্র লুট হওয়ার আশঙ্কা করছে। তারা আশঙ্কা করছে যে সেনা সদস্য লুটপাট ঠেকাতে পারবে না।
লিওন ব্রেওয়েরি কর্তৃপক্ষ জানায়, কলম্বোর প্রান্তে একটি শিল্পাঞ্চলে অবস্থিত তাদের একটি কারখানা পানিতে ডুবে গেছে। বন্যার পানির তোড়ে কয়েক হাজার খালি গ্যাস সিলিন্ডার ভেসে গেছে। শ্রীলংকার গণমাধ্যমের ছবিতে এগুলোকে ভেসে যেতে দেখা যায়। আজ শুক্রবার সকাল থেকেও কলম্বোয় বৃষ্টি হচ্ছে। রাজধানীর উত্তরাঞ্চলে অপেক্ষাকৃত ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এতে কেলানির দুকূল আবারো উপচে যেতে পারে।
কলম্বোয় বন্যা সংশ্লিষ্ট ঘটনায় ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। তবে সপ্তাহান্ত থেকে দেশটিতে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৬৩ জনে দাঁড়িয়েছে। কলম্বো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরপূর্বে অবস্থিত কেগাল এলাকা প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সৈন্যরা গতরাতে মাটির ভেতর থেকে চাপা পড়া একজনের মৃতদেহ উদ্ধারের পর এখানে দুটি পৃথক ভূমিধসের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৪ জনে দাঁড়িয়েছে। ওই এলাকার এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই ভূমিধসের পর ৩৭ শিশুসহ ১৪৪জন নিখোঁজ হয়েছে বলে জানা গেছে। তিনি আরো বলেন, ৫০ ফুট মাটির নিচে চাপা পড়াদের জীবিত উদ্ধারের কোন বাস্তবসম্মত আশা নেই।
গতরাতে কেগালের আরো ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। এতে নতুন করে ভূমিধসের খবর পাওয়া গেছে। যদিও এতে কেউ মারা গেছে কিনা তা জানা যায়নি।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণেই ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় বর্ষা মৌসুমকে সামনে রেখে বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের কারণেই ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে।
প্রতিক্ষণ/এডি/সাদিয়া