বন্যা পরিস্থিতির অবনতি কক্সবাজারে
নিজস্ব প্রতিবেদক
কক্সবাজারে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারী বর্ষণের ফলে সৃষ্ট পাহাড়ী ঢলে বন্যায় ৫ উপজেলায় প্রায় ৩ লক্ষাধিক মানুষ এখনও পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
বন্যায় প্লাবিত এলাকাগুলো হলো- কক্সবাজার সদরের ঝিলংজা ইউনিয়নের চান্দেরপাড়া, খরুলিয়া, দরগাহপাড়া, পোকখালীর মধ্যম পোকখালী, নাইক্ষংদিয়া, চৌফলদণ্ডী, নতুন মহাল, ঈদগাঁওর মাইজপাড়া, ভাদিতলা, ভোমরিয়াঘোনা, কানিয়ারছড়া, ঈদগাঁও বাজার এলাকা, কালিরছড়া, রামুর উপজেলার ধলিরছড়া, রশিদনগর, জোয়ারিয়ানালা, উত্তর মিঠাছড়ি, পূর্ব ও পশ্চিম মেরংলোয়া, চাকমারকুল, কলঘর, লিংকরোড়, চকরিয়ার উপজেলার ভাঙ্গারমুখ, ফাসিয়াখালী, মালুমঘাট, ডুলহাজারা, খুটাখালী, ফুলছড়ি ও ইসলামপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা।
এসব উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো ঢলের পানিতে প্লাবিত হওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকার মানুষ বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্র ও উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। বন্ধ হয়ে গেছে সকল ধরণের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক যোগাযোগ তৃতীয় দিনের মতো বন্ধ রয়েছে।
রামু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম জানান, পাহাড়ী ঢলে ও প্রবল স্রোতে রামু উপজেলার রাজারকূল গ্রামের ছিদ্দিক আহমদের ছেলে আব্দুস সালাম (১৮) ও কচ্ছপিয়া গ্রামের ১৩ দিনের নবজাতক শিশু পানিতে ভেসে গেছে।
চকরিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাফর আলম জানান, পৌরসভার ভরামুহুরী এলাকায় এক শিশু ও পূর্বভেওলায় আব্দুল পণ্ডিতের ছেলে আনোয়ার হোসেন (৫০) ও দেয়াল ধ্বসে খুটাখালীতে ইউসুফ আলীর প্রতিবন্ধী মেয়ে রোকেয়া বেগম (২৮) এর মৃত্যু হয়।
কক্সবাজার সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জিএম রহিমুল্লাহ জানান, বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কক্সবাজার সদর উপজেলার নিন্মাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজাপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, পাহাড়ী ঢল ও নাফ নদীর জোয়ারের পানিতে প্রায় ১২শ একর চিংড়ি ঘের ভেসে গেছে।
উখিয়ায় সড়কে গাছ পড়ে ও কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের বেশ কয়েকটি এলাকার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে শনিবার মধ্যরাত থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। উপজেলার রেজু খাল দিয়ে বিপদসীমার উপর পানি প্রবাহিত হওয়ায় দু’পাড়ে বসবাসরত প্রায় ২ শতাধিক পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন। ১৮টি গ্রামের প্রায় ২৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান জানান, রামু, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী ও উখিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ৩ লক্ষাধিক মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। দুর্গত এলাকায় শীঘ্রই সরকারি ত্রাণ পৌঁছানো হবে।
প্রতিক্ষণ/ডেস্ক/সজল